শ্বেতপত্র কমিটির বৈঠকে সচিবরা
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৩ নভেম্বর ২০২৪ ১৬:৩৫ পিএম
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৪ ১৮:০০ পিএম
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনইসি সম্মেলন কক্ষে ৮৫ জন সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক। প্রবা ফটো
শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটিকে সচিব ও জ্যেষ্ঠ সচিবরা জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রশাসন রাজনৈতিকভাবে জিম্মি ছিল। অর্থ লুটপাটের জন্য প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নেও রাজনৈতিক প্রভাব ছিল।
রবিবার (৩ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনইসি সম্মেলন কক্ষে ৮৫ জন সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এতথ্য জানান শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। কর্মকর্তাদের মধ্যে ৩২ জন সচিব এবং সিনিয়র সচিব ছিলেন। এ সময় শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির বাকি সদস্যারা উপস্থিত ছিলেন।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, উন্নয়ন বয়ানের পরিস্থিতি নিয়ে আজ আলোচনা হয়েছে। উন্নয়ন পরিস্থিতিটা পুরোটাই প্রশাসনের কাছে বন্দি ছিল। মিটিং এ বক্তারা জানিয়েছেন, তারা পুরোটাই পরিস্থিতির শিকার ছিলেন। কেউ কেউ হেনস্থার শিকার হয়েছেন বলেও জানান।
তিনি বলেন, জবাবদিহিতার অভাবের রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে প্রকল্পের মাধ্যমে লুটপাট হয়েছে। সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে দুর্বলতা ছিল। উন্নয়ন প্রশাসনের মধ্যে কিছু অসাধু কর্মকর্তা, রাজনৈতিক এবং ব্যবসায়ীদের প্রভাব ছিল। অনেক আমলা রাজনৈতিক অভিলাসের কারণে এই ধরনের কাজে জড়িত ছিলেন বলেও তারা জানিয়েছেন।
দেবপ্রিয় বলেন, ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প নেওয়ার আগেই জমি ক্রয় করে বেশি দামে প্রকল্পের কাছে বিক্রি করা হয়েছে। তারা জানত এখানে জমি কিনলে তিনগুণ দামে বিক্রি করা যাবে, এভাবে সরকারে টাকা লুটপাট করা হয়েছে। অন্যদিকে জমি বিক্রি করে লাভবান হওয়ার জন্য যেসব জায়গাতে প্রকল্প নেওয়া উপকারিতা নাই, প্রকল্প কার্যকারী জায়গা না হলেও সেখানে প্রকল্পগুলো করা হয়েছে, জমি বিক্রি করে লাভবান হতো।
তিনি আরও বলেন, প্রকল্পের জন্য যেসব যন্ত্রপাতি ক্রয় করার কথা বলা হয়েছে, সেগুলো আনার জন্য যে ই-টেন্ডার প্রক্রিয়া ব্যবস্থা করা হয়েছে, সেখানেও দুর্নীতি করা হয়েছে। সেগুলো কীভাবে প্রভাবিত করা হয়েছে সেগুলোও আলোচনা হয়েছে। ঠিকাদারদের বাছাইয়ের ক্ষেত্র অনিয়ম করা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে প্রকল্প পরিপূর্ণভাবে শেষ না করেও সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। সেই কারণেই প্রকল্প থেকে অর্থনৈতিক বেনিফিট পাওয়া যাচ্ছে না।
শ্বেতপত্র কমিটির প্রধান বলেন, তারা জানিয়েছেন পেশাগতভাবে আমাদের ভঙ্গুর করে ফেলা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে তাদের বিভিন্নভাবে বদলি করে ও রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। যে কারণে তারা পেশাদারত্ব ও দলগতভাবে কাজ করতে পারেননি। এই কারণে প্রকল্প অনিয়ম হয়েছে বলেও জানান তারা।
তিনি বলেন, আজকে অনেক প্রকল্পের নিয়ে আলোচনা হয়েছে। হাইটেক পার্ক, কর্ণফুলী টানেল, জ্বালানি খাত, কর আহরণ, সামাজিক খাত, ব্যাংক ব্যবস্থাপনা নিয়েও আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। যে আলোচনা উঠে এসেছে। পেশাদারি উন্নয়ন ব্যবস্থাপনা খুবই দরকার। সক্ষম, স্বাধীন এবং যোগ্য পেশাজীবীদের উন্নয়নের জন্য ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তারা স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ এবং সক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর তারা জোর দিয়েছেন। পেশাগত দ্বায়িত্ব পালন করতে গেলে যাতে কোনো বাধার সৃষ্টি না হয় বলেও তারা উল্লেখ করেছেন।