× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

নগদের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের প্রমাণ পেয়েছে দুদক

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২০:৫৯ পিএম

নগদের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের প্রমাণ পেয়েছে দুদক

মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান নগদের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি)  রাজধানীর বনানীতে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে ১ হাজার ৭০০ কোটি টাকা পাচার এবং ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাতের প্রমান মিলেছে। দুদকের সহকারী পরিচালক তানজির আহমেদের নেতৃত্বে একটি টিম অভিযান পরিচালনা করছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশে মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর (এমএফএস) প্রায় পাঁচ হাজার অবৈধ এজেন্ট রয়েছে। এসব এজেন্টের মাধ্যমে গত এক বছরে প্রায় ৭৫ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। এজেন্টরা হুন্ডির মাধ্যমে ওই টাকা পাচার করেছে। এসব বিষয় সুনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করতেই অভিযান চালয় দুদক। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিংয়ের প্লাটফর্মের লেনদনের তথ্য-উপাত্তও সংগ্রহ করা হবে বলে দুদকের একটি সূত্রে জানা গেছে।

এদিকে বুধবার নগদের প্রশাসক মুহম্মদ বদিউজ্জামান দিদারের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। বনানী ১২ নম্বর সড়কে তাঁর ওপর হামলা হয়। এতে তিনি আহত হন। হামলাকারীরা হাতুড়ি দিয়ে তাঁর গাড়িও ভাঙচুর করেছেন। এ ঘটনায় তাঁর গাড়িচালক গুরুতর আহত হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চত করে বদিউজ্জামান দিদার বলেন, ‘আমি গাড়ি নিয়ে বের হওয়ার সময় তিন থেকে চার জন লোক আমার গাড়িতে হাতুড়ি দিয়ে হামলা করেছে। তারা কারা, সেটা জানি না। হামলায় আমি ও আমার গাড়ি চালক আহত হয়েছি। জিডি করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বনানী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রাসেল বলেন, ‘ঘটনার কয়েক মিনিটের মধ্যে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছে। সিসিটিভি পরীক্ষা করে হামলাকারীদের শনাক্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। নগদের প্রশাসকের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। তিনি জিডি করবেন বলে জানিয়েছেন।’ রাত ৮টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোন মামলা কিংবা অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে জানিয়েছেন ওসি।

অভিযানের নেতৃত্বে থাকা দুদকের সহকারী পরিচালক তানজির আহমেদ বলেন, ‘আমরা নথিপত্র সংগ্রহ করেছি। দুদকে বিস্তারিত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার আগে এসব নথিপত্র খতিয়ে দেখা হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘নগদের ৭০ শতাংশের বেশি মালিকানা বিদেশি প্রতিষ্ঠানের। তাই, বিদেশে অর্থপাচারের বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখব। এ ছাড়াও, নগদের পেছনে আওয়ামী লীগের কে বা কারা রয়েছেন এবং ডাক বিভাগের সঙ্গে অন্যায্য চুক্তিতে কে কে প্রভাব রেখেছিল সেটিও সেটিও যাচাই করা হবে।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, ‘নগদ প্রশাসকের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। তিনি তেমন আঘাতপ্রাপ্ত হননি। তবে তার ড্রাইভার একটু ইনজুরড হয়েছেন। আজকেই একটা নতুন গাড়ি কেনা হয়েছিল। সেই গাড়িতে হাতুরি-রড দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। আমরা নগদ প্রশাসকের পাশে আছি এবং তাকে মামলা করার পরামর্শ দিয়েছি। তিনি মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।’

নগদের প্রশাসক মোহাম্মদ বদিউজ্জামান দিদার গণমাধ্যমকে বলেন, প্রাথমিক অনুসন্ধানে ১ হাজার ৭০০ কোটি টাকা পাচার এবং ৬০০ কোটি টাকার ই-মানি সংক্রান্ত অনিয়ম পাওয়া গেছে।

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংক নগদ পরিচালনায় যে প্রশাসক ও ব্যবস্থাপনা কমিটি বসিয়েছে, তাদের পরিদর্শনে নগদ লিমিটেডে বড় ধরনের জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। ভুয়া পরিবেশক ও এজেন্ট দেখিয়ে প্রতিষ্ঠানটিতে আর্থিক জালিয়াতি এবং অতিরিক্ত ইলেকট্রনিক অর্থ বা ই-মানি তৈরি করা হয়েছে। এসব কারণে হিসাব মিলছে না ২ হাজার ৩৫৬ কোটি টাকার। অনুমোদনহীন পরিবেশক তৈরির দায়ে ছয় কর্মকর্তার একটি তালিকা চূড়ান্ত করে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ডাক বিভাগের কাছে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া নগদ পরিচালনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে ডাক অধিদপ্তরকে চিঠি দিয়েছেন নগদে নিযুক্ত প্রশাসক মুহম্মদ বদিউজ্জামান দিদার। নগদের শীর্ষ পর্যায়ের পাঁচ কর্মকর্তাকে এর আগেই বরখাস্ত করা হয়েছিল।

নগদে যখন এসব অনিয়ম সংঘটিত হয়, তখন এর পরিচালনায় আওয়ামী লীগের একাধিক সংসদ সদস্য ও প্রভাবশালী ব্যক্তি যুক্ত ছিলেন। সবার চোখের সামনে এসব অনিয়ম হলেও চুপ ছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও ডাক অধিদপ্তর। কর্মকর্তারা বলছেন, নগদে ঘটা অনিয়ম টাকার হিসাবে দেশের সবচেয়ে বড় ‘ডিজিটাল জালিয়াতি’। তাই সিদ্ধান্ত হয়েছে, নগদে ফরেনসিক নিরীক্ষা হবে। ফরেনসিক নিরীক্ষা হলো, কোনো প্রতিষ্ঠানের আর্থিক লেনদেনের বিস্তারিত খতিয়ে দেখা, যার মাধ্যমে জালিয়াতি, অনিয়ম ও এর সুবিধাভোগীদের খুঁজে বের করা সম্ভব।

তবে জালিয়াতির কারণে যে আর্থিক দায় তৈরি হয়েছে, তা ডাক অধিদপ্তরের ঘাড়ে পড়ছে। কারণ, মোবাইলে আর্থিক সেবা দিতে যে সাময়িক অনুমতিপত্র দেওয়া হয়েছে, সেটি তাদের। ডাক অধিদপ্তরের পক্ষে সেবাটি পরিচালনা করে নগদ লিমিটেড, যা একসময় ছিল থার্ড ওয়েভ টেকনোলজি লিমিটেড।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা