× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

৯৪৫ কোটি টাকা সহায়তা পেল দুর্বল চার ব্যাংক

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০২ অক্টোবর ২০২৪ ১৮:৪২ পিএম

আপডেট : ০২ অক্টোবর ২০২৪ ১৯:৩৫ পিএম

ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্যারান্টির বিপরীতে অপেক্ষাকৃত সবল ব্যাংক থেকে ৯৪৫ কোটি টাকা তারল্য সহায়তা পেয়েছে দুর্বল চারটি ব্যাংক। ব্যাংকগুলো হলো-ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংক। 

বুধবার (২ অক্টোবর) বিকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

মুখপাত্র জানিয়েছেন, সিটি ব্যাংক, ডাচ বাংলা ব্যাংক ও মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক থেকে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ৩০০ কোটি টাকা ধার পেয়েছে। আর সিটি ব্যাংক ও মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক থেকে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকও সমপরিমাণ অর্থ পেয়েছে।

অপরদিকে, বেঙ্গল কমার্স ব্যাংক, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ও সিটি ব্যাংক থেকে তারল্য সহায়তা পেয়েছে ন্যাশনাল ব্যাংক। তবে কত টাকা পেয়েছে সেটা জানাননি মুখপাত্র। এ ছাড়া, ইস্টার্ন ব্যাংক, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ও ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে চাহিদা অনুযায়ী তারল্য সহায়তা পেয়েছে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক।

দুর্বল একটি ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা প্রতিদিনের বাংলাদেশকে জানান, বুধবার দুপুরের পর তারা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ছাড়পত্র পেয়েছেন। তবে টাকা বুঝে পেতে কিছুটা সময় লাগছে। 

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি সূত্র জানিয়েছে,  ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ৩০০ কোটি, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ৩৫০ কোটি, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ২৫ কোটি এবং ন্যাশনাল ব্যাংক ২৭০ কোটি টাকা ধার পেয়েছে। এসব ব্যাংককে দেওয়া তারল্যের সমন্বিত অঙ্ক ৯৪৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দিয়েছে সিটি ব্যাংক ৭০০ কোটি টাকা। এ ছাড়া মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ১৫০ কোটি, ডাচ বাংলা ব্যাংক ৫০ কোটি, ইস্টার্ন ব্যাংক ২৫ কোটি এবং বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক ২০ কোটি টাকা ধার দিয়েছে।  

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছিল, সবল ব্যাংকগুলো থেকে নেওয়া ঋণের টাকা দুর্বল ব্যাংকগুলো দিতে ব্যর্থ হলে, সেই টাকা তিন দিনের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ফেরত দেবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে আরও জানা যায়, ধারের টাকা কোনো ব্যাংক ঋণ হিসেবে বিতরণ করতে পারবে না। দুই ব্যাংকের সমঝোতার ভিত্তিতে ঋণের সুদহার নির্ধারিত হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্যারান্টির মানে হলো, কোনো কারণে কোনো ব্যাংক ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ওই টাকা দেবে। আপাতত কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরাসরি টাকা না দিয়ে অন্য ব্যাংক থেকে ধারের ব্যবস্থা করছে। অর্থাৎ বাজারের টাকা এক ব্যাংক থেকে আরেক ব্যাংকে যাবে। ফলে মূল্যস্ফীতির ওপর বাড়তি প্রভাব পড়বে না।

সংকটে পড়া সাত ব্যাংক ঘুরে দাঁড়াতে প্রায় ২৯ হাজার কোটি টাকার তারল্য-সহায়তা চেয়েছে। এর মধ্যে ইসলামী ব্যাংক ৫ হাজার কোটি, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ২ হাজার কোটি, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ৭ হাজার ৯০০ কোটি, ইউনিয়ন ব্যাংক ১ হাজার ৫০০ কোটি, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক সাড়ে ৩ হাজার কোটি, ন্যাশনাল ব্যাংক ৫ হাজার কোটি ও এক্সিম ব্যাংক ৪ হাজার কোটি টাকা চেয়েছে। 

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জর্জরিত ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত ২০ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত ১১টি ব্যাংকের পর্ষদে পরিবর্তন আনে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। এর মধ্যে আটটি ব্যাংক তারল্য-সংকটে ভুগছে। তবে ছয়টি ব্যাংকের পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে তাদের অনেক শাখায় নগদ টাকার লেনদেন প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। আমানতকারীদের চাপে শাখা ব্যবস্থাপকসহ ব্যাংকগুলোর কর্মকর্তারা প্রতিদিনই অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন।

বুধবার ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের মতিঝিল ব্রাঞ্চে টাকা তুলতে এসে ব্যাংক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিতণ্ডায় জড়ান কয়েকজন গ্রাহক। তাদের চাহিদামতো টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন ব্যাংক কর্মকর্তারা। এতে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে শাখা ব্যবস্থাপকের কক্ষে যান এবং চাহিদামতো টাকা দেওয়ার দাবি করেন। এ সময় তাদের একজন ঘটনার ভিডিও ধারণ করেন এবং ব্যাংক কর্মকর্তারাও তাদের ভিডিও ধারণ করেন। তখন উভয়পক্ষই পরস্পরের মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে টহলরত সেনাসদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে উভয়পক্ষই শান্ত হন এবং সমঝোতার ভিত্তিতে সন্তোষজনক অঙ্ক দেওয়া হলে গ্রাহকেরা চলে যান। 

ব্যাংকটির গ্রাহক নাট্যকর্মী লাবু কামাল বলেন, ‘আমার বেতন আটকে গেছে কিন্তু টাকা পাচ্ছি না। কর্মকর্তারা আমাকে ৫ হাজার টাকা দিতে চাচ্ছেন অথচ আমার অন্তত ১ লাখ টাকা প্রয়োজন। বনশ্রী শাখায় আমার হিসাব, সেখান থেকে মতিঝিল আসতে বলা হয়েছে। এখানে এসে দেখি তারা একই কথা বলছেন।’ 

রিং রোড ব্রাঞ্চের গ্রাহক মারজিয়া বলেন, ‘আমি একটি উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করি। আমার অফিস খরচ এবং কর্মীদের বেতন দিতে পারছি না। শুনেছি এখানে এলে বেশি টাকা পাব, কিন্তু আসার পর আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়েছে। তবে নাহিদ নামের একজন গ্রাহক জানিয়েছেন, তিনিও টাকার জন্য ঘুরছেন কিন্তু ব্যাংক কর্মকর্তারা তার সঙ্গে যথেষ্ট ভালো ব্যবহার করেছেন এবং ধৈর্য ধরার অনুরোধ করেছেন।’ 

বিক্ষুব্ধ গ্রাহক ডা. তাবাসসুম বলেন, ‘আমার এফডিআর আছে কিন্তু সেটি চাচ্ছি না। বেতনের টাকাও দেওয়া হচ্ছে না। আমরা অপেক্ষা করতে করতে ক্লান্ত।’ 

ব্যাংকটির দিলকুশা শাখা ব্যবস্থাপক মো. তহুরুল হক বলেন, ‘আমরা গ্রাহকের সঙ্গে যথেষ্ট মার্জিত আচরণ করছি। আমাদের কোনো কর্মী যদি খারাপ আচরণ করে থাকে আমি দুঃখ প্রকাশ করছি। তবে কিছু কিছু গ্রাহক মাত্রাতিরিক্ত উত্তেজিত আচরণ করছেন সেটি সামাল দেওয়া আমাদের জন্য কঠিন হচ্ছে। আশাকরি দ্রুতই পরিস্থিতি ঠিক হয়ে যাবে।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা