× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

চট্টগ্রাম

ক্রয়াদেশ নেই, উৎপাদন বন্ধ একের পর এক কারখানায়

হুমায়ুন মাসুদ, চট্টগ্রাম

প্রকাশ : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১০:০৪ এএম

আপডেট : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১০:১৫ এএম

ক্রয়াদেশ নেই, উৎপাদন বন্ধ একের পর এক কারখানায়

উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি, পোশাক রপ্তানি করে অর্থ না পাওয়া এবং ক্রয়াদেশ কমে যাওয়াসহ নানা কারণে লোকসানে পড়ে চট্টগ্রামে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে পোশাক তৈরি কারখানা। এসব কারণে ২০২৪ সালে চট্টগ্রামে অন্তত ১৪ কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ। একই কারণে সম্প্রতি চট্টগ্রামে অন্তত ছয়টি কারখানায় উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।

তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সরকার পরিবর্তনকে কেন্দ্র করে বর্তমানে বিশ্ব অর্থনীতি এক ধরনের ট্রানজিশন পিরিয়ড পার করছে। যে কারণে যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের বায়াররা তৈরি পোশাকের অর্ডার কিছুটা কমিয়ে দিয়েছেন। এর প্রভাব পড়ছে দেশের তৈরি পোশাক শিল্পে। যে কারণে এখন দেশে তৈরি পোশাকের অর্ডার কিছুটা কমেছে।

বিজিএমইএ চট্টগ্রাম কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, নানা কারণে গত এক বছরে চট্টগ্রামে নতুন করে ১৪ পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। চট্টগ্রামে বিজিএমইএ নিবন্ধিত ৬০৯ কারখানার মধ্যে বর্তমানে ৩৫০ কারখানা চালু আছে।

এ সম্পর্কে জানতে চাইলে বিজিএমএর সাবেক সহসভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘তৈরি পোশাক শিল্পের অবস্থা খুব একটা ভালো না। আগের তুলনায় এখন অর্ডার কিছুটা কমেছে। তবে একেবারে সুনির্দিষ্ট করে বলতে হলে আরও কিছু সময় লাগবে। এখন আমাদের কাছে যে তথ্য আছে, কিছু কিছু কারখানায় অর্ডার অনেক কমে গেছে। অর্ডার কমে যাওয়ায় গত কয়েক মাসে চট্টগ্রামে অন্তত ছয়টি কারখানায় উৎপাদন বন্ধ করা হয়েছে। এর মধ্যে ওয়েল গ্রুপের তিনটি ও এমএন গার্মেন্টস লিমিটেডের তিনটি কারখানায় উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। অর্ডার না থাকাসহ নানা কারণে গত এক বছরে চট্টগ্রামে অন্তত ১৪টি কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে।’

বিজিএমইএ সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৫ সালে চট্টগ্রামে নিবন্ধিত গার্মেন্টস শিল্পপ্রতিষ্ঠান ছিল ১৩৩টি। এর মধ্যে সচল ছিল ১২৬টি। এরপর ১৯৯৫ সালে এখানে তৈরি পোশাক কারখানা দ্বিগুণ আকার ধারণ করে। ওই সময় চট্টগ্রামে নিবন্ধিত পোশাক তৈরি শিল্পপ্রতিষ্ঠান ছিল ৩৫৯টি। এর মধ্যে সচল ছিল ৩৪৫টি। এর পর ধারাবাহিকভাবে চট্টগ্রামে পোশাক কারখানার সংখ্যা বেড়ে ২০০৫ সালে নিবন্ধিত গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠান ছিল ৬৯৯টি। ওই সময় ৬১০টি কারখানা চালু ছিল। ২০১৫ সালে চট্টগ্রামে নিবন্ধিত পোশাক কারখানা ছিল ৭৫৬টি। এর মধ্যে চালু ছিল ৪৫৫টি কারখানা। অর্ডার না পাওয়াসহ নানা কারণে পরবর্তীতে উৎপাদন বন্ধ ছিল ৩০১ কারখানায়। এর পর ধারাবাহিকভাবে চট্টগ্রামে কমতে থাকে নিবন্ধিত কারখানার সংখ্যা। ২০২০ সালে চট্টগ্রামে নিবন্ধিত পোশাক শিল্প কারখানার সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ৬৯৩টিতে। এর মধ্যে চালু ছিল মাত্র ২৯৩টি। এর পর করোনা মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে গত কয়েক বছরে চট্টগ্রামে তৈরি পোশাক কারখানাগুলো কিছুটা ঘুরে দাঁড়ালেও অর্ডার কমে যাওয়া, পোশাক রপ্তানি করে অর্থ না পাওয়াসহ নানা কারণে আবারও বাড়তে শুরু করেছে বন্ধ কারখানার সংখ্যা। সর্বশেষ ২০২৪ সালে চট্টগ্রামে বন্ধ হয়ে যায় ১৪টি কারখানা। বর্তমানে চট্টগ্রামে ৬০৯টি নিবন্ধিত কারখানার মধ্যে ২৫৯টি বন্ধ রয়েছে। উৎপাদন চালু রয়েছে মাত্র ৩৫০টিতে। 

যেসব কারখানায় বর্তমানে উৎপাদন চালু রয়েছে ওইসবের মালিকরাও ভালো নেই বলে পোশাক রপ্তানিকারকরা জানান। তারা বলছেন, শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধিসহ নানা কারণে এখন কারখানায় উৎপাদন খরচ বেড়েছে। কিন্তু সেই অনুযায়ী অর্ডার পাওয়া যাচ্ছে না। যে কারণে খরচ পোষাতে না পেরে অনেক কারখানা মালিক উৎপাদন বন্ধ রেখেছেন। এসব কারণে গত কয়েক মাসে চট্টগ্রামে ছয়টি কারখানায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে।

এ সম্পর্কে জানতে চাইলে ইন্ডিপেনডেন্ট অ্যাপারেলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসএম আবু তৈয়ব বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পলিসির ওপর গোটা বিশ্বের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড নির্ভর করে। ট্রাম্প প্রশাসন সম্প্রতি দায়িত্ব গ্রহণ করেছে, এই প্রশাসন কী ধরনের পলিসি নেয়, সেটি দেখা হচ্ছে। কারণ ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছিল কোনো ডিউটি ফ্রি দেশ রাখবে না, চীনের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করবে। এ কারণে বায়াররা অর্ডার কমিয়ে দিয়েছেন। ফলে দেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলো কঠিন সময় পার করছে। আমাদের কাছে তথ্য আছেÑ অর্ডার না থাকায় ইতোমধ্যে কয়েকটি কারখানায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। অথচ এখন তৈরি পোশাক রপ্তানির মৌসুম। বছরের অন্য সময়ের তুলনায় এ সময় বেশি অর্ডার পাওয়ার কথা ছিল।

তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বায়ারদের কাছ থেকে অর্ডার কমছে এমন নয়। ইউরোপের অর্ডারগুলো যুক্তরাষ্ট্রের ইকোনমির ওপর নির্ভর করে। কারণ ইউরোপের বায়াররাও যুক্তরাষ্ট্রের গতিপ্রকৃতির ওপর নির্ভর করে সিদ্ধান্ত নেয়। কারণ ডলারের ওপর নির্ভর করে সবকিছুর দামের ওঠানামা। অন্যান্য মুদ্রার তুলনায় ডলার এখন শক্তিশালী। তাই ধারণা করছি, অর্ডার কমে যাওয়ার এই সংকট খুব বেশি দিন থাকবে না। দুয়েক মাসের মধ্যে এটি ঠিক হয়ে যাবে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা