প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ২০:১৪ পিএম
অভিবাসী প্রত্যাশীদের দক্ষতা উন্নয়নে ৩০ কোটি ইউরো অনুদান দেবে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)। সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সঙ্গে আইএলওর এ সংক্রান্ত একটি অনুদান চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। অনুদানের আওতায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং অন্য স্টেকহোল্ডারদের সহযোগিতায় ‘বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতিভা অংশীদারত্ব সমর্থন’ শীর্ষক একটি তিন বছর মেয়াদি প্রকল্প (২০২৪-২০২৭) বাস্তবায়ন করা হবে।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) ইআরডির বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, অর্থনৈতিক বিভাগের সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী এবং আইএলওর কান্ট্রি ডিরেক্টর তুওমো পটিয়াইনেন নিজ নিজ পক্ষে প্রকল্প চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে ইইউ প্রতিনিধিদলের ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশনের প্রধান মিশাল ক্রেজা, ইআরডির অতিরিক্ত সচিব একেএম সোহেল, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. সাইফুল হক চৌধুরী এবং আইএলও ও সরকার সংশ্লিষ্ট সংস্থার কর্মকর্তারা।
সার্বিক অর্থে প্রকল্পটির উদ্দেশ্য হচ্ছেÑ নির্বাচিত ইইউ সদস্য রাষ্ট্রগুলোর শ্রমবাজারে বাংলাদেশি অভিবাসী কর্মীদের বিভিন্ন পেশাগত খাত যেমনÑ স্বাস্থ্য, প্রকৌশল, আইসিটি, পরিচর্যা, অতিথি সেবা, নির্মাণ এবং কৃষি খাতে তাদের দক্ষতা বাড়িয়ে বিদ্যমান শ্রম চাহিদার সঙ্গে মানিয়ে নিতে প্রস্তুত করা।
এদিকে বাংলাদেশকে দুই প্রকল্পের আওতায় ২ হাজার ৯৭৪ কোটি টাকা ঋণ দেবে জাপান। গতকাল ইআরডিতে এ-সংক্রান্ত অপর একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর মধ্যে ‘যমুনা রেলওয়ে ব্রিজ কনস্ট্রাকশন প্রকল্পের আওতায় ঋণ দেবে ১২ হাজার ১৪৯ কোটি টাকা। প্রকল্পের ঋণের সুদের হার নির্মাণ কাজের জন্য ১ দশমিক ৭০ শতাংশ, পরামর্শকের জন্য ০ দশমিক ৪০ শতাংশ, এককালীন ফি শূন্য দশমিক ২০ শতাংশ। ঋণ পরিশোধকাল ৩০ বছর। এর মধ্যে ১০ বছর গ্রেস পিরিয়ড। প্রকল্পে তৃতীয় ধাপে ২৩ দশমিক ৭ কোটি ডলার দেবে চীন।
চট্টগ্রাম স্যুয়ারেজ সিস্টেম ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পে জাইকা ঋণ ৪ হাজার ১৪৪ কোটি টাকা। প্রকল্পটির মূল লক্ষ্য হলো চট্টগ্রাম শহরে উপযুক্ত পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ, পয়োনিস্কাশন ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট, পাম্পিং স্টেশন এবং পাইপলাইন ইত্যাদির মতো পয়োনিষ্কাশন সুবিধা নিশ্চিত করে স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা এবং জলজ পরিবেশ সংরক্ষণে অবদান রাখা। প্রকল্পটির জন্য জাইকা বিভিন্ন পর্যায়ে ঋণ দিয়েছে। প্রকল্পে ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসের জন্য জাইকা ১৩ কোটি ডলার ঋণ দেবে।
এ ঋণের (ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস) সুদের হার শূন্য দশমিক ২০ শতাংশ, এককালীন ফি শূন্য দশমিক ২০ শতাংশ। ঋণ পরিশোধ কাল ৩০ বছর (১০ বছর গ্রেস পিরিয়ডসহ)। দ্বিপক্ষীয় পর্যায়ে জাপান বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন সহযোগী দেশ। স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত জাপান সরকার বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে বিভিন্ন সেক্টরে উল্লেখযোগ্য সহায়তা করেছে। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে বাংলাদেশ সরকারের অগ্রাধিকারের সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রেখে অবকাঠামো উন্নয়ন, যোগাযোগ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ, পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন, পল্লী উন্নয়ন, পরিবেশ উন্নয়ন এবং মানবসম্পদ উন্নয়নসহ অন্যান্য খাতের প্রকল্পে ঋণ ও বিভিন্ন প্রকার অনুদান সহায়তা হিসেবে জাপান সরকার ৩২ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।