× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ধর্ম ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সবজির দামে খুশি ক্রেতা, কৃষকের মাথায় হাত

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৩ জানুয়ারি ২০২৫ ১২:৫৫ পিএম

আপডেট : ০৩ জানুয়ারি ২০২৫ ১২:৫৬ পিএম

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

শীতকালীন সবজির সরবরাহ বেড়ে যাওয়ার ব্যাপক প্রভাব পড়েছে বাজারে। ক্রেতারা একপ্রকার ‘পানির দরে’ কেনা সবজির স্বাদ নিতে পারছেন ঠিকই, কিন্তু এ অবস্থায় বিপাকে পড়েছেন উৎপাদনকারী কৃষকরা। ফসলের কাঙ্ক্ষিত দাম না পেয়ে তাদের এখন মাথায় হাত। গত কয়েকদিনে উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে সব ধরনের শীতকালীন শাকসবজির দাম। ফলে বিক্রির পরিমাণও বেড়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁও কলমিলতা ও রেলওয়ে বাজার এবং বাড্ডার জোয়ারসাহারা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সবজির দামে ক্রেতারা বেশ সন্তুষ্ট। বিক্রেতারাও খুশি। কারণ বিক্রি বেশি হওয়ায় তাদের ব্যবসা খারাপ যাচ্ছে না। কিন্তু সারা দেশের কৃষকরা এবার সবজি বিক্রি থেকে উৎপাদন খরচটুকু উঠবে কি না তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে প্রতিবেদকদের পাঠানো সরেজমিন প্রতিবেদন থেকে মাঠপর্যায়ের এমন চিত্র পাওয়া গেছে।

গতকাল জোয়ারসাহারা বাজারে দেখা গেছে, ফুলকপির দাম অনেকটাই কমে গেছে। বড় সাইজের ফুলকপি প্রতি পিস ২০ টাকায় মিলছে। আকারে ছোট হলে ১৫ টাকাতেও কেনা যাচ্ছে। এ ছাড়া বিচিসহ শিম বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি; অন্যান্য শিম ৩০, শসা ৫০, টমেটো ৮০, কাঁচা টমেটো ৫০, গোল বেগুন ৫০-৬০, কাঁচামরিচ ৫০-৬০, মুলা ২০-৩০, নতুন আলু ৪০-৪৫, করলা ৫০-৬০, পেঁপে ৩০-৩৫, গাজর ৫০-৬০, ঢেঁড়স ৬০-৭০, কচুরলতি ৭০-৮০, কচুরমুখি ৮০ টাকা কেজি। 

সবজি বিক্রেতা মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, দাম কমে যাওয়ায় ক্রেতারা সবজি কেনা বাড়িয়েছেন। আগে যারা হাফ কেজি নিতেন, তারা কেজির নিচে কিনছেন না। ক্রেতারা এখন একসঙ্গে একাধিক সবজি কিনে নিচ্ছেন বলেও তিনি জানান। এই বাজারে কথা হয় আফরোজা বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, সবজির বাজারে এলে এখন কিছুটা শান্তি লাগে। ১০০ থেকে ১৫০ টাকা দিয়ে ব্যাগ ভর্তি করে সবজি নেওয়া যায়। তবে চালের দামটা যদি কমানো যেত, তাহলে সাধারণ মানুষের কষ্ট কিছুটা কমত।

কলমিলতা ও রেলওয়ে বাজারে দেখা গেছে, সবজির দাম অন্যান্য বাজারের চেয়ে এখানে বেশি কমেছে। বাজার দুটিতে গড়ে প্রতিটি ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ১৫-২০ টাকায়, বাঁধাকপি ৩০ টাকা। প্রতি কেজি গোল বেগুন ৫০ ও লম্বা ৩০ টাকা, বরবটি ৬০, শিম ২০-২৫ ও বিচিসহ শিম ৫০ টাকা, করলা ও উচ্ছে ৫০, টমেটো ৪০, গাজর ৪০, নতুন আলু ৪০-৪২, কাঁচামরিচ ৪০, ব্রোকলি ৪০ টাকা। নতুন পেঁয়াজ ৪৫-৫০ টাকা, পেঁপে ৩০-৩৫, মুলা ২০ টাকা। পাবনার পেঁয়াজ ১১০ টাকা কেজি, দেশি নতুন পেঁয়াজ ৬০-৭০, ভারতীয় পেঁয়াজ ৯০, নতুন ও পুরোনো আলু ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

