প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৮ আগস্ট ২০২৪ ২২:০২ পিএম
আপডেট : ১৮ আগস্ট ২০২৪ ২২:০৫ পিএম
দেশের ব্যাংক খাতে চলমান অস্থিরতা নিরসন এবং অর্থপাচারসহ যাবতীয় দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি টেকসই সংস্কার লক্ষ্যে গঠিত হতে যাচ্ছে ‘ব্যাংকিং কমিশন’। এ বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
রবিবার (১৮ আগষ্ট) দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুসের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে ব্যাংকিং কমিশন গঠনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, ব্যাংকিং খাতের বর্তমান অবস্থা নিয়ে বৈঠকে বিশদ আলোচনা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে এ খাতের সংস্কারের বিষয়টি চলে আসে। তাই ব্যাংকিং খাতে টেকসই সংস্কার করার জন্য একটি ব্যাংকিং কমিশন গঠন করে দ্রুত কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে এমন সিদ্ধান্ত হয়।
বেশ কয়েক বছর ধরেই ব্যাংক খাতের বিশ্লেষকরা বলছিলেন, দেশের ব্যাংকগুলোতে দীর্ঘদিন জমে থাকা সমস্যা জটিল আকার ধারণ করেছে। আর্থিক খাতের বিদ্যমান অস্থিতিশীল অবস্থা স্বল্প মেয়াদে সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে গ্রাহকদের আস্থা ফিরে আসে। একই সঙ্গে স্থায়ীভাবে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে ব্যাংক খাতের সংস্কার করা প্রয়োজন।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ব্যাংক খাতে চলমান অস্থিরতা এক দিনে তৈরি হয়নি। অনেক দিন ধরেই এই সমস্যা জিইয়ে রাখা হয়েছিল। ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের সমস্যা এবং ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোতে বড় সমস্যাগুলো অনেক বছর ধরেই আছে। এটির সমাধানে তেমন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ফলে এখন পরিস্থিতি আরো জটিল আকার ধারণ করেছে।
এদিকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের বৈঠকে দেশের বিদ্যমান মূল্যস্ফীতির বিষয়টিও উঠে এসেছে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, চাহিদা ও যোগানের যথাযথ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দেশের বিদ্যমান মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনতে হবে। এজন্য মুদ্রানীতিকে সংকোচনমূলক অবস্থায় ধরে রাখতে হবে এবং একইসঙ্গে সরবরাহ পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটাতে হবে। এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ শুরু হয়েছে। তবে মূল্যস্ফীতির সুফল পেতে সবাইকে একটু ধৈর্য্য ধরতে হবে।
এছাড়াও বৈঠকে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে তারল্য বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আন্তঃব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের ক্ষেত্রে বিদ্যমান ব্যান্ড ১ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২ দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়েছে। অতি দ্রুতই আন্তঃব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে তারল্য ফিরে আসবে এবং বিনিময়ের পরিমাণও দ্রুত বৃদ্ধি পাবে বলেও বৈঠকে আশা প্রকাশ করা হয়েছে।
এছাড়া আর্থিক খাতের সার্বিক পরিস্থিতি এবং সংস্কার বিষয়ে একটি রূপকল্প তৈরি করা হবে যা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হওয়ার ১০০ দিনের মধ্যে প্রকাশ করা হবে।