× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ফোরাম সভায় অভিযোগ

শ্রমিক অসন্তোষ মোকাবিলায় ব্যর্থ বিজিএমইএ

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৬ অক্টোবর ২০২৪ ১৫:০৩ পিএম

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

চলমান শ্রমিক আন্দোলন মোকাবিলা এবং অন্তর্বর্তী সরকারকে পোশাক খাতের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে বোঝাতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে বিজিএমইএ’র পরিচালনা বোর্ড। এ শিল্পকে ধ্বংস করতে একটি গোষ্ঠী কলকাঠি নাড়ছে, বিদেশি ক্রেতারা অর্ডার কমিয়ে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তারপরও সরকারের কাছে শিল্পে বাস্তব অবস্থা তুলে ধরছে না এবং বিদেশি ক্রেতাদের আস্থায় আনতে উদ্যোগ গ্রহণ করছে না তারা।   

শনিবার (৫ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবে আয়োজিত এক সভায় সাধারণ গার্মেন্টস মালিকরা এসব অভিযোগ করেন। পোশাক শিল্পের চলমান অস্থিরতা দূরীকরণে করণীয় খুজতে এই সভার আয়োজন করে ফোরাম। প্রসঙ্গত, ফোরাম হচ্ছে বিজিএমইএ নির্বাচনে অংশ নেয়া একটি গ্রুপ। 

স্বাগত বক্তব্যে ফোরাম সাধারণ সম্পাদক এবং নেক্সাস গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুর রশিদ হোসাইনী বলেন, ‘গার্মেন্টস শিল্পে অস্থিরতা আগেও ছিল। অতীতের অস্থিরতা এত দীর্ঘায়িত হয়নি। এর পেছনে কারও ইন্দন থাকতে পারে। এরা শ্রমিক অসন্তোষের নামে দেশের অর্থনীতিকে ধূলিস্মাৎ করতে চায়। গার্মেন্টস করে অনেকে হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছে, ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে পরিশোধ করেনি, বিদেশে টাকা পাচার করেছে। এদের কারণে বেকায়দায় থাকেন সত্যিকারের মালিকরা। এখন গোয়েন্দা সংস্থা পাসপোর্টের  তথ্য চাচ্ছে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে, এটাই কী গার্মেন্টস মালিকদের অপরাধ। বিজিএমইএ বোর্ড সরকারকে গার্মেন্টস শিল্পের প্রকৃত অবস্থা বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছে।’  

সীমা ফ্যাশনের প্রোপাইটার আবুল হোসেন বলেন, ‘সরকারের উপদেষ্টাদের গার্মেন্টস সম্পর্কে জ্ঞান বা জানাশোনা নিয়ে সন্দেহ আছে। একইসঙ্গে বিজিএমইএ বোর্ডও দায়িত্বজ্ঞান হীনভাবে সরকারের কাছে সেক্টরের সমস্যা তুলে ধরতে পারছে না। তারা শুধু ব্যস্ত নিজেদের স্বার্থ নিয়ে। আশুলিয়া এলাকায় আগস্টের বেতন ব্যাংক থেকে ১৫ শতাংশ সুদে ঋণ নিয়ে দিতে হয়েছে।  সেপ্টেম্বর মাসে অনেক কারখানায় এক দিনও কাজ হয়নি। সেইসব কারখানা বেতন দেবে কীভাবে। সেটা কারও আছে বলে মনে হয় না।’   

ডুকাটি ফ্যাশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খায়ের মিয়া বলেন, ‘গত নভেম্বরে বেতন বাড়ানোর পর শ্রমিকদের পক্ষ থেকে এখন আবার বেতন বাড়ানোর দাবি জানানো হয়েছে। ১০ টাকা বেতন বাড়ানোর সক্ষমতা নেই অনেক মালিকের। বর্তমান বিজিএমইএ বোর্ড শ্রমিক অসন্তোষ মোকাবিলায় ভূমিকা রাখতে পারছে না। তাদের সেই যোগ্যতা নেই। কারণ জোর করে, ভোট কারচুপির মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে।’  

চলমান সংকট মোকাবিলায় বিজিএমইএ বোর্ডকে ৪টি পরামর্শ দিয়ে সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ফয়সাল সামাদ বলেন, ‘আশুলিয়া এলাকায় ২৫-৩০টি কারখানা এখনও বন্ধ আছে। একটি টাস্কফোর্স গঠনের নামে কারখানা সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধানের উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে। দ্বিতীয়ত, আশুলিয়ায় রেসকিউ (উদ্ধার) প্যাকেজ ঘোষণা করা যেতে পারে। এর আওতায় গার্মেন্টস মালিক ব্যাংক ঋণসহ যাবতীয় সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেয়া উচিত। তৃতীয়ত, তৈরি পোশাক খাতের উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি নিয়ে গবেষণা হতে পারে। চতুর্থত, বিজিএমইএ সদস্যদের কারখানার সক্ষমতার ভিত্তিতে ক্যাটাগরি করে পৃথক পলিসি প্রণয়ন করা যেতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, এখনই উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে না পারলে শ্রীলঙ্কা থেকে তামিল বিদ্রোহীদের কারণে নব্বইয়ের দশকে যেভাবে গার্মেন্টস শিল্প বাংলাদেশে এসেছিল, সেভাবে ব্যবসা বাংলাদেশ থেকে অন্য দেশে চলে যেতে পারে।

রাইজিং গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেন, ‘এই মুহূর্তে আশুলিয়ায় যা হচ্ছে, সেটা শ্রম আইন বিষয়ক সমস্যা না, এটা আইনশৃঙ্খলা সমস্যা। সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেওয়া হলেও তা ব্যবহার হচ্ছে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছেন না বা করতে পারছেন না। আইন ভঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা গেলে এতোদিনে এ সমস্যার সমাধান হয়ে যেত।’ 

তিনি আরও বলেন, শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নিয়ে সুশীল সমাজের পক্ষ থেকে অনেক কথা বলা হয়। কিন্তু গার্মেন্টসই একমাত্র খাত যেখানে অদক্ষ শ্রমিকদের বেতন ওভারটাইমসহ ১৫ হাজার টাকা পড়ে। দেশে আর কোনখাত আছে যেখানে অদক্ষ শ্রমিকরা ১৫ হাজার টাকা বেতন পায়? 

বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ড. রুবানা হক বলেন, ‘সরকার চায় গার্মেন্টস মালিকরা শান্তিতে ব্যবসা করুক। প্রধান উপদেষ্টা পোশাক খাত নিয়ে ভিশন বিচলিত, সমাধান খুঁজছেন। কিন্তু সরকারের সঙ্গে দর কষাকষি বা নিজেদের দাবি আদায় করার মত মুখ খুঁজে পাচ্ছি না। 

তিনি আরও বলেন, ‘চলমান পরিস্থিতিতে বায়ারদের আস্থায় আনা ভীষন জরুরি। প্রধান উপদেষ্টা বিদেশি বায়ারদের সঙ্গেও আলোচনায় বসতে রাজি আছেন। ওনার মত বিশ্ব বরেণ্য মানুষকে ব্যবহার করতে না পারলে আমাদের (বিজিএমইএ) ব্যর্থতা। এছাড়া এক্সিট পলিসি নিয়ে কাজ করারও এখন উপযুক্ত সময়।’


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা