প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২১:১১ পিএম
আপডেট : ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২১:২৯ পিএম
আবুধাবিতে মঙ্গলবার সম্মেলন শেষে আবুধাবি চেম্বারের দ্বিতীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহমিজ আলী আল দাহিরি সঙ্গে ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ। সংগৃহীত
আবুধাবি চেম্বারের দ্বিতীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহমিজ আলী আল দাহিরি বলেছেন, দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাত নিজেদের বিনিয়োগ সম্প্রসারণের পাশাপাশি বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণে সাফল্য দেখিয়েছে এবং বাংলাদেশের বিপুল তরুণ জনগোষ্ঠীকে দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করা গেলে ইউএইসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের বিনিয়োগপ্রাপ্তি বাংলাদেশের জন্য আরও সহজতর হবে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে ইউএইর পক্ষ হতে সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) আবুধাবি স্কুল অব ম্যানেজমেন্টের সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত ‘আবুধাবি ও বাংলাদেশের মধ্যকার অর্থনৈতিক সম্পর্ক সুদৃঢ়করণ’ শীর্ষক বাণিজ্য আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকীন আহমেদের নেতৃত্বে ২৯ সদস্যবিশিষ্ট ডিসিসিআইর প্রতিনিধিদলের সদস্যবৃন্দ উক্ত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
সম্মেলনে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকীন আহমেদ জানান, বাংলাদেশের এসএমই খাতের অন্যতম বৃহত্তম বাণিজ্য সংগঠন হিসেবে ডিসিসিআই গত ৬ দশক ধরে স্থানীয় ও বৈদেশিক বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। ২০২৪ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ১ হাজার ৩৫২.৯ মিলিয়ন ও ৪০২.৬৩ মিলিয়ন ডলার।
নবায়নযোগ্য জ্বালানি, অবকাঠামো ও লজিস্টিক, তথ্য-প্রযুক্তি, পর্যটন ও স্বাস্থ্যসেবা প্রভৃতি খাতে নতুন বিনিয়োগের জন্য আহ্বান জানান তিনি। বাংলাদেশ হতে তথ্য-প্রযুক্তি, টেক্সটাইল ও প্রকৌশল শিল্পে দক্ষ জনশক্তি নিয়োগের পাশাপাশি কৃষিজাত পণ্য, তৈরি পোশাক, পাটজাত পণ্য, ওষুধ প্রভৃতি পণ্য আমদানির ওপর জোরারোপ করেন ডিসিসিআই সভাপতি। তিনি বলেন, দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে ‘ডিসিসিআই বিজনেস ইনস্টিটিউট (ডিবিআই)’ এবং আবুধাবি স্কুল অব বিজনেস একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।
আবুধাবির বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনার ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আবুধাবি ইনভেস্টমেন্ট অফিসের হেড অব ইনভেস্টর এনগেজমেন্ট ওমর আল হোসাইনী। অপরদিকে ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বাংলাদেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনার ওপর তথ্যচিত্র উপস্থাপন করেন।
ওমর আল হোসাইনী বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত পণ্য উৎপাদান ও রপ্তানি এবং জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি জানান, ইউএই সরকার বিদেশি বিনিয়োগকারীদের তাদের বিনিয়োগে শতভাগ মালিকানা ও শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রদান করছে এবং এখানকার বিনিয়োগের ইকো-সিস্টেমের সুযোগ কাজে লাগিয়ে, বাংলাদেশের বিনিয়োগকারীরা তার দেশে বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে পারে।
রিজওয়ান রাহমান বলেন, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের প্রচুর সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও তা এখনও কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে পৌঁছায়নি, ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সম্প্রসারণে দুদেশের উদ্যোক্তাদের আরও সম্পৃক্তকরণ জরুরি। সেই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশের অবকাঠামো, লজিস্টিক, স্থল ও সমুদ্রবন্দরসমূহের সেবা উন্নয়ন, টেকসই জ্বালানি প্রভৃতি খাতে বিনিয়োগের জন্য আবুধাবির উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান।
বাণিজ্য আলোচনা সভা শেষে আবুধাবি চেম্বারের সদস্যভুক্ত প্রায় ৩৫টি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দের সঙ্গে ঢাকা চেম্বারের প্রতিনিধিদলের সদস্যদের বিটুবি নেটওয়ার্কিং সেশন অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে দুদেশের উদ্যোক্তাদের নিজেদের মধ্যকার বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভবনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনায় যোগ দেন।
ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি রাজিব এইচ চৌধুরী, সহ-সভাপতি মো. সালিম সোলায়মানসহ পরিচালনা পর্ষদের সদস্যবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।