× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সেচ দেওয়া শিখতে বিদেশ যেতে চান কর্মকর্তারা

এম আর মাসফি

প্রকাশ : ২৯ নভেম্বর ২০২২ ১৪:৫৩ পিএম

আপডেট : ৩০ নভেম্বর ২০২২ ১৪:৪৭ পিএম

ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

সেচের মাধ্যমে হাওর এলাকার ভূ-উপরিস্থ পানির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করে অতিরিক্ত খাদ্যশস্য উৎপাদন করতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্পে বিদেশ যেতে চান ২৪ কর্মকর্তা। আর এজন্য চাওয়া হয়েছে দুই কোটি টাকা। এ ছাড়া প্রকল্পে খাল পারাপারের জন্য প্রতিটি খালে ২৫ লাখ টাকা খরচ করে সেতু নির্মাণ করা হবে। প্রতিটি নলকূপ পুনঃখনন এবং কমিশনিংয়ে যাবে সাড়ে ১৬ লাখ টাকা। যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পরিকল্পনা কমিশন। তারা মন্ত্রণালয়কে খরচগুলো পর্যালোচনা করে যৌক্তিক করার জন্য বলেছে। 

প্রকল্প প্রস্তাবনায় জানা যায়, এ প্রকল্পের মাধ্যমে নতুন করে প্রায় ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ প্রদান করা হবে। এই সেচ কাজ শেখার জন্য ২৪ জন কর্মকর্তা যাবেন কানাডা, নেদারল্যান্ডস, মিশর, তুরস্ক, জাপান বা জার্মানিতে। খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ২ কোটি টাকা। তারা কৃষকদের সেচকাজে জ্ঞান দান করবেন। অন্যদিকে প্রকল্পে খাল পারাপারের জন্য প্রতিটি খালে ২৫ লাখ টাকা খরচ করে সেতু নির্মাণ করবে। আর প্রতিটি নলকূপ পুনঃখনন এবং কমিশনিংয়ে যাবে সাড়ে ১৬ লাখ টাকা। 

কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবনা থেকে জানা গেছে, বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। দ্রুত নগরায়নের ফলে ক্রমেই কমছে কৃষিজমির পরিমাণ। অন্যদিকে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্যের জোগান দিতে খাদ্য চাহিদা ঊর্ধ্বমুখী। দেশের প্রধান খাদ্যশস্য ধান উৎপাদনে পানির ব্যাপক চাহিদা বৃদ্ধির জন্য শুষ্ক মৌসুমে সেচের পানির অভাব ব্যাপকভাবে পরিলক্ষিত হয়। এমতাবস্থায় কৃষিকাজে সেচের পানি ব্যবস্থাপনার তাৎপর্য উঠে এসেছে। কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোনার ২৩ উপজেলায় সেচের মাধ্যমে হাওর এলাকার ভূ-উপরিস্থ পানির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করে অতিরিক্ত ৭১ হাজার ১২৬ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য উৎপাদন করার পরিকল্পনা রয়েছে। সেখানে বাড়তি ১২ হাজার ৯৩২ হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা প্রদান করা হবে।

সেচ কার্যক্রমকে আধুনিকায়ন করা এবং প্রযুক্তির প্রয়োগ ও সেচ দক্ষতা বৃদ্ধি করা, প্রকল্প এলাকায় কৃষকদের প্রশিক্ষণ প্রদান করার জন্য কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোণা জেলার হাওর এলাকায় ক্ষুদ্র সেচ উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ৪৪৭ কোটি ২০ লাখ ৬০ হাজার টাকা খরচ ধরা হয়েছে। পাঁচ বছরে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত হবে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন।

