চট্টগ্রাম অফিস
প্রকাশ : ২১ জানুয়ারি ২০২৫ ২২:০৮ পিএম
আপডেট : ২১ জানুয়ারি ২০২৫ ২২:০৮ পিএম
চট্টগ্রাম বন্দরে মঙ্গলবার আমদানি করা খাদ্যদ্রব্য খালাস কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার। প্রবা ফটো
চলতি বছর বিভিন্ন দেশ থেকে আট লাখ টন চাল আমদানি করা হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার।
তিনি বলেন, ‘সরকারি সেক্টরে প্রায়ই আট লাখ টন চাল আসবে। ভারত, মিয়ানমার, পাকিস্তান এসব জায়গা থেকে আসবে। পাকিস্তান থেকে আমরা ৫০ হাজার টন চাল আমদানির ব্যবস্থা করেছি। ভিয়েতনামের সঙ্গে আলোচনা চলছে।’
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি করা খাদ্যদ্রব্য খালাস কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান। এর আগে তিনি নগরীর পতেঙ্গায় নির্মাণাধীন সাইলো পরিদর্শন করেন। এ সময় চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দিন, খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আব্দুল খালেক ও বন্দর চেয়ারম্যান এসএম মনিরুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
আলী ইমাম মজুমদার বলেন, ‘মিয়ানমারের সঙ্গে আমরা এক লাখ টনের চুক্তি করেছি। তারা আরও বিক্রি করতে চাচ্ছে। আমরা তাদের দেশের অভ্যন্তরীণ এবং সরবরাহের অবস্থা দেখে এরপর বিবেচনা করব। এ ছাড়া আরও উৎসের সন্ধান করছি। পাকিস্তানের সঙ্গে চাল আমদানির চুক্তি এখন ফাইনাল স্টেজে আছে।’
বিদেশ থেকে কয়েক দফা চাল এলেও দাম কমছে নাÑ এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখানে প্রথম কথা হচ্ছে দাম বাড়ানো বন্ধ হয়েছে। মোটা চাল যেটা আছে সেটার দাম তিন থেকে পাঁচ টাকা কমেছে। আমরা আরও আনতে থাকব। সেটা বাড়ার আর সুযোগ থাকবে না। বরং ক্রমান্বয়ে কমবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের দিক দিয়ে বেশি নজর দিচ্ছি। বিদেশ থেকে না আনতে পারলে আমরা সবচেয়ে বেশি খুশি হব। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা দুর্যোগকবলিত দেশ। যেকোনো কারণে দুর্যোগ এলে আমাদের ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়। এবার যদি অকাল বন্যা না হতো, তাহলে হয়তো আমাদের এত চাপের মুখে পড়তে হতো না। এত খাদ্যশস্য আমদানি করতে হতো না। আমরা চেষ্টা করছি, যাতে আগামী ফসল ভালো হয়। কম সময়ে যাতে অধিক ফলন ফলে তার জন্য বিভিন্ন গবেষণাগার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। গবেষণার ফসলের বীজ যেটা আছে সেটা কৃষকদের সরবরাহ করা হচ্ছে, যাতে কম সময়ের মধ্যে ফসল ফলানো যায় সে চেষ্টা করা হচ্ছে।’
সামনে রমজানকে ঘিরে খাদ্যদ্রব্যের দাম বাড়ার একটি শঙ্কা তৈরি হয়েছে, সেটা নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকার কী ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছেÑ সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘রমজান মাসে আমাদের খাদ্য মন্ত্রণালয় বিশেষ করে চাল ও গম সবচেয়ে বেশি দেখাশোনা করে। বাকি কিছু আইটেম দেখভাল করে টিসিবি। সেটা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে। টিসিবিও ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে উপজেলায় প্রতিদিন দুই মেট্রিক টন চাল বিক্রি শুরু হয়েছে এ মাস থেকে। রমজান মাসেও এটা থাকবে। সারা দেশে ৫০ লাখ লোকের জন্য খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চালু হয়েছে। দরিদ্র শ্রেণির ৫০ লাখ লোক মাসে ৩০ কেজি করে চাল পাবে ১৫ টাকা করে। আশা করছি, রমজান মাসে দ্রব্যমূল্য সহনশীল থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে তো মানুষ বাড়ছে। শিল্পায়ন ও নগরায়ণের জন্য চাষের জমি বেছে নেওয়া হচ্ছে। আবার অনেক পুকুর করা হচ্ছে। এতে ধানের জমি কমে যাচ্ছে। আমের বাগান করছে। সবকিছু ব্যালেন্স করার জন্য আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’