আরমান হেকিম
প্রকাশ : ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ০৯:২২ এএম
গ্রাফিক্স : প্রবা
অনেক দিন ধরেই মন্দাভাব বিরাজ করছে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে। বাড়ছে নানামুখী চাপ। স্বস্তিতে নেই ব্যবসায়ীরা। যে কারণে নতুন বিনিয়োগে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। একধরনের অনিশ্চয়তা জেঁকে বসেছে ব্যবসা খাতে। ব্যাংকঋণের উচ্চ সুদ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগসহ নানা কারণে উৎপাদন খাতের গতিশীলতা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে রাজনৈতিক অস্থিরতা, কারখানায় হামলা, ব্যাংক হিসাব জব্দ, বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা। এমন পরিস্থিতি ব্যবসায়ীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
এই আস্থাহীনতা ও অনিশ্চয়তার কারণে চলতি বছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে দেশীয় বিনিয়োগ প্রস্তাব কমেছে তিন গুণ। আর বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে ৮ দশমিক ৮০ শতাংশ। একই সঙ্গে বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি গত তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে চলে গেছে। যার প্রভাবে বেড়েছে বেকারত্বের হার। বাংলাদেশ ব্যাংক, বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্য বিশ্লেষণে এ চিত্র পাওয়া যায়।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ফলে বিনিয়োগে ধীরগতি তৈরি হয়েছে। আগামী এক থেকে দেড় বছরে রাজনীতি কোন দিকে যায়Ñ তা নিয়ে হিসাব কষছেন অনেকেই। আবার কারা ক্ষমতায় যেতে পারে, তা-ও বিবেচনায় রাখছেন তারা। এ রকম পরিস্থিতিতে ব্যবসা পরিচালনায় কোনো চ্যালেঞ্জ অনুভব করছেন কিনাÑ তা জানতে চাইলে তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘যেকোনো পরিবর্তন ঘটার পর সেটা স্বাভাবিক হতে সময় নেয়। তা ছোট হোক কিংবা বড় মাপের। গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পালাবদলের পর দেশের সব ক্ষেত্রে কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সব খাত আস্তে আস্তে পুনর্গঠিত হচ্ছে। তবে এগুলো কার্যকর হতে কিছুটা সময় লাগতে পারে। আশার কথা হলোÑ এ পরিবর্তনগুলো ইতিবাচক সংস্কারের দিকে যাচ্ছে; যা আমরা সবাই চাই। তবে সেটা যত তাড়াতাড়ি হবে, ততই সবার জন্য মঙ্গলজনক।’
বিনিয়োগ পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে বিনিয়োগকারীরা দেখে, শুনে ও বুঝে বিনিয়োগ পরিকল্পনা করছেন। অনেকে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে খাপ খাইয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। তাই সরকার যত সুন্দরভাবে সামগ্রিক অবস্থার উন্নতি করতে পারবে, ততই মানুষের আস্থা বাড়তে থাকবে। তখন বিনিয়োগ ও ব্যবসা-বাণিজ্যের অন্য বিষয়গুলো নতুন মাত্রা পাবে।’
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণেই উদ্যোক্তারা বিনিয়োগের সাহস পাচ্ছেন না। তারা সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন, নিরাপদ মনে করলেই নতুন বিনিয়োগ আসবে। তবে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও ডলার সংকট দূর করা, এলসি জটিলতা কমানো এবং কথায় কথায় শ্রমিক অসন্তোষের নামে শিল্পের অস্থিরতা বন্ধ করতে হবে। নতুবা বিনিয়োগ বাড়বে না।’
ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ সুদের হার নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ উদ্যোগ নিয়েও উদ্বেগ জানিয়েছেন। তাদের যুক্তি, ঋণের সুদ বাড়লে তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রমে চাপ বাড়বে। অনেকে নতুন বিনিয়োগের পরিকল্পনা থেকে হয়তো সরে আসবেন। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, ‘ঋণের সুদ বেড়ে যাওয়ার কারণে পণ্য সরবরাহ খরচ বেড়েছে, একই সঙ্গে উৎপাদন তথা পণ্য সরবরাহ কমে গেছে। পণ্যের কাঁচামাল আমদানি সক্ষমতাও কমছে। তাই সার্বিকভাবে মূল্যস্ফীতি কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় লক্ষ্যমাত্রায় কমছে না।’
অন্যদিকে অর্থনীতি বিশ্লেষকরা দেশে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়াতে ব্যবসায়ীদের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনার ওপর জোর দিয়েছেন। বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, ‘রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যে একধরনের অনিশ্চয়তা চলছে। আগামী এক থেকে দেড় বছরে রাজনীতি কোন দিকে যায়Ñ তা নিয়ে চিন্তায় আছেন ব্যবসায়ীরা। আবার কারা ক্ষমতায় যেতে পারে, তা-ও তারা বিবেচনায় রাখছেন। বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়াতে হলে ব্যবসায়ীদের আস্থায় আনতে হবে।’