প্রকল্পের আওতায় কাজগুলো হলো, ১৩০ কিলোমিটার খাল পুনঃখনন, ১১০ কিলোমিটার গোপাট নির্মাণ, ১০টি থ্রেসিং কাম সানিং ফ্লোর নির্মাণ, ৫ কিলোমিটার নদী থেকে সংযোগ খাল ড্রেজিং, ২০০টি ছোট সেচ অবকাঠামো নির্মাণ (ওয়াটার পাস, ক্যাটল ক্রসিং), ১৫০টি মাঝারি সেচ অবকাঠামো বা খাল পারাপার সেতু নির্মাণ, ৬০টি গভীর নলকূপ প্রতিস্থাপন বা পুনঃখনন, ৪২১ কিলোমিটার ভূগর্ভস্থ সেচনালা নির্মাণ, ১৫০টি পাম্প হাউস নির্মাণ, ২১০টি বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণ, ৭৮০টি খাল পাড়ে জল নির্গমন পথ নির্মাণসহ মোট ২৬টি কার্যক্রম সম্পন্ন করা।

প্রস্তাবনায় দেওয়া খরচের হিসাব পর্যালোচনায় দেখা যায়, এই সেচ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে বিদেশে প্রশিক্ষণ বা শিক্ষা সফরে যাবেন প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত প্রকৌশলী, কর্মকর্তারা। আর তিনটি গ্রুপে ৮ জন করে মোট ২৪ জন ইউরোপের ছয়টি দেশে যাবেন। এদের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে জনপ্রতি ৮ লাখ টাকা করে ১ কোটি ৯২ লাখ টাকা। অর্থনৈতিক সংকটের এই মুহূর্তে বিদেশ প্রশিক্ষণের নামে এই ট্যুর নিয়ে আপত্তি পরিকল্পনা কমিশনের। যেখানে সরকারি গেজেট করে এসব বন্ধ করা হয়েছে, সেখানে সেচ সম্পর্কে জানতে বিদেশ সফর।

প্রকল্পে ১৫০টি খালের ওপর সেতু নির্মাণ করা হবে, যা শুধুমাত্র পারাপারের জন্য। আর এই সেতু প্রতিটির জন্য খরচ ধরা হয়েছে ২৫ লাখ টাকা। এই খাতে মোট খরচ হবে সাড়ে ৩৭ কোটি টাকা, যা শহরের ফুটওভার ব্রিজের চেয়েও ব্যয় বেশি বলে কমিশন সংশ্লিষ্টরা বলছেন। আবার নলকূপ পুনঃখনন ও কমিশনিংয়ে ব্যয় হবে ৬০টির জন্য ৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা। এতে প্রতিটিতে ব্যয় সাড়ে ১৬ লাখ টাকা। অন্যদিকে ২০০টি ছোট সেচ অবকাঠামো নির্মাণ (ওয়াটার পাস, ক্যাটল ক্রসিং) করতে খরচ হবে ১৪ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। এখানে প্রতিটির পেছনে ব্যয় প্রায় সাড়ে ৭ লাখ টাকা।

এ ছাড়া প্রতি কিলোমিটার খাল পুনঃখননে ব্যয় ২২ লাখ টাকা ধরে ১৩০ কিলোমিটারে খরচ ২৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা। ৫ কিলোমিটার সংযোগ খাল ড্রেজিংয়ে ব্যয় ২ কোটি ২০ লাখ টাকা। এখানে প্রতি কিলোমিটারে ব্যয় ৪৪ লাখ টাকা।

বিদেশ সফরের ব্যাপারে পরিকল্পনা বিভাগের সচিব মো. মামুন-আল-রশীদ প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘এসব বিদেশ ট্যুর বা প্রশিক্ষণ আমরা বাতিল করে দেব। এখন এসবের কোনো দরকার নেই।’

খালের ওপর ব্রিজ নির্মাণের খরচের ব্যাপারে তিনি বলেন, এটা আমাদের দেখতে হবে খালে চওড়া কতটা? কী ধরনের মেটারিয়াল দিয়ে এবং কতটা উচ্চতায় এসব ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। তার ওপর নির্ভর করছে ব্রিজের ব্যয়। আমরা পিইসিতে প্রতিটি খরচই চুলচেরা বিশ্লেষণ করব।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা