প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৯ নভেম্বর ২০২৪ ১৯:১৬ পিএম
আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০২৪ ২০:৩০ পিএম
বিশ্বের তথ্য-প্রযুক্তি খাতে বৃহত্তম জনগোষ্ঠী থাকা সত্ত্বেও আমাদের আয় ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। যা উল্লেখযোগ্য নয়। এ ক্ষেত্রে ইন্টিগ্রেটেড ডিভাইস ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের (আইডিএম) সুযোগগুলো অনুসরণ করা যেতে পারে। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি সমন্বিত পরিকল্পনা প্রণয়ন, যথাযথ বাস্তবায়ন, কৌশলগত বিনিয়োগ, সরকারি ও বেসরকারি খাতসহ সব অংশীদারের মধ্যে সমন্বয় গড়ে তোলা জরুরি।
শনিবার (৯ নভেম্বর) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিসিআই)
‘তথ্য-প্রযুক্তি খাতের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কার’ শীর্ষক সেমিনারে এসব
কথা বলেন ডিসিসিআই সভাপতি আশরাফ আহমেদ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার
আন্তর্জাতিক বিষয়সংক্রান্ত বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ
বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন।
ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘তথ্যপ্রযুক্তি পরিষেবা, সফ্টওয়্যার এবং যন্ত্রপাতিসহ
তথ্যপ্রযুক্তির বৈশ্বিক বাজার প্রায় ৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার, তবে বিশ্বের তথ্যপ্রযুক্তি
খাতে বৃহত্তম জনগোষ্ঠী থাকা সত্ত্বেও, আমাদের আয় ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার, যা তেমন উল্লেখযোগ্য
নয়।’
তিনি বলেন, ‘এ খাতে আমাদের কর্মীদের দক্ষতা বাড়ানোর পাশাপাশি উচ্চতর
মূল্য সংযোজন পরিষেবা প্রদানের দিকে মনোনিবেশ করতে হবে এবং সেমিকন্ডাক্টর ভ্যালুচেইনে
উৎপাদন ক্ষমতা সম্প্রসারিত করতে হবে। এ ছাড়াও পণ্যের ডিজাইন, অ্যাসেম্বলি প্যাকেজিং
এবং টেস্টিং (এপিটি) প্রভৃতি খাতে আমাদের দক্ষতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ
করতে হবে এবং এ ক্ষেত্রে উদীয়মান আইটি বাজারের জন্য আইডিএমের সুযোগগুলো অনুসরণ করা
যেতে পারে।’
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, ‘সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে স্বল্পমেয়াদি,
মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি সমন্বিত পরিকল্পনা প্রণয়ন, যথাযথ বাস্তবায়ন, কৌশলগত বিনিয়োগ,
সরকারি ও বেসরকারি খাতসহ সকল অংশীদারের মধ্যে সমন্বয় গড়ে তোলা জরুরি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সফ্টওয়্যার ও পরিষেবা রপ্তানির ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রবৃদ্ধি
হয়েছে এবং ২০২৪ অর্থবছরে রপ্তানি আয় প্রায় ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। এ খাতে
দক্ষতার ব্যবধান এবং পরিকাঠামোর অভাবের কথা উল্লেখ করে আশরাফ আহমেদ বলেন, এই ব্যবধান
মেটাতে শিক্ষা, লজিস্টিক পরিকাঠামো এবং প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে বিনিয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
উপরন্তু উচ্চমানের মূল্য সংযোজন তথ্যপ্রযুক্তি পরিষেবার জন্য তিনি গবেষণা ও উন্নয়ন
এবং রপ্তানি প্রণোদনার গুরুত্বের ওপর জোর দেন। এ খাতের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর লক্ষ্যে
সমন্বিত পরিকল্পনা প্রণয়ন যথাযথ বাস্তবায়ন, কৌশলগত বিনিয়োগ, সরকারি, বেসরকারি খাতসহ
সকল স্টেকহোল্ডারের মধ্যকার সমন্বয় একান্ত অপরিহার্য বলে মত দেন ডিসিসিআই সভাপতি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, ‘একটি পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে
বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে। বিদ্যমান নীতিমালাসমূহের যথাযথ বাস্তবায়ন করা গেলে নাগরিক
সেবার পাশাপাশি ব্যবসায়িক কার্যক্রম আরও সহজতর হবে এবং বর্তমান সরকার এ বিষয়টিকে অধিক
হারে প্রাধান্য দিচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ, রপ্তানি পরিসংখ্যানসহ
অন্যান্য তথ্যে বেশ অসংগতি ছিল। যা নিরসনে বর্তমান সরকার বেশকিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
কারণ সঠিক পরিসংখ্যান ছাড়া কখনই যথাযথ পরিকল্পনা প্রণয়ন করা সম্ভব নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান সরকার ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি সংস্কার কমিশন
গঠন করেছে, যার কার্যক্রম অব্যাহত আছে। যেখানে দেশের সকল স্তরের নাগরিকের পাশাপাশি
বিশেষ করে বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিবৃন্দ নিজেদের প্রত্যাশার প্রস্তাব পেশ করতে পারে।
যার ভিত্তিতে সংস্কার কার্যক্রম আরও জোরালো হবে।’
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ
বিন হারুন বলেন, ‘আমাদের তৈরি পোশাক শিল্পের পর তথ্য-প্রযুক্তি খাত অত্যন্ত সম্ভাবনাময়।
যেখানে বিশেষ করে তরুণ জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের পাশাপাশি দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ সম্প্রসারণ
সম্ভব।’ তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল কার্যক্রমের সম্প্রসারণের মাধ্যমে
দুর্নীতি হ্রাস করা সম্ভব।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিডার ফ্রন্ট অফিসে একজন রিলেশনশিপ কর্মকর্তা নিয়োগ
করা হবে, যার কাজ হবে সিঙ্গেল ডেস্ক থেকে বিনিয়োগকারীদের সমস্ত পরিষেবা দ্রুত প্রদান
করা।’