তিনগুণ কমেছে বিনিয়োগ প্রস্তাব
বিনিয়োগ প্রস্তাবের ওপর বিডা সর্বশেষ জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের তথ্য প্রকাশ করে। সেই তথ্য অনুযায়ী, এই প্রান্তিকে ১৮৬টি দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে বিনিয়োগ প্রস্তাব পাওয়া গেছে; যা টাকার অঙ্কে ১৯ হাজার ৬১৮ কোটি টাকা। এটি তার আগের তিন মাস অর্থাৎ এপ্রিল-জুন প্রান্তিকের তুলনায় তিনগুণ কম। ওই সময়ে বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছিল ৭৭ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা। আর প্রস্তাবনা দিয়েছিল ২৫৪টি প্রতিষ্ঠান। তবে প্রস্তাবনা মানেই বিনিয়োগ করা নয়। কোনো প্রতিষ্ঠান চাইলে বিনিয়োগ কমাতে-বাড়াতে বা বাতিলও করতে পারে।
চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) কী পরিমাণ এসেছে তার কোনো তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ করেনি বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে সম্প্রতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের এফডিআইয়ের প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে দেখা যায়, ২০২২-২৩ অর্থবছরের তুলনায় বিদেশি বিনিয়োগ ৮ দশমিক ৮০ শতাংশ কমেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষে নিট বিদেশি বিনিয়োগ হয়েছে ১ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন ডলার, আগের অর্থবছরে যা ছিল ১ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে কমেছে ১৪২ মিলিয়ন ডলার।
মূলত বিদেশ থেকে যত বিনিয়োগ আসে এবং সেই সময় আগের বিনিয়োগের অর্থ পরিশোধ করার পর বিয়োজন করলে যা অবশিষ্ট থাকেÑ সেটিই নিট বিনিয়োগ। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ সবচেয়ে বেশি এসেছে বস্ত্র খাতে। পরের অবস্থানে ছিল ব্যাংকিং, ওষুধ ও জ্বালানি খাত।
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, ‘আমরা বিনিয়োগকারীদের জন্য বিনিয়োগ প্রক্রিয়া আরও সহজ করার পাশাপাশি জমি নেওয়ার ব্যবস্থা উন্নত করছি। নীতির ধারাবাহিকতাও নিশ্চিত করছি। অনিশ্চয়তা কাটিয়ে ব্যবসায়ীদের আস্থা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি। অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ফিরে এলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়তে থাকবে।’
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে চলে গেছে। অর্থনীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ কমে যাওয়ার মানে হলো, ব্যবসা ক্ষেত্রে বিনিয়োগ কমে যাবে। সেই সঙ্গে কমবে নতুন শিল্প স্থাপন বা শিল্প সম্প্রসারণের গতি। অবধারিতভাবে তার প্রভাব পড়বে কর্মসংস্থানে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন বলছে, অর্থবছরের তৃতীয় মাসে বেসরকারি ঋণ খাতে বিতরণের পরিমাণ আগের বছর একই সময়ের তুলনায় ৯ দশমিক ২০ শতাংশ বেড়েছে। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে এ খাতে এর চেয়ে কমÑ ৮ দশমিক ৭৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। এরপর আর কখনও তা ৯ দশমিক ২০ শতাংশের নিচে নামেনি। গত আগস্টে প্রবৃদ্ধি ছিল ৯ দশমিক ৮৬ শতাংশ।
বেড়েছে কর্মহীন মানুষের সংখ্যা
ক্রমবর্ধমান বেকারত্বও বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরিসংখ্যান ব্যুরো বেকারত্ব নিয়ে গত তিন মাসে কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি। সর্বশেষ গত আগস্টে চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুলাই প্রান্তিকের বেকারত্বের তথ্য প্রকাশ করে তারা। এতে দেখা যায়, তিন মাসে দেশে বেকারত্বের হার ৫ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়ে ২৬ লাখ ৪০ হাজারে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৩ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে দেশে কর্মহীন মানুষ ছিল ২৫ লাখ। অর্থাৎ চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে বেকারত্ব বেড়েছে ১ লাখ ৪০ হাজার। এতে আরও বলা হয়, পুরুষের মধ্যে কর্মহীনতা বেড়ে যাওয়ায় বেকারের সংখ্যা বেড়েছে। তবে চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুন প্রান্তিকে নারীর কর্মসংস্থানের হার বেড়েছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক এপ্রিল থেকে জুন সময়ে শ্রমশক্তির বাইরে থাকা মানুষের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ৯৫ লাখ, যা আগের বছরের তুলনায় চার দশমিক ছয় শতাংশ বেশি। শ্রমশক্তির অংশগ্রহণের হার এ বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ৫৯ দশমিক ৩ শতাংশে নেমে এসেছে। আগের বছরে ছিল ৬০ দশমিক ৭ শতাংশ।
বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুযোগ দেখছেন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। সম্প্রতি সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজের (সিজিএস) সহায়তায় অনুষ্ঠিত বে অব বেঙ্গল কনভারসেশনে দেশি-বিদেশি অনেক বিনিয়োগকারী অংশ নেন। এ অধিবেশনে আলোচনায় অংশ নেওয়া বিদেশি বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি, তথ্যপ্রযুক্তি, ওষুধ, অবকাঠামোÑ এসব খাতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা আছে। বক্তারা বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার উদ্যোগকে স্বাগত জানান। তারা মনে করেন, সংস্কার হলে বিনিয়োগ পরিস্থিতির উন্নতি হবে। আইনের শাসনই সবকিছু নিশ্চিত করতে পারে।
অনুষ্ঠানে তুরস্কের কে আই অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাইল ইনান বলেন, ‘যেকোনো বিদেশি বিনিয়োগকারী বিনিয়োগ করার আগে দেখেন, ওই দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, ব্যবসায় স্বচ্ছতা ও ব্যবসা করার সমতল মাঠ। এসব দেখেই তারা সিদ্ধান্ত নেন। বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি, তথ্যপ্রযুক্তি ও ওষুধ খাতে বিদেশি বিনিয়োগের সম্ভাবনা আছে।’
সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি
উচ্চ মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি পরিচালনা করে আসছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর প্রভাবে সুদের হার বেড়ে যাওয়ায় বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ কমে যাচ্ছে। এতে প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। উৎপাদন কমে যাওয়ার কারণে কর্মসংস্থানও কমছে। এতসব নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার পরও বাংলাদেশে ব্যাংক নীতি সুদহার ক্রমাগত বাড়াচ্ছে, যা বর্তমানে ১০ শতাংশে পৌঁছেছে। তাদের প্রধান উদ্দেশ্য আর্থিক স্থিতিশীলতা অর্জন করা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘উচ্চ সুদহারের কারণে বেসরকারি ঋণপ্রবাহ কমছে, এতে কর্মসংস্থানে আঘাত আসতে পারে এটা ঠিক। তবে সংকটময় পরিস্থিতি সামাল দিতে এটি করতে হচ্ছে। কিছু ক্ষতিকর বিষয় মোকাবিলা করতে হতে পারেÑ এটা মাথায় রেখেই আমরা মুদ্রাস্ফীতি কমিয়ে আনার বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা আশা করি, আগামী ৬ মাসের মধ্যে আর্থিক স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে। মূল্যস্ফীতি কমে গেলে সুদের হার নিজে থেকেই কমে যাবে। তখন আমরা সব ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারব।’
তিনি আরও বলেন, ‘ক্ষুদ্র ও মাঝারি পর্যায়ে যাতে কর্মসংস্থান কমে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি না হয় সেজন্য সংকোচনমুখী মুদ্রানীতির মধ্যেও কিছু পুনঃঅর্থায়ন স্কিম চালু রয়েছে। তা ছাড়া কৃষিঋণসহ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।’
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই মুহূর্তে ঝুঁকি নেওয়া ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের হাতে আর কোনো উপায় নেই। তাই প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানের মতো বিষয়ে ছাড় দিয়ে মুদ্রাস্ফীতি কমানোর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে তারা।
এ প্রসঙ্গে ব্যবসায়ীদের তীব্র আপত্তি থাকলেও তাদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। সম্প্রতি ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি বলেন, পরিস্থিতি যাই হোক মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরতে আরও কিছুদিন ধৈর্য ধরতে হবে। এক্ষেত্রে বেতনভাতাসহ বৈদেশিক বাণিজ্য স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ ঋণ দেওয়ারও ব্যবস্থা করা হয়েছে। মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে আসতেও শুরু করেছে। একবার কমতে শুরু করলে স্বল্প সময়ের মধ্যে তা নাগালের মধ্যে চলে আসবে বলে আশাবাদ প্রকাশ করেন গভর্নর।