প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১১ জুলাই ২০২৪ ২১:০৭ পিএম
আপডেট : ১১ জুলাই ২০২৪ ২২:২২ পিএম
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আলোচিত সদস্য মতিউর রহমান।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আলোচিত সাবেক সদস্য মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে আরও স্থাবর ও অস্থাবর জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এর মধ্যে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে থাকা দুই হাজার ২১২ দশমিক ৩৫ শতাংশ স্থাবর সম্পদ সম্পদ বিক্রি চেষ্টার প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন। এ ছাড়া তাদের ১১৬টি ব্যাংক হিসাবের ১৩ কোটি ৪৪ লাখ ৩৬ হাজার ৪৭১ টাকা এবং ২৩টি বিও (শেয়ার ব্যবসার বেনিফিশিয়ারি অ্যাকাউন্ট) হিসাবে থাকা অস্থাবর সম্পদ স্থানান্তর চেষ্টার প্রমাণ পেয়েছে দুদক। এ পরিপ্রেক্ষিতে দুদকের করা আবেদনে মতিউর ও তার পরিবারের এসব স্থাবর ও স্থাবর সম্পদ জব্দের আদেশ দেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) দুদকের উপপরিচালক আনোয়ার হোসেনের আবেদনে আদেশটি দেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন।
জব্দের আদেশ দেওয়া মতিউর ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে স্থাবর সম্পদের মধ্যে আছে ঢাকার সাভারে ১৪ দশমিক ৩ শতাংশ, ময়মনসিংহের ভালুকার ৯৫৮ শতাংশ, গাজীপুরে ৮৭৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ, নরসিংদীর শিবপুরের ১৯৮ দশমিক ১ শতাংশ, নাটোরের সিংড়ার ১৬৬ শতাংশ জমি এবং মিরপুরে চারটি ফ্ল্যাট রয়েছে।
অস্থাবর সম্পদের মধ্যে আছে বিভিন্ন ব্যাংকের ১১৬টি হিসাবে রক্ষিত ১৩ কোটি ৪৪ লাখ ৩৬ হাজার ৪৭১ টাকা এবং ২৩টি বিও হিসাব (শেয়ার ব্যবসার বেনিফিশিয়ারি অ্যাকাউন্ট)।
দুদকের কৌঁসুলি (পিপি) মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর বলেন, মতিউর রহমান, তার প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ লাকি, মেয়ে ফারজানা রহমান ঈপ্সিতা ও ছেলে আহমেদ তৌফিকুর রহমান অর্ণব এবং দ্বিতীয় স্ত্রী শাম্মী আক্তার শিউলির মালিকানায় এসব সম্পদ রয়েছে।
এর আগে গত ২৪ জুন মতিউর রহমান এবং তার স্ত্রী ও ছেলের দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন একই আদালত। পরে ৪ জুলাই মতিউর ও তার স্ত্রী-সন্তানদের নামে থাকা আরও ৮৬৬ শতাংশ জমি ও ঢাকার চারটি ফ্ল্যাট জব্দের আদেশ দেন আদালত।
এবার ঈদুল আজহায় একটি খামার থেকে তার দ্বিতীয় সংসারের ছেলে মুশফিকুর রহমান ওরফে ইফাত ‘উচ্চ মূল্যের’ গবাধিপশু কিনে আলোচনার জন্ম দেন। এরপর একে-একে গণমাধ্যমে আসতে থাকে মতিউরের অঢেল সম্পদের ফিরিস্তি।
মতিউরের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তার অবৈধ সম্পদের অভিযোগ তদন্ত করতে ২৩ জুন দুদকের উপপরিচালক আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন হয়েছে।
আদালতে দুদকের আবেদনে বলা হয়েছে, মতিউর রহমান ও তার স্ত্রী-সন্তানদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের ব্যাপক অভিযোগ পাওয়ার পর দুদক অনুসন্ধান শুরু করে এসব সম্পদের সন্ধান পায়। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে– মতিউর রহমান এবং তার পরিবারের লোকজন এসব সম্পদ বিভিন্ন স্থানে স্থানান্তর করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। এমনকি তাদের সম্পদ বিক্রি এবং ব্যাংক হিসাবে টাকা অন্যত্র স্থানান্তরের সম্ভাবনা রয়েছে। মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত সম্পদ জব্দের নির্দেশ প্রয়োজন।
দুদকের কৌঁসুলি মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর জানান, দ্বিতীয় দফায় মতিউর ও তার প্রথম স্ত্রীর ছেলে আহমেদ তৌফিকুর রহমান, প্রথম স্ত্রীর মেয়ে ফারজানা রহমান ঈশিতা এবং দ্বিতীয় স্ত্রী শাম্মী আক্তারের নামে থাকা দুই হাজার ৩৬৫ শতক জমি জব্দের আবেদন করা হয়। পাশাপাশি প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজের নামে থাকা মিরপুরের চারটি অ্যাপার্টমেন্ট জব্দের আবেদন করা হয়। আদালত সেই আবেদন গ্রহণ করেছেন।