সাক্ষাৎকার
এম শামসুল আরেফিন
প্রকাশ : ৩১ জুলাই ২০২৪ ১২:২৪ পিএম
আপডেট : ৩১ জুলাই ২০২৪ ১৬:৪৬ পিএম
এম শামসুল আরেফিন। প্রবা ফটো
নিয়ন্ত্রক সংস্থার নিয়ম ও নির্দেশনাবলি মেনে গ্রাহকদের গোপনীয়তা বজায় রাখায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানিয়েছেন ন্যাশনাল ক্রেডিট অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক পিএলসির এমডি ও সিইও এম শামসুল আরেফিন। সম্প্রতি প্রতিদিনের বাংলাদেশের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে অফশোর ব্যাংকিং এবং গ্রাহকের গোপনীয়তা নিয়ে বিস্তারিত জানান তিনি
প্রশ্ন : দেশে অনেক বছর ধরেই সীমিত পরিসরে অফশোর ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে সরকার অফশোর ব্যাংকিং কার্যক্রম প্রসারিত করার জন্য কাজ করেছে। আপনারা কী রকম সাড়া পাচ্ছেন?
উত্তর : হ্যাঁ, আমরা বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের কাছ থেকেই ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছি। আকর্ষণীয় সুদের হার, ট্যাক্স সুবিধা এবং বিভিন্ন অপারেশনাল সুবিধার কারণে আমরা অফশোর ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার আমানত প্রাপ্তির আশা করছি।
প্রশ্ন : এ বছর মার্চ মাসে জাতীয় সংসদে গৃহীত অফশোর ব্যাংকিং আইন কি অন্য দেশের গ্রাহকরা অফশোর সুবিধা গ্রহণ করতে সক্ষম হবে?
উত্তর : আপনি খেয়াল করলে দেখবেন যে, অফশোর ব্যাংকিং আইন-২০২৪ বেশ কিছু আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য নিয়ে প্রণীত হয়েছে; এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো আমানতের ওপর আকর্ষণীয় সুদের হার, করের বোঝা নেই, সুদসহ জমাকৃত অর্থ বিদেশে স্থানান্তর, বিভিন্ন স্থানীয় বিনিয়োগের জন্য তহবিলের ব্যবহার এবং প্রয়োজনীয় অর্থ প্রদান, হিসাব রক্ষণাবেক্ষণ সম্পূর্ণ চার্জমুক্ত; যা বিদেশে বসবাসকারী সবার জন্য প্রযোজ্য।
প্রশ্ন : নতুন আইনে আমানত ও ঋণ করমুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু আর্থিক গোপনীয়তা রক্ষার ব্যাপারে এমন কী আছে যা আমানতকারীরা পছন্দ করেন?
উত্তর : আপনি জানেন যে, আমানতকারীদের আমানতের গোপনীয়তা রক্ষা করা প্রতিটি ব্যাংকের একটি মৌলিক বাধ্যবাধকতা, তাই আমরা নিয়ন্ত্রক সংস্থার নিয়ম ও নির্দেশনাবলি মেনে গ্রাহকদের গোপনীয়তা বজায় রাখায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
প্রশ্ন : প্রবাসীদের মধ্যে দেশের ব্যাংক খাত নিয়ে আস্থার সংকট আছে। এ সংকট কাটাতে কী ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছেন?
উত্তর : প্রবাসে থাকলেও আমাদের প্রবাসীরা বিভিন্ন মিডিয়ার কল্যাণে দেশের ব্যাংক খাত সম্পর্কে সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল। আমি বিশ্বাস করি, তারা জানেন যে, সাধারণভাবে দেশের ব্যাংক খাত নিয়ে আস্থার সংকট আছে কথাটা সঠিক নয়। বিভিন্ন মিডিয়ার খবরের কারণে তারা হয়তো জানেন কিছু কিছু ব্যাংকের আর্থিক অবস্থা যেমনটা হওয়ার কথা, তেমনটা নেই। কিন্তু অনেক ব্যাংকেরই আর্থিক বুনিয়াদ অনেক মজবুত।
একজন আমানতকারীর জন্য কোন ব্যাংকের কী অবস্থা সেটা জানতে হলে ঐ ব্যাংকের ওয়েবপেজে গিয়ে বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদনগুলো দেখলে যেমন ধারণা পাওয়া যাবে, তেমনি কোনো ব্যাংকের অবস্থা জানার জন্য ঐ ব্যাংকের ক্রেডিট রেটিং রিপোর্ট দেখলে সেটা ব্যাংকের বর্তমান (কারেন্ট টাইম আগামী ৬ মাস পর্যন্ত) এবং অদূর ভবিষ্যৎ (এক বছর পর্যন্ত) জানা যায়।
এখন কিন্তু সবাই সচেতন, তাই তারা তাদের কষ্টার্জিত অর্থ কোন ব্যাংকে রাখলে নিরাপদ থাকবে সেটা বিচার করে। এখানে অধিকাংশ মানুষের কাছে অনেক বেশি লাভের চেয়েও অর্থের নিরাপত্তা অনেক বড় বিবেচ্য বিষয়। আরও কিছু বিষয় জানা দরকার, তা হলোÑ ব্যাংকের ক্যাপিটাল এডিকোসি রেশিও যা ১২.৫% বা এর ওপরে থাকতে হবে, অ্যাসেট কোয়ালিটি বা ঋণমান (যে ব্যাংকের নন-পারফর্মিং লোন যত কম তার অ্যাসেট কোয়ালিটি তত ভালো) এবং করপোরেট গর্ভন্যান্স প্র্যাকটিস যেটা দিয়ে সাধারণভাবে ঐ ব্যাংক নিয়ম-কানুন মেনে চলার বিষয়ে কতটা আন্তরিকÑ এটাও হয়তো বিবেচনা করা যাবে। প্রসঙ্গত, আমাদের ব্যাংক সম্পর্কে কিছু কথা বলতে চাই। আমাদের ব্যাংক ৩১ বছরের একটি ব্যাংক, গ্রাহদের আস্থার কারণেই আমাদের ডিপোজিটের ভালো প্রবৃদ্ধি আছে।