× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ভুল পরিকল্পনায় ধুঁকছে ১২০০ কোটির প্রকল্প

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১২ নভেম্বর ২০২৪ ২১:৪০ পিএম

আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০২৪ ২১:৫৫ পিএম

ভুল পরিকল্পনায় ধুঁকছে ১২০০ কোটির প্রকল্প

ভুল পরিকল্পনার মাশুল দিতে হচ্ছে দেশের চার ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজকে। আইন অমান্য করে সম্ভাব‍্য সমীক্ষা না করে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা ব‍্যয়ে নেওয়া প্রকল্পটির মেয়াদ ছয় বছর পার হলেও কাজ হয়েছে মাত্র ১৫ শতাংশ। প্রকল্পটির বাস্তবায়ন আদৌ শেষ হবে কি না তা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়।

কাজ করতে না পারলেও ‘চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে একটি করে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্পটিতে নতুন কিছু খাত অন্তর্ভুক্ত করে পরিকল্পনা কমিশনে সংশোধনীর জন‍্য পাঠানো হয়েছে। সোমবার (১১ নভেম্বর) পরিকল্পনা কমিশনের আর্থসামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) রেহানা পারভিনের সভাপতিত্বে মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়।

উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পটি অনুমোদন পায় ২০১৮ সালের ১৭ নভেম্বর। ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ২২২ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রাম বিভাগের খাগড়াছড়ি, খুলনা বিভাগের নড়াইল, রাজশাহী বিভাগের নওগাঁ ও রংপুর বিভাগের ঠাকুরগাঁওয়ে চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। প্রকল্পটির বাস্তবায়নকারী সংস্থা কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর। প্রকল্পটির বাস্তবায়নকাল ছিল তিন বছর। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে বাস্তবায়নে ব‍্যর্থ হয় কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর। এরপর দুই দফা বাড়ানো হয় মেয়াদ। এতে তিন বছরের প্রকল্প গিয়ে দাঁড়িয়েছে সাত বছরে। বর্তমানে প্রকল্পটির মেয়াদ আছে আর মাত্র সাত মাস। ২০২৫ সালের জুনে প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হবে। তবে বর্ধিত মেয়াদেও প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।

প্রকল্প পরিচালকের দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের বাস্তব অগ্রগতি দাঁড়িয়েছে মাত্র ১৫ শতাংশে। আর্থিক অগ্রগতি মাত্র ৭ শতাংশ। অগ্রগতি কম হওয়ার কারণ হিসেবে প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী ফয়সাল মুফতি বলেন, ‘একটি প্রকল্প শুরুর আগে যে ধরনের পূর্বপরিকল্পনা প্রয়োজন, তার কিছুই এ প্রকল্পের ক্ষেত্রে করা হয়নি। ফলে বাস্তবায়ন করতে গিয়ে নানা জায়গায় হোঁচট খেতে হয়েছে। সে কারণেই প্রকল্পটির অগ্রগতি এত কম।’

পরিকল্পনা কমিশনের শিক্ষা অনুবিভাগ বলছে, প্রকল্পটির একবার সংশোধন, একবার আন্তঃঅঙ্গ ব্যয় সমন্বয় ও দুবার ব্যয় না বাড়িয়েই মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। একই প্রকল্পের ক্ষেত্রে সংশোধন, একাধিকবার মেয়াদ বৃদ্ধি ও একাধিকবার আন্তঃঅঙ্গ সমন্বয় কাম্য নয়। প্রকল্পের শেষ পর্যায়ে এসে দ্বিতীয়বার আন্তঃঅঙ্গ ব্যয় সমন্বয় প্রস্তাবের যৌক্তিকতা নেই।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, নানা ধরনের শর্তপূরণ না করায় তারা অনেক প্রকল্পই অনুমোদনের জন্য ছাড় করতেন না। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক প্রভাবে অনেক প্রকল্পকে ছাড় দিতে হয়েছে। এই প্রবণতা বন্ধ না হলে প্রকল্পের পর প্রকল্প নেওয়া হবে, কিন্তু বাস্তবায়ন আর হবে না। অপচয় হবে সময়ের, অর্থের।

চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপনের প্রকল্পটির দ্বিতীয়বার আন্তঃঅঙ্গ ব্যয় সমন্বয়ের প্রস্তাবসংবলিত আরডিপিপি (সংশোধিক প্রকল্প প্রস্তাবনা) পর্যালোচনা করে দেখা যায়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ ২০২৩ সালের ৩০ নভেম্বর প্রথম আন্তঃঅঙ্গ ব্যয় সমন্বয়ের সময় আরডিপিপিতে ১৮টি নতুন অঙ্গ অন্তর্ভুক্ত করে। কিন্তু ২০২২ সালের জুনে জারি করা নির্দেশিকা অনুযায়ী, আন্তঃঅঙ্গ ব্যয় সমন্বয়ের ক্ষেত্রে প্রকল্পের অনুমোদিত অঙ্গগুলোর ব্যয় কেবল কমানো-বাড়ানো যায়, অঙ্গের সংখ্যার পরিবর্তন করা যায় না। ফলে ১৮টি নতুন অঙ্গ আরডিপিপিতে অন্তর্ভুক্ত করার ব্যাখ্যা চাইবে পরিকল্পনা কমিশন।

প্রকল্পের দ্বিতীয় আন্তঃঅঙ্গ ব্যয় সমন্বয় প্রস্তাবে কিছু অঙ্গ যেমন, ওয়ার্কশপ, সেমিনার, পিআইইউ কর্মচারীদের বেতন, আপ্যায়ন ব্যয়, প্রিন্টিং ও বাইন্ডিং, মনিহারি পণ্য, সম্মানি, মোটরযান, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাসামগ্রী- এসব খাতে ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। চলতি বছরের এসব অঙ্গের বাস্তব ও আর্থিক অগ্রগতি ও প্রকল্পের শেষ পর্যায়ে এসে এ খাতে ব্যয় বাড়ানোর কারণ নিয়েও সভায় আলোচনা করা হবে।

এর আগে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ চলতি বছরের ৩ জুন দ্বিতীয় আন্তঃঅঙ্গ ব্যয় সমন্বয় প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে অপ্রত্যাশিত ব্যয় অঙ্গটি আরডিপিপি থেকে বাদ দেওয়ার বিষয়ে গত ৭ জুলাই পরিকল্পনা কমিশন একটি চিঠি দেয়। কিন্তু প্রস্তাবিত আরডিপিপিতে অপ্রত্যাশিত ব্যয় অঙ্গে ১ লাখ ১৭ হাজার টাকার সংস্থান থেকে ৩৯ লাখ টাকা ব্যয় অন্যান্য অঙ্গে স্থানান্তর করা হয়েছে।

কাজের গলদের বিষয়টি স্বীকার করে পিডি প্রকৌশলী ফয়সাল মুফতি বলেন, ‘এই প্রকল্পের অধীনে একাডেমিক ভবন, প্রশাসনিক ভবন ও মাল্টিপারপাস ভবন নির্মাণের অনুমোদন ছিল। কিন্তু একাডেমিক ভবন নির্মাণের আগে গবেষণাগার ও পাঠ্যক্রম প্রণয়ন প্রয়োজন ছিল। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সঙ্গে সেই কাজটি করতে গিয়ে অনেক বেশি সময় লেগে যায়। এখন প্রশাসনিক ভবনের কাজ আগাচ্ছে। নতুন রেট শিডিউল ও কিছু আন্তঃঅঙ্গ ব্যয় সমন্বয় প্রয়োজন। পিইসি সভায় সেগুলো অনুমোদন পেলে দরপত্র আহ্বান করে একাডেমিক ভবনের কাজ আমরা এগিয়ে নেব।’

এদিকে অনুমোদিত মূল ডিপিপি, অনুমোদিত প্রথম সংশোধিত উন্নয়ন প্রস্তাব (ডিপিপি) এবং অনুমোদিত প্রথম আন্তঃঅঙ্গ ব্যয় সমন্বয় ডিপিপিতে ওয়ার্কশপ, সেমিনার ও কনফারেন্সের সংখ্যা পাঁচটি। দ্বিতীয় আন্তঃঅঙ্গ ব্যয় সমন্বয় প্রস্তাবের পরিমাণ পাঁচটির পরিবর্তে ১০টি করা হয়েছে। পেশাগত সেবার সংখ্যা আগের ৯টি বিভাগের জায়গায় বর্তমানে ছয়টি বিভাগের প্রস্তাব করা হয়েছে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা