× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

এডিপি বাস্তবায়নে খরা

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৪ জানুয়ারি ২০২৫ ২২:১৫ পিএম

এডিপি বাস্তবায়নে খরা

অর্থনৈতিক সংকটের ছাপ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে বাষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর সময়) এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে ১৭ দশমিক ৯৭ শতাংশ, যা এ যাবৎকালের মধ্যে সর্বনিম্ন। এই সময় মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো মোট ব্যয় করেছে ৫০ হাজার ২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে এডিপি বাস্তবায়ন হার ছিল ২২ দশমিক ৪৮ শতাংশ। ওই সময়ে ব্যয় হয়েছিল ৬১ হাজার ৭৩৯ কোটি টাকা। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) সর্বশেষ অগ্রগতি প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। 

আইএমইডির প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে ব্যয় কমেছে ১১ হাজার ৭৩৭ কোটি টাকা। এর আগে কোনো অর্থবছরে এত কম এডিপি বাস্তবায়ন হয়নি। আইএমইডি ওয়েবসাইটে ২০১১-১২ অর্থবছর পর্যন্ত তথ্য পাওয়া যায়।

আইএমইডির কর্মকর্তারা জানান, জুলাই-অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে এডিপি বাস্তবায়ন করা যায়নি। এবং প্রশাসনের সবক্ষেত্রে অস্থিরতা বিরাজ করেছে, যা এখনো স্বাভাবিক হয়নি। এ কারণে চলতি অর্থবছরে এডিপি বাস্তবায়নে এখনো গতি আসেনি।

কর্মকর্তারা জানান, আগের আওয়ামীলীগ সরকারের সময়ে নেওয়া চলমান সব প্রকল্পই অন্তর্বর্তী সরকার পর্যালোচনা করেছে। অগুরুত্বপূর্ণ ও রাজনৈতিক বিবেচনায় নেওয়া অনেক প্রকল্প বা স্কিম বাদ যাচ্ছে। এর প্রভাবও বাস্তবায়নে পড়েছে।

আবার জুলাই-অভ্যুত্থানের পরে অনেক উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক চলে গেছে। অনেক প্রকল্প পরিচালকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ফলে এডিপি বাস্তবায়ন হারও কমে গেছে। অনেক দেশীয় ঠিকাদারও প্রকল্প এলাকায় এখনো ফিরে আসেনি। একইভাবে বৈদেশিক অর্থায়নের বেশকিছু প্রকল্পে বিদেশী ঠিকাদার অনুপস্থিত রয়েছে। এতে প্রকল্প বাস্তবায়নও গতি কমেছে বলে জানা গেছে।

আইএমইডির তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে সরকারি তহবিল থেকে খরচ হয়েছে ২৬ হাজার ৩১০ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ১৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ। কিন্তু গত অর্থবছরের একই সময়ে ব্যয় হয়েছিল ৩৪ হাজার ৪২৯ কোটি টাকা, যা তহবিলের বরাদ্দের ২০ দশমিক ৩৭ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে বৈদেশিক তহবিল থেকে ব্যয় হয় ১৯ হাজার ৬০৯ কোটি টাকা, বা ১৯ দশমিক ৬১ শতাংশ।

চলতি অর্থবছরে মোট বরাদ্দ ২ লাখ ৭৮ হাজার ২৮৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা। অথচ এর মধ্যে খরচ হয়েছে মাত্র ৫০ হাজার ২ কোটি টাকা। ফলে আগামী ছয় মাসে খরচের টার্গেট ২ লাখ ২৮ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা।

আইএমইডির তথ্য অনুযায়ী, বেশি বরাদ্দ পাওয়া অনেক মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এডিপি বাস্তবায়নে অনেক পিছিয়ে আছে। এরমধ্যে ৬ মাসে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের এডিপি বাস্তবায়ন হার ৪ দশমিক ৯২ শতাংশ। এছাড়া সেতু বিভাগ ৭ দশমিক ৮৪ শতাংশ, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ শূন্য দশমিক ১৪ শতাংশ, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ৯ দশমিক ৫০ শতাংশ,সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ৫ দশমিক ২৩ শতাংশ, এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ৮ দশমিক ৬১ শতাংশ হারে এডিপি বাস্তবায়ন করেছে।

এ বিষয়ে ইনস্টিটিউট ফর ইনক্লুসিভ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক মোস্তফা কে মুজেরি প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘ছাত্র জনতার গণঅভ‍্যুত্থানের পর থেকেই সব ক্ষেত্রে পরিস্থতি স্বাভাবিক না। আবার পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে তাও বলা যাচ্ছে না। ফলে চলতি অর্থবছরে এডিপি বাস্তবায়নে খুব বেশি সময় পাওয়া যাবে না। আবার সরকার রাজস্ব আহরণ করে এডিপির বরাদ্দের যোগান দেয়। সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতার বাইরে এবার মহার্ঘ ভাতা দেওয়ারও ঘোষণা হয়েছে। ফলে এডিপিতে পর্যাপ্ত বরাদ্দ দেওয়া যাচ্ছে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘বৈদেশিক ঋণ ব্যবহারের জন্য সরকারি তহবিল থেকে একটা অংশ ব্যয় করতে হয়। এ কারণে বৈদেশিক অর্থায়নও আসছে না। উন্নয়ন সহযোগীদের অর্থছাড়ও কমে গেছে। তবে বরাদ্দ কমলেও এখনো ২ লাখ কোটি টাকার উপরে বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এই বরাদ্দও ব্যয় করা যাবে কি না তা নিয়ে  আশঙ্কা রয়েছে।’

এদিকে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২৩ দশমিক ৫৩ শতাংশ, ২০২১-২২ অর্থবছরে ২৪ দশমিক ০৬ শতাংশ এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে একই সময়ে ২৩ দশমিক ৮৯ শতাংশ এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছিল। তবে, শুধু ডিসেম্বর মাসে খরচ হয়েছে ১৫ হাজার ৭৮৭ কোটি টাকা, যা মোট খরচের ৫ দশমিক ৬৭ শতাংশ।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা