বিনিয়োগ সম্মেলন
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৮ এপ্রিল ২০২৫ ২১:৪৯ পিএম
রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে মঙ্গলবার ব্রিফিং করেন বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। সংগৃহীত
পাঁচটি বিকাশমান অর্থনীতির জোট ব্রিকসের উদ্যোগে গঠিত নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এনডিবি) আগামী এক বছরে বাংলাদেশকে ১ বিলিয়ন বা ১০০ কোটি ডলার তহবিল সহায়তা দেবে। সংস্থাটি ইতোমধ্যে বাংলাদেশে ৩০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে। তা ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এর মাধ্যমে দেশে বিশাল বিনিয়োগের দুয়ার খুলতে যাচ্ছে।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) ঢাকায় অনুষ্ঠানরত বিনিয়োগ সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে এসব তথ্য জানানো হয়। রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ব্রিফিং করেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন।
তিনি মঙ্গলবার ব্রিকসের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করেছেন উল্লেখ করে জানান, তারা বাংলাদেশ সম্পর্কে অনেক পজিটিভ ধারণা প্রকাশ করেছে। সম্প্রতি ওয়াসার সঙ্গে তারা একটি প্রকল্প শুরু করেছে। তারা শুধু সরকারি খাত নয়, বেসরকারি খাতেও অর্থায়ন করতে চায়।
তিনি বলেন, ‘ব্রিকসের ১০০ কোটি ডলারের মধ্যে এরই মধ্যে এনডিবি বাংলাদেশে প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। আমরাও তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেছি যে, হাসপাতাল, হাউজিংসহ সামাজিক অবকাঠামোতেও তাদের তহবিল সরবারহ করার সুযোগ রয়েছে।’
চৌধুরী আশিক মাহমুদ বলেন, ‘আমেরিকা থেকে একটি বড় ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল এসেছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজন আজ জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টা তার বাসভবনে আমেরিকান বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। বৈঠকে বিনিয়োগের সুযোগ-সুবিধা, কীভাবে তাদের আরও সহায়তা করা যায় এবং কীভাবে বাংলাদেশে আরও বেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করা যেতে পারে, এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।
বিনিয়োগকারীরা কী কী বিষয়ে জানতে চান, এমন প্রশ্নের জবাবে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, বিনিয়োগকারীরা দুই ক্যাটাগরিতে প্রশ্ন করছেন। বাংলাদেশে ব্যবসা করলে কী ধরনের সুবিধা দেওয়া হবে। দ্বিতীয় যে প্রশ্নটি করছেন সেটি হচ্ছে, ইতোমধ্যে যারা ব্যবসায়ী আছেন তারা কী ধরনের সমস্যা ফেস করছেন, সেগুলো উত্তরণে তাদের কী করতে হবে। এ ছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে লাল ফিতার দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, এসব বিষয়ে জানতে চাচ্ছেন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। এখনই বিনিয়োগ আনা এই সামিটের লক্ষ্য নয়। এবারের সামিটের মূল লক্ষ্য নেটওয়ার্কিং করা। এখানে আমরা নেটওয়ার্কিংকে প্রাধান্য দিচ্ছি বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, ‘বিনিয়োগ আকর্ষণে খুব শিগগিরই নতুন জ্বালানি নীতি প্রকাশ করবে সরকার।’
আশিক মাহমুদ বলেন, ‘মার্কিন শুল্কের সমস্যা শুধু বাংলাদেশের নয়, এটা বৈশ্বিক সমস্যা। এটা নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে চিঠি দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আমাদের এই কৌশলকে সঠিক বলেছেন বিনিয়োগ সম্মেলনে আসা উদ্যোক্তারা।’
যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (নাসা) সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘৫৪তম দেশ হিসেবে নাসার সঙ্গে মহাকাশ গবেষণায় যুক্ত হলো বাংলাদেশ। আর্টিমিস জেনারেশন হচ্ছে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জেনারেশন, যারা মহাকাশ অভিযাত্রী হবে। তারা শুধু পৃথিবীতেই থাকবে না, ভবিষ্যতে বিভিন্ন গ্রহে ভ্রমণ করবে।’
তিনি বলেন, ‘এ আর্টিমিস অ্যাকর্ডে সাইন করার ফলে বাংলাদেশের কী লাভ হয়েছে। সেটা দেখতে হলে আরও ২০-২৫ বছর সময় লাগবে। বর্তমান ইয়ুথ জেনারেশন হচ্ছে গ্লোবাল এবং তাদের এক্সপেক্টেশনও গ্লোবাল। আমরা যদি চাই ভবিষ্যতে বাংলাদেশ থেকে কোনো মহাকাশ অভিযাত্রী তৈরি হবে, তাহলে আজকের এ পদক্ষেপ তার সূচনা।’
আশিক চৌধুরী বলেছেন, ‘সহজে ব্যবসা করার বা ইজ অব ডুয়িং বিজনেস সূচক অনেক আগে করা হয়েছে। এখন আর এটা ফলো করা উচিত নয়। পৃথিবীর এমন কোনো মার্কেট নেই, যেখানে সমস্যা নেই। প্রত্যেক দেশেরই কিছু সমস্যা রয়েছে। যেসব সমস্যা রয়েছে, আমরা সেগুলো সমাধানেরও চেষ্টা করছি। এই সমস্যাগুলো আমরা আগামী এক বা দুই বছরে সমাধান করার চেষ্টা করব।’