× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ধর্ম ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

অর্থনৈতিক শুমারি

এক দশকের কর্মসংস্থান কমেছে ৭০ লাখের বেশি

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৯ জানুয়ারি ২০২৫ ১৬:৪৮ পিএম

আপডেট : ২৯ জানুয়ারি ২০২৫ ২১:২৪ পিএম

বুধবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যা ব্যুরো (বিবিএস) পরিচালিত ‘অর্থনৈতিক শুমারি ২০২৪’ এর প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রবা ফটো

বুধবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যা ব্যুরো (বিবিএস) পরিচালিত ‘অর্থনৈতিক শুমারি ২০২৪’ এর প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রবা ফটো

গেল এক দশকে (২০১৩-২০২৪) দেশে নতুন কর্মসংস্থান বেড়েছে মাত্র ৬২ লাখ ৬০ হাজার ১৮৪। অথচ এর আগের দশকে (২০০৩-২০১৩) এ সংখ্যা ছিল ১ কোটি ৩৩ লাখ। অর্থাৎ, আগের দশকের তুলনায় কর্মসংস্থান ৭০ লাখের বেশি কমেছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) অর্থনৈতিক শুমারি ২০২৪-এর প্রাথমিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) অডিটরিয়ামে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

বিশ্লেষকরা বলছেন, উৎপাদনশীল খাতে প্রবৃদ্ধির হার কমে যাওয়াই কর্মসংস্থান বৃদ্ধির ধীরগতির অন্যতম কারণ। শিল্প খাতে কর্মসংস্থান আশানুরূপ না বাড়লেও, সেবা খাত এখন অর্থনীতির ৯১ শতাংশ দখল করে আছে।

এদিকে, নারীর কর্মসংস্থানও আগের তুলনায় কমেছে। ২০১৩ সালে কর্মসংস্থানে নারীর সংখ্যা বেশি থাকলেও ২০২৪ সালে তা হ্রাস পেয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, কর্মসংস্থান কমে যাওয়ার ফলে দেশের শ্রমবাজারে নতুন সংকট দেখা দিতে পারে।

প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৪ সালে দেশের শিল্প খাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তিন কোটি সাত লাখ ৬১ হাজার ৩৪ জন নিয়োজিত ছিলেন। ২০১৩ সালে কর্মসংস্থানে যুক্ত ছিল দুই কোটি ৪৫ লাখ ৮৫০ জন। সেই হিসাবে গত এক দশকে নতুন কর্মসংস্থান বেড়েছে মাত্র ৬২ লাখ ৬০ হাজার ১৮৪ জন।

২০০৩ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ১০ বছরে সৃষ্ট নতুন কর্মসংস্থানের তুলনায় ৭০ লাখ ৩৯ হাজার ৮১৬ জন কম। ওই দশকে কর্মসংস্থান বেড়েছিল এক কোটি ৩৩ লাখ জন। 

২০২৪ সাল পর্যন্ত কাজে নিয়োজিত তিন কোটি সাত লাখ ৬১ হাজার ৩৪ জনের মধ্যে পুরুষ দুই কোটি ৫৬ লাখ ৩০ হাজার ২৯৮ জন। মহিলা ৫১ লাখ ২৮ হাজার ৬৭৭ জন, হিজড়া দুই হাজার ৫৯ জন। শিল্প খাতে গত এক দশকে এক লাখ ১৬ হাজার ৯৭৮টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান যুক্ত হয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘গ্রাম ও শহরে উদ্যোক্তার অভাব নেই। এত উদ্যোক্তা যে চারদিকে দেখি শুধু উদ্যোক্তা। মনে হয় বাংলাদেশ উদ্যোক্তাদের দেশ। কিন্তু উদ্যোক্তাদের মূলধন নেই।’

তিনি বলেন, ‘দেশের উদ্যোক্তাদের অর্থায়ন করলে অনেক কর্মসংস্থান হবে। এদের ঋণ ও টাকা দেওয়া হয় না। অথচ হাজার কোটি টাকা ব্যাংক থেকে লুট হয়েছে। ব্যাংকও খালি হয়ে গেছে। ব্যাংক থেকে এসব টাকা চলে গেছে।’

