প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২০:৩১ পিএম
আপডেট : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২১:২৯ পিএম
পূর্বাচলে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ অ্যাক্সিবিশন সেন্টারেতিন দিনব্যাপী পোল্ট্রি মেলা। প্রবা ফটো
পোল্ট্রিশিল্পকে ‘ইন্ডাস্ট্রি’ না ভেবে ‘সেবা’ ভাবতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, ইন্ডাস্ট্রি ভাবলে আপনারা বড় খপ্পরে পড়বেন।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার অদূরে পূর্বাচলে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ অ্যাক্সিবিশন সেন্টারে তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক পোলট্রি মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ওয়ার্ল্ড’স পোল্ট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন-বাংলাদেশ শাখা ও ‘বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল’ মেলাটির আয়োজন করেছে। এটি দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় পোলট্রি মেলা (১৩তম আন্তর্জাতিক পোল্ট্রি শো) বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন। মেলাটি প্রতিদিন সকাল ১০টা- সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। শনিবার মেলাটি শেষ হবে।
ওয়ার্ল্ড’স পোল্ট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন-বাংলাদেশ শাখার সভাপতি মসিউর রহমানের সভাপতিত্বে মেলায় বিশেষ অতিথি ছিলেন- মন্ত্রণালয়টির সচিব মো. তফাজ্জল হোসেন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ান, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. শাকিলা ফারুক প্রমুখ।
ফরিদা আখতার বলেন, পোল্ট্রি ফিডের ক্ষেত্রে অনেক কাজ হচ্ছে। এটি আরও বিস্তৃত করতে হবে, কেননা ফিডেই ব্যয় হয়ে যাচ্ছে ৭০ শতাংশ। এ খাদ্য উৎপাদন খরচ কমাতে হবে। তাহলেই উৎপাদন খরচ কমবে। ক্ষুদ্র খামারিদের মাধ্যমে ডিম-মাংসের উৎপাদন বাড়লে সেটি দেশের জন্য আরও বেশি উপকার হবে। সরকারের সেদিকেই মনোযোগ।
পোল্ট্রি এগিয়ে গেলে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে উল্লেখ করে ফরিদা আখতার বলেন, গার্মেন্টস শ্রমিকরা দিনে কম পক্ষে একটি করে ডিম খায়। শ্রমিকরা ব্রয়লার মুরগির মাংস কম দামে খেতে পারছে, সাধারণ মানুষ খেতে পারছে। এতে পুষ্টির চাহিদা পূরণ হচ্ছে। এক্ষেত্রে পোল্ট্রি সেক্টর বড় ধরনের কাজ করছে, তাদের বড় অবদান রয়েছে।
পোল্ট্রিখাতের পণ্য আমদানিতে ট্যাক্স কমানোর ব্যাপারে তিনি বলেন, আমদানি করা পণ্যে অন্যায়ভাবে ট্যাক্স বেশি নেওয়া হচ্ছে। এটি কীভাবে কমানো যায় সেই চিন্তা করতে হবে।
পোল্ট্রি শুধু ইন্ডাস্ট্রি নয় একটি বড় ধরনের সেবা উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, পোল্ট্রিশিল্পকে শুধু ইন্ডাস্ট্রি ভাবলে হবে না, বরং এটি বড় ধরনের সেবা। ইন্ডাস্ট্রি চিন্তা করলে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের বিল বেশি দিতে হবে।
জুলাই অভুত্থানের লোকেরা পোল্ট্রি ও ডিমটাই বেশি খেয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা ব্রয়লার মুরগি ও ডিমটাই বেশি খেয়েছে। কেননা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের হাতে এত টাকা থাকে না। তারা অল্প পয়সায় নিজেদের চাহিদাটা পোল্ট্রি দিয়েই পূরণ করতে পারছে। তারা আন্দোলন করে নতুন যুগের সূচনা করেছে। তাই তরুণদের এখাতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
তিনি বলেন, পোল্ট্রিখাতে নিরাপদ পানি ব্যবহার করতে হবে। নিরাপদ খাদ্য দিতে হবে। পরিবেশকে সুন্দর রাখতে হবে। অনেকেই অর্গানিক পোল্ট্রি উৎপাদন করছেন, এটি আধুনিক হওয়ার লক্ষণ।
নারী খামারি বাড়াতে হবে উল্লেখ করে ফরিদা আখতার বলেন, মুরগি পালন আগাগোড়া প্রাইভেট সেক্টরে ছিল। কৃষকের বাড়িতেই মুরগি রাখা হতো। কৃষকের চেয়ে বড় প্রাইভেট সেক্টর আর কী হতে পারে। কৃষকের বাড়িতে মহিলারই মুরগি লালন পালন করত। এ সেক্টর আরও বড় করতে হলে মহিলা খামারিদের সংখ্যা বাড়াতে হবে।
এর আগে তিনি মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন।
‘সাসটেনেবল পোলট্রি ফর এমাজিং বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্যে আয়োজিত মেলাটিতে ১৮টি দেশের দুই শতাধিক কোম্পানি প্রযুক্তি ও সেবা নিয়ে মেলায় অংশ নিয়েছে। এতে রয়েছে ৮২৫টি স্টল। ফিডমিল, হ্যাচারি, ব্রিডারফার্ম, কমার্শিয়াল ফার্ম, প্রসেসিং, রিসাইক্লিংসহ পোলট্রি শিল্প সংশ্লিষ্ট বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও পণ্যের দেখা মিলছে এ মেলায়।