প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৪ অক্টোবর ২০২৪ ২১:০২ পিএম
অর্থপাচার কমে আসার পর থেকে দেশে বেড়েছে রেমিট্যান্স প্রবাহ। প্রবাস থেকে প্রতিদিন গড়ে আসছে হাজার কোটি টাকা। দেশের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখছেন প্রবাসী বাংলাদেশীরা। এতদিন হুন্ডিতে পাচার হচ্ছিল বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা। আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাবশালী এবং আমলাদের পাচারের কারণে বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রবাহ থমকে দাঁড়িয়েছিল। গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে পাল্টে গেছে সার্বিক চিত্র।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, অক্টোবর মাসের প্রথম ১২ দিনে দেশে বৈধপথে ৯৮ কোটি ৬৬ লাখ ৪০ হাজার (৯৮৬ মিলিয়ন) মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ১১ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২০ টাকা ধরে)। দৈনিক গড়ে রেমিট্যান্স এসেছে ৮ কোটি ২২ লাখ ১৯ হাজার ডলার বা ৯৮৭ কোটি টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, অক্টোবর মাসের ১২ তারিখ পর্যন্ত দেশে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে তার মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ২৪ কোটি ৫৬ লাখ ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে চার কোটি ৪৮ লাখ মার্কিন ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৬৯ কোটি ৩৬ লাখ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ২৬ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার।
এই ১২ দিনে ১১টি ব্যাংকের মাধ্যমে কোনো রেমিট্যান্স পাঠায়নি প্রবাসীরা। ব্যাংকগুলো হলো- রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বা বিডিবিএল, বিশেষায়িত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক বা রাবাক; বেসরকারি কমিউনিটি ব্যাংক, সিটিজেন্স ব্যাংক, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংক। আর বিদেশি ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে- হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া এবং উরি ব্যাংক।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে দেশে এসেছে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার, আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ৪১ লাখ ৫০ হাজার ডলার এবং সেপ্টেম্বরে এসেছে ২৪০ কোটি ৪৭ লাখ ৯০ হাজার ডলারের রেমিট্যান্স।
এর আগে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দুই হাজার ৩৯২ কোটি ডলারের সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা দেশে এসেছে। দেশীয় মুদ্রার যার পরিমাণ দুই লাখ ৮২ হাজার কোটি টাকা। এটি এ যাবৎকালের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ। দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেকর্ড রেমিট্যান্স এসেছিল ২০২০-২১ অর্থবছরে দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ডলার। তবে চলতি অর্থবছরে বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে দেশের ইতিহাসে নতুন রেকর্ড গড়ে রেমিট্যান্সের অঙ্ক ২৫ বিলিয়ন ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংশ্লিষ্টদের।