প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১০ নভেম্বর ২০২৪ ২২:০৮ পিএম
বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে বিদেশি আইনি সংস্থা বা রিকভারি প্রতিষ্ঠান নিয়োগে অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ। বিদেশে পাচার করা অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে গঠিত টাস্কফোর্স গত ৩১ আগস্ট এ বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়।
রবিবার (১০ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বোর্ড সভায় বিদেশি আইনি সংস্থা বা রিকভারি প্রতিষ্ঠান নিয়োগের বিষয়ে অনুমোদন দিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা।
জানা গেছে, বিদেশি প্রতিষ্ঠান নিয়োগের আগে আইনগত দিক খতিয়ে দেখে ইতিবাচক সংকেত দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অধীন শুল্ক গোয়েন্দা, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি) এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
উল্লেখ্য, কমিশনভিত্তিক এজেন্টের মাধ্যমে পাচার করা অর্থ ফেরত আনার নজির আছে। এর আগে ২০০৯ সালে ‘অক্টোখান’ নামে একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর সিঙ্গাপুরে পাচার করা অর্থ ফেরত আনা হয়েছে। পরে দুই দফা চুক্তির নবায়ন হলেও ২০১৫ সালের পর প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে আর চুক্তি নবায়ন করা হয়নি।
হুসনে আরা শিখা বলেন, “রবিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের বোর্ড মিটিংয়ে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস নগদে জালিয়াতি ও অনিয়ম তদন্তে ‘ফরেনসিক নিরীক্ষা’ পরিচালনার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। এর আগে প্রতিষ্ঠানটিতে প্রশাসক ও পরিচালনা পর্ষদ নিয়োগ করে বাংলাদেশ ব্যাংক।”
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নগদের প্রশাসক বদিউজ্জামান দিদার বলেন, ‘দায়িত্ব নেওয়ার পর ফরেনসিক নিরীক্ষার যে উদ্যোগ আমরা নিয়েছিলাম সেটি এখনও শুরু করতে পারিনি। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে ফরেনসিক নিরীক্ষার নির্দেশনা এখনও পাইনি।’
২০১৯ সালের মার্চে নগদ বাংলাদেশ ব্যাংকের অস্থায়ী লাইসেন্স পায়। গত জুনে সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের নেতৃত্বাধীন বোর্ড মিটিংয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সপ্তমবারের মতো অস্থায়ী লাইসেন্সের মেয়াদ বাড়ায়; যা আগামী ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত কার্যকর হবে।
অপরদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক রুহুল আমিনকে বেক্সিমকো গ্রুপের রিসিভার নিয়োগ দেওয়ার পর তা চ্যালেঞ্জ করে আপিল করেছে গ্রুপটিÑ যা সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন রয়েছে। যদিও চেম্বার আদালত রিসিভার নিয়োগের সিদ্ধান্ত বহাল রেখেছে। তাই বর্তমানে গ্রুপটিতে নিযুক্ত রিসিভার কাজ করছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের বোর্ডকে সার্বিক বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে।
এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের অডিট কমিটিতে নজরুল হুদার পরিবর্তে অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীরকে যুক্ত করা হয়েছে। নজরুল হুদা রূপালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হওয়ায় তাকে বাংলাদেশ ব্যাংকে অডিট কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্ষদও পুনর্গঠন হয়েছে। নতুন করে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন ডেপুটি গভর্নর ড. হাবিবুর রহমান, অর্থনীতিবিদ ড. ফাহমিদা খাতুন এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক।