প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১০:০৪ এএম
আপডেট : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১০:৫১ এএম
ছবি : সংগৃহীত
উন্নত বিশ্বের জলবায়ুদূষণের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা অ্যাকশনএইড ইন্টারন্যাশনালের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জলবায়ু ক্ষতিপূরণ হিসেবে বাংলাদেশের পাওনা প্রায় ৫ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন বা ৫ লাখ ৮০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার।
প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৪ সালে বিশ্বের ৫৪টি নিম্ন আয়ের দেশ বিদেশি ঋণের চাপে পড়েছে এবং উন্নয়নকার্যক্রম ব্যাহত করেও ধনী দেশগুলোর কাছে ১৩৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ পরিশোধ করেছে। বাংলাদেশসহ নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোর ন্যায্য পাওনার পরিমাণ ১০৭ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। অথচ এসব দেশের বৈদেশিক ঋণের বোঝা মাত্র ১ দশমিক ৪৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ধনী দেশগুলোর দেনার তুলনায় ৭০ গুণ কম।
২০২৩ সালে বাংলাদেশ একাই বিদেশি ঋণ পরিশোধ করেছে ৪৭৭ কোটি মার্কিন ডলার। জাতীয় রাজস্বের ১৬ দশমিক ৯ শতাংশ বিদেশি ঋণ পরিশোধে ব্যয় হয়েছে, যেখানে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ছিল মাত্র ৩ দশমিক ০৮ শতাংশ ও শিক্ষা খাতে ১১ দশমিক ৭৩ শতাংশ।
অ্যাকশনএইডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ধনী দেশগুলোর জলবায়ু ক্ষতিপূরণ পরিশোধে ব্যর্থতার ফলে বাংলাদেশ স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং জলবায়ু কর্মসূচিতে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সংস্থাটির বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির বলেন, নিম্ন ও নিম্নমধ্যম আয়ের দেশগুলোর ঋণের ফাঁদের ভয়াবহতা এ প্রতিবেদনে প্রতিফলিত হয়েছে। ঔপনিবেশিক ঋণকাঠামো থেকে মুক্তির জন্য আমাদের জোরালো দাবি তুলতে হবে।
প্রতিবেদনে বিশ্বনেতাদের প্রতি বেশ কয়েকটি সুপারিশ করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে—
ঋণ পরিশোধের জন্য নতুন জাতিসংঘ ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন প্রণয়ন।
জলবায়ু ক্ষতিপূরণের অর্থ পরিশোধে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ।
বৈদেশিক ঋণ মওকুফের জন্য বৈশ্বিক সংহতি গড়ে তোলা।
চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ইথিওপিয়ার আদ্দিস আবাবায় অনুষ্ঠিত আফ্রিকান ইউনিয়নের সম্মেলন কেন্দ্র করে অ্যাকশনএইড ইন্টারন্যাশনাল ‘হু ওজ হু’ নামে বিশেষ এ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে।
ধনী দেশগুলোর ঋণের হিসাব দুটি পদ্ধতিতে করা হয়েছে
১. ১৯৯২ সাল থেকে নিঃসরণ হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশ ৫ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার পাওনা।
২. ১৯৬০ সাল থেকে হিসাব করলে পাওনার পরিমাণ দাঁড়ায় ৭ দশমিক ৯ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার।
ধনী দেশগুলো প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এ অর্থ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হওয়ায় বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।