কিছু প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘রাতারাতি ধনী হওয়া কিছু প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। নামকরা এসব প্রতিষ্ঠানের শুধু ঋণ আর ঋণÑ বাস্তবে কিছুই নেই। সরকার নিজের টাকা খরচ করে এসব প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের বেতন দিচ্ছে। রাতারাতি ধনী হওয়া প্রতিষ্ঠানের অনেক শ্রমিককে আমরা আন্দোলন করতে দেখছি।’

জরিপ প্রতিবেদনের তথ‍্য অনুসারে, দেশে গত ১০ বছরে অর্থনৈতিক ইউনিট বেড়েছে ৪০ লাখ ৫৮ হাজার ৭৯৯টি। ২০২৪ সালে সারা দেশে মোট অর্থনৈতিক ইউনিটের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক কোটি ১৮ লাখ ৭৭ হাজার ৩৬৪টি। এর মধ্যে স্থায়ী অর্থনৈতিক ইউনিট হচ্ছে ৬২ লাখ ৮৮ হাজার ২১৪টি। অস্থায়ী ৫ লাখ ৭৬ হাজার ৬২১টি এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত পরিবারের সংখ্যা ৫০ লাখ ১২ হাজার ৫২৯টি।

২০১৩ সালে মোট অর্থনৈতিক ইউনিট ছিল ৭৮ লাখ ১৮ হাজার ৫৬৫টি। এর মধ্যে স্থায়ী ৪৫ লাখ ১৪ হাজার ৯১টি, অস্থায়ী ৪ লাখ ৮২ হাজার ৯০৩টি এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত পরিবার ছিল ২৮ লাখ ২১ হাজার ৫৭১টি। দেশের মোট অর্থনৈতিক ইউনিটের মধ্যে শহরে রয়েছে ৫৫ লাখ ৩১ হাজার ২০৩টি। ১০ বছর আগে ছিল ২২ লাখ ২৯ হাজার ৫৪৬টি। এ ক্ষেত্রে ১০ বছরের ব্যবধানে ইউনিট বেড়েছে ১৩ লাখ এক হাজার ৬৫৭টি। 

এদিকে গ্রামে ২০২৪ সালের শুমারিতে অর্থনৈতিক ইউনিটের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৩ লাখ ৪৬ হাজার ১৬১টি। ২০২৩ সালের জরিপে ছিল ৫৫ লাখ ৮৯ হাজার ১৯টি। এ ক্ষেত্রে বেড়েছে ২৮ লাখ ৫৭ হাজার ১৪২টি। অর্থনৈতিক ইউনিট শহরের চেয়ে গ্রামে বেশি হারে বেড়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মোট অর্থনৈতিক ইউনিটের মাত্র ৮ দশমিক ৭৭ ভাগ শিল্প খাতের। বাকিগুলো সেবা খাতের ইউনিট। ৯৩ দশমিক ৫৩ ভাগ বা এক কোটি ১১ লাখ ৯ হাজার ২টি ইউনিট পরিচালিত হয় পুরুষ দ্বারা। নারী পরিচালক রয়েছেন ৭ লাখ ৬৮ হাজার ৪২টি ইউনিটে। হিজড়া ৩২০টি অর্থনৈতিক ইউনিট পরিচালনা করছে। দেশের অর্থনৈতিক ইউনিটগুলোতে কাজ করছে ৩ কোটি ৭ লাখ ৬১ হাজার ৩৪ জন। যার মধ্যে ৫৬ দশমিক ৮২ ভাগ গ্রামীণ। 

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, উৎপাদনশীল খাতে প্রবৃদ্ধি যথেষ্ট কম। অপরপক্ষে সেবা খাতের ব্যাপক প্রবৃদ্ধি ঘটেছে। মোট অর্থনৈতিক ইউনিটের মধ্যে ৯১ শতাংশ সেবা খাত প্রাধান্য বিস্তার লাভ করেছে। এ ছাড়া কর্মসংস্থানে নারীদের সংখ্যা ২০১৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে কমেছে। ২০২৪ সালের অর্থনৈতিক শুমারিতে শহরে অর্থনৈতিক ইউনিটের সংখ্যা ২৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ। অন্যদিকে গ্রামে এ সংখ্যা ৭০ দশমিক ২৭ শতাংশ। মোট অর্থনৈতিক ইউনিটের সংখ্যা বিবেচনায় গ্রামের প্রাধান্য বেশি।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা