প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:২৫ পিএম
আপডেট : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:৫৮ পিএম
সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের এনবিআর কার্যালয়ে ই-রিটার্ন সার্ভিস সেন্টারের উদ্বোধন করেন চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান ও বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কো-অপারেশন বিভাগের প্রধান মিশেল ক্রেজা। প্রবা ফটো
অনলাইনে রিটার্ন দাখিলে ব্যক্তি-শ্রেণির আয়কর দাতাদের সহায়তার জন্য সার্ভিস সেন্টার খুলল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সোমবার আগারগাঁওয়ের এনবিআর কার্যালয়ে এ সেন্টার উদ্বোধন করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান ও বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কো-অপারেশন বিভাগের প্রধান মিশেল ক্রেজা।
নতুন এ সার্ভিস সেন্টারটি ই-রিটার্ন সিস্টেম ব্যবহার করে
করদাতাদের রিটার্ন দাখিল ও কর পরিপালন সহজ করতে সহায়তা প্রদান করবে। ইউরোপীয়
ইউনিয়নের পাবলিক ফিন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রামের সহায়তায় এ সার্ভিস
সেন্টারটি পরিচালিত হচ্ছে।
সার্ভিস সেন্টারটিতে সব কর্মদিবসে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ০৯ ৬৪৩ ৭১ ৭১ ৭১ নম্বরে ফোন করে করদাতারা ই-রিটার্ন সংক্রান্ত প্রশ্নের তাৎক্ষণিক সমাধান পাবেন। এ ছাড়া www.etaxnbr.gov.bd-এর eTax Service অপশন থেকে করদাতারা ই-রিটার্ন সংক্রান্ত যেকোনো সমস্যা লিখিতভাবে জানাতে পারবেন ও সমাধান পাবেন বলে জানিয়েছে এনবিআর।
অনুষ্ঠানে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন, ‘সরকারি
কর্মচারী বিশেষ করে আমলারা গত ১৫-২০ বছরে অবৈধভাবে বিপুল বিত্তবৈভবের মালিক
হয়েছেন। এ রকম শত শত লোক রয়েছে। আগের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে এনবিআর ও
সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল (সিআইসি) এদের বিষয়ে ব্যাপক কাজ করেছিল। এবারও আমরা সে
বিষয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ।’
এক প্রশ্নের জবাবে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘এনবিআর হাতগুটিয়ে নেই। সময় তো সবেমাত্র শুরু।’
তিনি বলেন, ‘গ্রুপ অব কোম্পানির কর ফাঁকির তদন্তের কাজ
শুরু হয়েছে। এগুলো বৃহৎ করদাতা ইউনিট তদন্ত করছে। সিআইসির সক্ষমতা অনুযায়ী করা
হচ্ছে এবং পর্যায়ক্রমে এগুলো শেষ করা হবে। সব কাজ একসঙ্গে শুরু করলে এর কোনোটাই
শেষ করা যাবে না। যেসব করদাতা সম্পর্কে গণমাধ্যমে আলোচনা আছে বা গোয়েন্দাদের
মাধ্যমে আমরা তথ্য পাচ্ছি তদন্তের ক্ষেত্রে আমরা সেগুলো অগ্রাধিকার দিচ্ছি। করপোরেট
করদাতাদের ক্ষেত্রে আমরা একই পদ্ধতি অনুসরণ করছি।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে আবদুর রহমান বলেন, ‘কালো টাকা সাদা করার আইন বাতিল করা হয়েছে। এই আইন বাতিল করার আগে কোনো ব্যক্তি কালো টাকা সাদা করার সুযোগ নিয়ে থাকলে সেটা আইনের বলেই নিয়েছে সেটা বৈধ। তার কোনো সমস্যা নেই। যতক্ষণ পর্যন্ত আইনটি বহাল ছিল ততক্ষণ পর্যন্ত সেটা লিগ্যাল।’
তিনি বলেন, ‘সরকারি কর্মকর্তারা যখন আয়কর রিটার্ন দেয়
সেগুলো অডিট করা হয়, তারপর সেগুলো অ্যাসেসমেন্ট করা করা হচ্ছে। সেন্ট্রাল
ইন্টেলিজেন্স এটা নিয়ে কাজ করে। সক্ষমতা অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে করা হয়।’
রাজস্ব বোর্ডের মাঠ পর্যায় থেকে ট্যাক্স অডিট ফাইল পাঠানো
নিষেধ করা হয়েছেÑএটা কেন, সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে এনবিআর চেয়ারম্যান
বলেন, ‘আমাদের একটা ইমেজ সংকট রয়েছে, ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ফাইলগুলো ঠিক করি, এগুলো
সঠিক হয় না। এ বিষয়ে করদাতাদের কাছ থেকে অভিযোগ আমরা পেয়ে থাকি। এ জন্য আমরা
ডিজিটাল পদ্ধতিতে অডিট সিলেকশন করতে চাই। যাতে করদাতাদের মনে সন্দেহ তৈরি না হয়।
সে লক্ষ্যে আমরা কাজ শুরু করেছি।’
তিনি বলেন, ‘যারা কর ফাঁকি দিয়েছে তাদের বের করব এবং
আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।’
আয়করের করমুক্ত সীমা বৃদ্ধি করলে করদাতারা বাইরে পড়ে যায় উল্লেখ করে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘আর্থিক সক্ষমতা, মূল্যস্ফীতি ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা বিবেচনা করে করমুক্ত আয়সীমা নির্ধারণ করা হয়। যাতে যাদের সক্ষমতা কম, তারা কম কর দেবেন। আর যাদের সক্ষমতা বেশি তারা বেশি কর দেবেন। সবাই জাতি গঠনে ভূমিকা রাখবেন।’
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘মামলা জটিলতার কারণে বিপুল
পরিমাণ রাজস্ব আটকে আছে। এই মামলা জটিলতা দূর করতে কাজ করা হচ্ছে। হাইকোর্টে ভিন্ন
বেঞ্চ হয়েছে, বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (এডিআর) কাজ করছে। উভয় পক্ষের জেতার মানসিকতার কারণে
মানুষ এডিআরে যেতে চাচ্ছে না। রাজস্ব বিরোধ মীমাংসার ক্ষেত্রে এডিআর ভালো ক্ষেত্র।
কিন্তু উভয় পক্ষের আমারটা চাই মানসিকতার কারণে এটা
কার্যকর হচ্ছে।’