প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৩ নভেম্বর ২০২৪ ২২:০৩ পিএম
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৪ ২২:০৮ পিএম
আয়কর সেবার মাস শুরু হয়েছে রবিবার (৩ নভেম্বর) থেকে। তবে গেল চার বছরের মতো এবারও আয়কর মেলার আয়োজন করছে না জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। বিকল্প হিসেবে প্রতিটি কর অঞ্চলে কর মেলার আদলে মিনি কর মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
রবিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনবিআর ভবনে কর সেবা মাস উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান।
আবদুর রহমান খান বলেন, আয়কর তথ্যসেবা মাসের সার্বিক কাজে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের আয়কর রিটার্ন অনলাইনে দাখিলের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। এ উদ্দেশ্য পূরণকল্পে ঢাকা উত্তর, ঢাকা দক্ষিণ, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের আওতাধীন সকল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সব তফসিলি ব্যাংক, মোবাইল ফোন অপারেটর এবং বেশ কিছু বহুজাতিক কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। দেশের অন্য সকল করদাতাকে অনলাইনে ই-রিটার্ন ও আয়কর দেওয়ার জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে।
তিনি জানান, দেশব্যাপী ৮৬৯টি সার্কেলের করদাতাদের ৪১টি কর অঞ্চলে সেবা বুথ বসিয়ে করদাতাদের বিশেষ সেবা দেওয়া হবে। সেই কার্যক্রম চলবে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত।
এ সময় করদাতাদের অভিযোগ কমাতে হলে পুরো রাজস্ব কাঠামোকে ডিজিটালাইজেশন করার বিকল্প নেই বলেও উল্লেখ করেন এনবিআর চেয়ারম্যান।
২০১০ সাল থেকে প্রতিবছর কর মেলা আয়োজন করে আসছিল এনবিআর। তবে ২০২০, ২০২১, ২০২২ ও ২০২৩ সালে আয়কর মেলা বন্ধ রয়েছে। ২০২০ ও ২০২১ সালে করোনা মহামারির কারণে কর মেলা বন্ধ রাখলেও বাড়তি খরচের বিবেচনায় এবারও আয়কর মেলা আয়োজন না করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।
এবারও সরকারি কর্মচারীদের জন্য সচিবালয়ে রিটার্ন জমার বুথ বসাবে এনবিআর; যা চালু থাকবে ৩ থেকে ১৭ নভেম্বর। আর শেরেবাংলা নগরে সরকারি কর্মচারীরা এই সেবা পাবেন ১৯ থেকে ২৩ নভেম্বর। এবারও সেনা মালঞ্চে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের রিটার্ন জমা দেওয়ার বিশেষ ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
কর অঞ্চলগুলোতে যেসব সেবা পাওয়া যাবেÑ আয়কর মেলার পরিবর্তে কর কমিশনার অঞ্চলগুলোতে জাঁকজমকপূর্ণভাবে ও উৎসবমুখর পরিবেশে ৩ থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত আয়কর রিটার্ন গ্রহণের জন্য করদাতাদের সেবা দেওয়া।
প্রতিটি অফিসে উন্মুক্ত স্থান বা কার পার্কিং এরিয়ায় রিটার্ন গ্রহণ বুথ ও হেল্প ডেস্ক স্থাপন করে রিটার্ন গ্রহণের পরিবেশকে আকর্ষণীয় করে তুলতে হবে। একই সঙ্গে রিটার্ন দাখিলকারী করদাতাদের তাৎক্ষণিক প্রাপ্তি স্বীকারপত্রের সঙ্গে রিটার্ন দাখিলের জন্য উৎসাহ প্রদানে উপহার দেওয়া হবে। অনলাইনে কীভাবে রিটার্ন দাখিল করা যায়, সে বিষয়টি হাতে-কলমে দেখিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে। অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করলে কর সার্টিফিকেট নেওয়ার জন্য অফিসে যেতে হবে না।
সব কর কমিশনার সেবা কেন্দ্রে ই-টিআইএন রেজিস্ট্রেশন ও রি-রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা রাখতে হবে। প্রতিটি কর অঞ্চলের নিজস্ব ওয়েবসাইট তথ্যসহ হালনাগাদ করতে হবে। ওই ওয়েবসাইটে আয়কর সংক্রান্ত বিভিন্ন ফর্ম, পরিপত্র, রিটার্ন পূরণের নির্দেশিকা, ভিডিও টিউটোরিয়ালসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য সন্নিবেশ করতে হবে।
কর অঞ্চলগুলো নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় প্রচার-প্রচারণা অব্যাহত রাখবে। অন্যান্য মাধ্যমের পাশাপাশি ডিজিটাল মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা চলবে। এ ছাড়া ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে জাতীয় ট্যাক্স কার্ড ও ঢাকার কর অঞ্চলগুলোর সেরা করদাতাদের সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে।
অন্যদিকে ঢাকার বাইরে চট্টগ্রামের চারটি কর অঞ্চলে কেন্দ্রীয়ভাবে ও অন্য সব কর অঞ্চল নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় যথাযথ আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে জেলা ও সিটি করপোরেশনভিত্তিক সেরা করদাতা সম্মাননা প্রদান করবে।