বেনাপোল (যশোর) ও আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৬:৫১ পিএম
আপডেট : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:২৭ পিএম
আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাংলাদেশ থেকে ইলিশের প্রথম চালান ভারতে গেল। বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে তিনটি ট্রাকে ৫৪ টন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া দিয়ে ছয়টি ট্রাকে ৭ টন ইলিশ ভারতে প্রবেশ করে।
বেনাপোল বন্দর দিয়ে ইলিশের রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো হলোÑ বাংলাদেশের স্বর্ণালী এন্টারপ্রাইজ, সাজ্জাদ এন্টারপ্রাইজ ও সোমা এন্টারপ্রাইজ। ভারতের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান হলোÑ আরজে এন্টারপ্রাইজ; আরএস এন্টারপ্রাইজ, কলকাতা।
আখাউড়া দিয়ে রপ্তানি করা মাছের সিঅ্যান্ডএফ করে আদনান ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল ও ট্রেড লিংক ইন্টারন্যাশনাল। আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান হলোÑ আরজে ইন্টারন্যাশনাল ও হিনপ্যাক্ট ইন্টারন্যাশনাল, কলকাতা।
বেনাপোল ফিসারিজ কোয়ারাইনটেন্ট অফিসার মাহবুবুর রহমান জানান, কর্তৃপক্ষের অনুমতি পাওয়ার পর ইলিশের ট্রাকগুলো বেনাপোল থেকে ভারতের পেট্রাপোল গিয়ে পৌঁছেছে।
আখাউড়া স্থল শুল্কস্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. ওয়াহিদুজ্জামান খান জানান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক মাছ রপ্তানি হচ্ছে। রপ্তানির বিপরীতে জমা হওয়া কাগজপত্র দেখে কর্তৃপক্ষের অনুমতি পাওয়ার পর ইলিশের ট্রাকগুলো আখাউড়া থেকে ভারতের আগরতলা বন্দরে পৌঁছেছে।
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, দেশের ৪৯ জন রপ্তানিকারককে ২ হাজার ৪২০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। শর্ত দেওয়া হয়েছে, আগামী ১৩ অক্টোবরের মধ্যে রপ্তানি শেষ করতে হবে। প্রতি কেজি ইলিশের রপ্তানি মূল্য ১০ ইউএস ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় ১ হাজার ১৮০ টাকা।
বেনাপোল বন্দরের মৎস্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ অফিসের পরিদর্শক আসওয়াদুল ইসলাম বলেন, ‘দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকার ৪৯টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানকে ২ হাজার ৪২০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে। রপ্তানি করা ইলিশের গুণগত মান পরীক্ষা করে ৫৪ টনের ছাড়পত্র দেওয়ার পর প্রথম চালান আজ (গতকাল) ভারতে রপ্তানি হয়েছে।’
আখাউড়া স্থলবন্দরের মাছ রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. ফারুক মিয়া জানান, বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মতো ইলিশ আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে যায়। প্রথমদিন সাত টনের বেশি মাছ রপ্তানি হয়েছে। এখন থেকে প্রতিদিনই মাছ যাবে।
সাধারণত প্রতিবছর দুর্গাপূজার সময় ইলিশের ওপর থেকে রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে বাংলাদেশ, বিশেষ করে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জন্য। অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পরিচালনায় আসার পর এবার ভারতে ইলিশ রপ্তানির বিষয়টি ব্যাপক আলোচনায় রয়েছে।
দুর্গাপূজায় ভারতের ব্যবসায়ীদের ইলিশ আমদানির অনুরোধ থাকলেও বাংলাদেশ সরকার প্রথমে এ বছর ইলিশ দেবে না বলে জানিয়েছিল। বলা হয়েছিল, দেশের বাজারে পর্যাপ্ত ইলিশের সরবরাহ নিশ্চিত করতেই রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছেÑ যেন দেশের মানুষের কাছে ইলিশ আরও সহজলভ্য হয়।
কিন্তু এমন সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে দেড় মাসের মাথায় ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেয় অন্তর্বর্তী সরকার। এ সিদ্ধান্তের পর রপ্তানি বন্ধ করতে হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী। তবে সব আলোচনার বাধা পেরিয়ে প্রতিবেশী দেশটিতে শুরু হয়েছে ইলিশ রপ্তানি।