প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৭ অক্টোবর ২০২৪ ২০:০২ পিএম
আপডেট : ০৭ অক্টোবর ২০২৪ ২১:০৮ পিএম
দখল হওয়া উত্তরা ফাইন্যান্স ফেরত পেতে গভর্নরকে চিঠি লিখেছেন ৬ উদ্যোক্তা। চিঠিতে তারা লিখেছেনÑ বিগত সরকারের প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের (পিজিআর) প্রধানের দখলে এখনও রয়েছে উত্তরা ফাইন্যান্স। হাসিনা সরকারের সময়ে একটি চক্র এ প্রতিষ্ঠান দখল করে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সময়েও শেখ হাসিনার দোসর দখলদার চক্রের হাতেই রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। তাহলে প্রশ্ন ওঠে, হাসিনার দোসর সাবেক পিজিআর প্রধানের ক্ষমতার উৎস কোথায়।
জানা গেছে, ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় উত্তরা ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট
লিমিটেড। ২০১৯ সাল পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি ‘এ’ শ্রেণিভুক্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুঁজিবাজারে
অন্তর্ভুক্ত ছিল। এরপর থেকে প্রতিষ্ঠানটি নিয়ে শুরু হয় ষড়যন্ত্র। সেই ষড়যন্ত্রের চূড়ান্ত
রূপ লাভ করে ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর।
ছয়জন উদ্যোক্তা দাবি করেছেন, বিগত সরকারের প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের (পিজিআর) প্রধান মেজর জেনারেল (অব.) মো. মাকসুদুর রহমানের নেতৃত্বে আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি দখল হয়। তাকে সহযোগিতা করেন সে সময়কার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম। মো. মাকসুদুর রহমান এখনও উত্তরা ফাইন্যান্সের চেয়ারম্যান। দখলদার চক্রটি কোম্পানিটি কুক্ষিগত করে দক্ষ ও পেশাদার ৪৫ কর্মকর্তাকে অপসারণ করে। বর্তমান পর্ষদ দায়িত্বগ্রহণ করে নিজেদের পছন্দমতো লোক নিয়োগ করে প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ধ্বংস করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তার প্রমাণ হলো কোম্পানির সর্বশেষ বার্ষিক সাধারণ সভা হয়েছিল ২০১৯ সালে। এরপর কোনো বার্ষিক সাধারণ সভা হয়নি। ফলে কোম্পানিটি বর্তমানে জেড ক্যাটাগরিতে পরিণত হয়। বর্তমান পর্ষদ দায়িত্ব নেওয়ার পর শেয়ার হোল্ডারদের কোনো প্রকার লভ্যাংশও দেয়নি।
পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে উত্তরা ফাইন্যান্সের ছয়জন উদ্যোক্তা তাদের
হাতে গড়া প্রতিষ্ঠান ফিরে পেতে বর্তমান গভর্নরের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। উত্তরা ফাইন্যান্সের
সাবেক চেয়ারম্যান ও অন্যতম উদ্যোক্তা মতিউর রহমান গত ১৯ সেপ্টেম্বর গভর্নরের সঙ্গে
সাক্ষাৎ করে তাদের প্রতিষ্ঠিত আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি দখলমুক্ত করার জন্য লিখিত আবেদন
করেন। সেই সঙ্গে দখলদাররা আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি দখল করে যেভাবে লুটপাট করেছে তা নিরীক্ষা
করে ন্যায়বিচার করার জন্য গভর্নরের কাছে আবেদন জানান। মতিউর রহমান বলেন, ‘গুম করার
ভয় দেখিয়ে দখলদাররা একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানকে দখল করে রীতিমতো লুটপাট করেছে। আমরা উদ্যোক্তারা
দখলদারমুক্ত উত্তরা ফাইন্যান্স চাই।’
প্রসঙ্গত, মালিকানা হাতবদলের আগেও আর্থিক প্রতিষ্ঠানটিতে ব্যাপক অনিয়ম
খুঁজে পায় বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত দল।