প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৬ জানুয়ারি ২০২৫ ১৮:৪৯ পিএম
দেশে ডিসেম্বর মাসে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে, তবে এটি এখনও সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি রয়ে গেছে। নভেম্বর মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১১ দশমিক ৩৮ শতাংশ, যা ডিসেম্বরে কমে ১০ দশমিক ৮৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি কমেছে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হারও। ডিসেম্বরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে ১২ দশমিক ৯২ শতাংশে পৌঁছেছে। যা নভেম্বরে ছিল ১৩ দশমিক ৮০ শতাংশ। যদিও এই হারে কিছুটা হ্রাস দেখা গেছে, তবে এখনও এটি দুই অঙ্কের মধ্যে থাকার কারণে সাধারণ মানুষের জন্য আর্থিক চাপ অব্যাহত রয়েছে।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ডিসেম্বর মাসের মূল্যস্ফীতির এই তথ্য প্রকাশ করে।
ডিসেম্বর মাসে মূল্যস্ফীতি ১০ দশমিক ৮৯ শতাংশের অর্থ হলো ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে যে পণ্য কিনতে ১০০ টাকা খরচ করতে হয়েছে সেই একই ধরনের পণ্য ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে কিনতে ব্যয় করতে হয়েছে ১১০ টাকা ৮৯ পয়সা। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে পণ্যের দাম বেড়েছে ১০ টাকা ৮৯ পয়সা।
বিবিএসের প্রতিবেদন বলছে, ২০২৪ সালে দেশে গড় মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১০ দশমিক ৩৪ শতাংশ। তার আগের বছরে, অর্থাৎ ২০২৩ সালে এই হার ছিল ৯ দশমিক ৪৮। এই তথ্য অনুসারে, পুরো বছরজুড়ে উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে দেশের জনগণ চাপের মধ্যে ছিল।
এছাড়া, বিবিএস জানায়, গ্রামীণ এলাকাগুলোতে মূল্যস্ফীতি শহরের তুলনায় বেশি ছিল, এবং ডিসেম্বরে গ্রামীণ এলাকায় সার্বিক মূল্যস্ফীতি শহরের চেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হয়।
বিবিএসের প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, নভেম্বরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ১১.৩৮ শতাংশ এবং খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৩.৮০ শতাংশ ছিল। যদিও ডিসেম্বরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে, তা সত্ত্বেও টানা ৯ মাস ধরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের ওপরে রয়েছে।
খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ডিসেম্বর মাসে ছিল ৯ দশমিক ২৬ শতাংশ, আগের মাসের ৯ দশমিক ৩৯ শতাংশের তুলনায় কিছুটা কম।
প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, ডিসেম্বর শেষে গ্রামে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক শূণ্য ৯ শতাংশে, যা গত নভেম্বরে ছিল ১১ দশমিক ৫৩ শতাংশ। এর মধ্যে খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি ১৩ দশমিক ৪১ শতাংশ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ৬৩ শতাংশ। আর খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৭২ শতাংশ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৬৫ শতাংশ।
বিবিএস জানিয়েছে, ডিসেম্বর শেষে শহরাঞ্চলে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ৮৪ শতাংশ, যা গত নভেম্বরে ছিল ১১ দশমিক ৩৭ শতাংশ। এর মধ্যে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি ১৪ দশমিক ৬৩ শতাংশ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৫৬ শতাংশ। আর খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৩১ শতাংশ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ১৭ শতাংশ।
এদিকে সদ্য সমাপ্ত পঞ্জিকা বছরের ডিসেম্বরে মজুরি হার বেড়েছে। এ মাসে সার্বিক মজুরি হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ১৪ শতাংশে, যা গত নভেম্বরে ছিল ১ দশমিক ১০ শতাংশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সব খাতেই বেড়েছে মজুরি হার। কৃষি খাতে মজুরি হার সামান্য বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৩৯ শতাংশ, যা তার আগের মাসে ছিল ৮ দশমিক ৩৬ শতাংশ। ডিসেম্বরে শিল্প খাতে মজুরি হার সামান্য বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৭৭ শতাংশ, যা নভেম্বরে ছিল ৭ দশমিক ৭৩ শতাংশ। সেবা খাতেও মজুরি হার সামান্য বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৪৩ শতাংশ, যা গত নভেম্বরে ছিল ৮ দশমিক ৪০ শতাংশ।