তবে চালের দামে কোনো হেরফের নেই। গত সপ্তাহের মতোই নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৮০-৮২ টাকা কেজিতে; স্বর্ণা ৫০ টাকা, মিনিকেট ৭৫-৮০ টাকা। কলমিলতা বাজারের সবজি বিক্রেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, সবজির দাম কমে একেবারে পানির দামে চলে এসেছে। এ অবস্থা ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত থাকতে পারে। তবে তিনি বলেন, সবজির দাম এত কম হলে কৃষকদের লোকসান হবে। কেননা তাদের খরচ উঠবে না। নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসায় দামও কিছুটা কমেছে। দেশি ভালো মানের পেঁয়াজ ৪৫-৫০, কিছুটা সাধারণ মানের ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। 

রেলওয়ে বাজারের ক্রেতা রিনা আক্তার বলেন, ফুলকপির দাম কমলেও মানুষ বেশি কিনতে চাচ্ছে না। কারওয়ান বাজারে ট্রাক ভরে ফুলকপি আসছে। তারা আমাদের কাছে ৮ থেকে ১০ টাকায় এগুলো বিক্রি করছে। কৃষকরা নিশ্চয়ই আরও কম দামে বিক্রি করেছেন। শিম, টমেটো ও আলু-জাতীয় সবজি বেশি বিক্রি হচ্ছে। সবজি বিক্রেতা আজহারুল ইসলাম বলেন, দাম কমায় সবজির বিক্রি বেড়েছে। 

এদিকে ব্রয়লার মুরগির দাম ১০ টাকা কমে ১৯০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে এবং সোনালি ২০ টাকা কমে ৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ডিমের ডজন ১৪০ টাকা। রেলওয়ে বাজারে শাহীন রহমান নামের এক ক্রেতা বলেন, সবজির দাম কমায় কিছুটা স্বস্তি পাওয়া গেলেও চালের দামের আগুন কমছে না। 

কৃষকরা দুশ্চিন্তায়

এদিকে উৎপাদিত সবজির কাঙ্ক্ষিত দাম না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন দেশের বিভিন্ন জেলার কৃষকরা। সবজি বিক্রি করে তাদের পরিবহন ও শ্রমিক খরচও উঠছে না বলে জানিয়েছেন একাধিক কৃষক। বিশেষ করে ঋণ নিয়ে সবজি আবাদকারী কৃষকরা বেশি হতাশ হয়ে পড়েছেন। 

মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের কৃষক খায়রুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে স্থানীয়ভাবে প্রতি পিস ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ২০ টাকায়। প্রতিটি লাউ ৪০ টাকা, লালশাকের আঁটি ৫, মুলাশাক ৫, ডাঁটাশাক ৫, কলমিশাক ৫, পালং ৫ ও কালাই শাক ৫ টাকা আঁটি। তার নিজের শ্রম, বীজ, সার, জমি লিজসহ বিভিন্ন ধরনের ব্যয় হয়েছে। বর্তমানে সবজির যে বাজার, তাতে তিনি নতুন করে ঋণে জড়িয়ে পড়বেন বলে আশঙ্কা করছেন।

এদিকে বগুড়ার মহাস্থানগড়ে পাইকারি বাজারে প্রতি পিস ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৫ থেকে ৭ টাকায়। ক্রেতা কম থাকায় অনেক সবজি জমিতেই নষ্ট হচ্ছে। চাষিরা বলছেন, বাজারে দাম নেই, পাইকারি ব্যবসায়ীরাও আসছেন না। তাই জমিতে নষ্ট হচ্ছে বাঁধাকপি ও ফুলকপি।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা