× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

দুর্বল কোম্পানিতে ন্যুব্জ পুঁজিবাজার

আহমেদ ফেরদাউস খান

প্রকাশ : ২১ জানুয়ারি ২০২৫ ২২:০৪ পিএম

আপডেট : ২১ জানুয়ারি ২০২৫ ২২:০৯ পিএম

দুর্বল কোম্পানিতে ন্যুব্জ পুঁজিবাজার

বিগত ১৬ বছরে দেশের পুঁজিবাজারে এসে নিঃস্ব হয়েছেন হাজারো বিনিয়োগকারী। এতে সাধারণ গ্রাহকের মধ্যে আস্থার সঙ্কট বেড়েছে। হাজার হাজার কোটি টাকা হারিয়ে পথে বসেছে অনেকে। খাত সংশ্লিষ্টদের দাবি, পুঁজিবাজারে অর্ধ শতাধিক দুর্বল কোম্পানি। এর মধ্যে ২৮টিই জেট শ্রেণিভুক্ত (অধিকতর দুর্বল) হয়েছে। এসব কোম্পানিতে বিনিয়োগকারীদের কয়েক হাজার কোটি টাকা আটকে আছে। 

বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত ১৬ বছরে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানির অধিকাংশই দুর্বল। অভিযোগ আছে, স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের সময় কোম্পানির শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত করতে হলে বড় অংকের কমিশন দিতে হতো।  ফলে দুর্বল কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারে আসার সুযোগ পেয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দুর্বল কোম্পানি বাজারে আসার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এসব কোম্পানির মধ্যে বেশ কিছু কোম্পানি আবার প্রিমিয়াম হিসেবে টাকা নিয়েছে। এসব দুর্বল কোম্পানির শেয়ার কিনে বিপুলসংখ্যক বিনিয়োগকারী পথে বসেছে। অনেক বিনিয়োগকারীর শেয়ারগুলো এখন কাগজে পরিণত হয়েছে। দুর্বল এসব কোম্পানি বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ দিতে পারছে না। আবার যা দিচ্ছে তা নামেমাত্র। আবার অনেক কোম্পানি উৎপাদনের বাইরে রয়েছে। সব মিলে দুর্বল কোম্পানিগুলোর শেয়ার নিয়ে বিনোদকারীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।

গত ২৬ বছরে তালিকাভুক্ত ২৮টি প্রতিষ্ঠানকে জেট ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করা হয়। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে অ্যাসোসিয়েটেড অক্সিজেন লিমিটেড (এওএল), ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস, বিচহ্যাচারি, দেশ গার্মেন্টস, এডভেন্ট ফার্মা, খুলনা পাওয়ার, প্যাসিফিক ডেনিমস, ফরচুন সুজ, এনার্জি পাওয়ার জেনারেশন, ভিএফএস থ্রেড ডায়িং, শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ, এসকে ট্রিমস, লুবুরেফ বাংলাদেশ, লিবরা ইনফিউশন, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড, ফনিক্স ফাইন্যান্স, অলিম্পিক এক্সেসরিজ, ন্যাশনাল টিউবস, ন্যাশনাল ব্যাংক, মিরাকেল ইন্ডাস্ট্রিজ, জিএসপি ফাইন্যান্স, ফার কেমিক্যাল, সেন্ট্রাল ফার্মা, বিডি থাই, বে লিজিং, এটলাস বাংলাদেশ, আনলিমা ইয়ার্ন ও ইউনিয়ন ইনস্যুরেন্স।

দুর্বল কোম্পানিগুলো বাজারে আনতে কমিশন বাণিজ্যের নামে বিপুল পরিমাণের অর্থ লেনদেন হয়েছে। এ জন্য খায়রুল কমিশন ও শিবলী কমিশনের সময় যেসব কোম্পানি তালিকাভুক্ত হয়েছে সেগুলোর বিষয়ে তদন্ত করে দেখা যেতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন তদন্তে দেখা যাবে এসব দুর্বল কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করার মাধ্যমে কী পরিমাণ অর্থ লেনদেন হয়েছে।

পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ ও রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু আহমেদ প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, গত দুই কমিশনের সময় সবচেয়ে দুর্বল কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে আসার সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। এসব কোম্পানির দুর্বল হলেও আবার অনেকেই প্রিমিয়াম গ্রহণ করেছে। এতে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগকারীকে পথে বসার সুযোগ করে দেয়া হয়েছে।

ভালো কোম্পানি বাজারে কেন আসছে না-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুর্বল কোম্পানিগুলোর কারণে পুঁজিবাজার এখন ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না। ভালো কোম্পানিকে বাজারে আসার সুযোগ পাচ্ছে না। তাদের সুযোগ করে দিতে হবে। ভালো কোম্পানি আমাদের অর্থনীতিতে এখন অনেক আছে। তাদের পুঁজিবাজারে আনতে হবে। সিকিউরিটিস এক্সচেঞ্জ কমিশন, অর্থমন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক ও এনবিআরের উদ্যোগ নিতে হবে। তাদের আনতে কোন চেষ্টাও করাও হয়নি। তাই তারা আসছে না। তারা (ভালো কোম্পানি) মনে করছে, বাজারে এসে লাভ কী? এ জন্যই হয়তো আসছে না। বাজারে আনতে তাদের প্রণোদনা দেয়া যেতে পারে। ট্যাক্স রিলেটেড কিছু প্রণোদনা দেয়া যায় কি-না বা অন্যভাবে কোন প্রণোদনা। 

পুঁজিবাজারের টানা দরপতন নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাজার থেকে অর্থ চলে গেছে বাইরে। আর বাজারে মানি সাপ্লাই কমে যাওয়ায় দরপতন হচ্ছে। গত এক বছর ধরে যা হলো সুদহার বাড়ছে। সুদহার কমাতে হবে। সুদহার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি কমানো পদ্ধতি এখন আর কাজ করছে না। তাই আইএমএফের (আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল) পরামর্শে সুদহার বাড়ানো যাবে না। মানি সাপ্লাই কম থাকায় শেয়ারের দাম বাড়েছে না। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন চৌধুরী প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, দেশের মুদ্রাবাজারে জবাবদিহি কম। ফলে অনেকেই অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে সুযোগ নিয়ে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে উদ্যোক্তারা অর্থের উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারে না এসে মুদ্রা বাজারের দিকে যাচ্ছে। এতে দেশের পুঁজিবাজারে মূল ভিত্তি বা ভালো কোম্পানিগুলো তালিকাভুক্ত হতে উৎসাহ হারাচ্ছে। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা