প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১১ মার্চ ২০২৫ ১৬:২৬ পিএম
আপডেট : ১১ মার্চ ২০২৫ ১৬:২৬ পিএম
দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরপরই রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়ের গতি বাড়ে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ডিসেম্বরে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ (প্রায় ২৬৪ কোটি ডলার) রেমিট্যান্স আসে। আর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় এসেছে ভাষার মাস ফেব্রুয়ারিতে (প্রায় ২৫৩ কোটি ডলার)। মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদকে কেন্দ্র করে বাড়ছে বিভিন্ন কেনাকাটা। তাই পরিবার-পরিজনের বাড়তি খরচের কথা মাথায় রেখে বেশি বেশি টাকা পাঠাচ্ছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সবশেষ তথ্য বলছে, চলতি মাস মার্চে প্রথম ৮ দিনে ৮১ কোটি ৪২ লাখ ৯০ হাজার ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে) যার পরিমাণ ৯ হাজার ৯৩৪ কোটি টাকা। আর প্রতিদিন আসছে ১০ কোটি ডলারের (১২৪১ কোটি টাকা) বেশি। রেমিট্যান্স আসার এ ধারা অব্যাহত থাকলে মাসটির পুরো সময়ে তিন বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি রেমিট্যান্স আসতে পারে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, গত ৫ আগস্টের পর নতুন সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দেশ থেকে অর্থ পাচার কমেছে। একই সঙ্গে কমেছে হুন্ডি কারবারির দৌরাত্ম্য। অন্যদিকে খোলাবাজারের মতোই ব্যাংকে রেমিট্যান্সের ডলারের দাম পাওয়া যাচ্ছে। এসব কারণে প্রবাসীরা বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তাছাড়া আসন্ন ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে আরও বেশি বেড়েছে রেমিট্যান্স আসার গতিপ্রবাহ।
তথ্য বলছে, আলোচিত সময়ে (মার্চে প্রথম ৮ দিন) রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ২৩ কোটি ১৩ লাখ ডলারের বেশি। বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের মধ্যে এক ব্যাংকের (কৃষি ব্যাংক) মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৬ কোটি ৮৪ লাখ ৫০ হাজার ডলার। আর বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৫১ কোটি ২৯ লাখ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ১৫ লাখ ৪০ হাজার ডলার।
এ সময়ে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি এমন ব্যাংকের সংখ্যা ৯টি। এসব ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল), বিশেষায়িত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক। বেসরকারি ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে সিটিজেনস ব্যাংক, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক। এ ছাড়া বিদেশি ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া এবং উরি ব্যাংক।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ৮ মাসে রেমিট্যান্স এসেছে এক হাজার ৮৪৯ কোটি ডলার। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রথম ৮ মাসে আসে এক হাজার ৪৯৪ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স। সে হিসাবে গত অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসের চেয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে রেমিট্যান্স বেড়েছে ৩৫৫ কোটি ডলার।
এর আগে গত ডিসেম্বরে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স আসে দেশে। আর এ নিয়ে অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস আগস্ট থেকে টানা ৭ মাস দুই বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করবে। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে এসেছে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ, অক্টোবরে এসেছে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার, নভেম্বর মাসে এসেছে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে এসেছে ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি ডলার এবং ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।