আরফাতুন নাবিলা
প্রকাশ : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৫:৪৮ পিএম
আপডেট : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৬:৫১ পিএম
বইমেলায় কেন্দ্রবিন্দুর স্টলে স্যানিটারি ন্যাপকিন বিতরণ। প্রবা ফটো
বাঙালির প্রাণের উৎসব বইমেলা। লেখক-পাঠক-প্রকাশকের মিলনমেলাও বলা হয় একে। নতুন বইয়ের উদ্বোধন, লেখকদের অটোগ্রাফ, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা, শিশুদের উচ্ছ্বাস—সব মিলিয়ে এক জমজমাট দৃশ্যের দেখা মেলে এই বইমেলায়।
সব ছাপিয়ে এবারের মেলায় নজর কেড়েছে ব্যতিক্রমী একটি উদ্যোগ। মুক্তমঞ্চের পূর্ব পাশে ৫৭৩ নম্বর স্টল। প্রকাশনীর নাম ‘কেন্দ্রবিন্দু’। তাদের স্টলের সামনে যেতেই দেখা গেল দুটি ব্যানার। একটিতে লেখা ‘বইমেলায় কেন্দ্রবিন্দুর স্টলে ফ্রী স্যানিটারি প্যাডস থাকবে সকল বোনদের জন্য। আপনি বই কিনুন বা না কিনুন, ইমার্জেন্সিতে স্টলে চাইলেই হবে।’
অন্যটিতে লেখা ‘প্রিয় বোন, ইমার্জেন্সি হতেই পারে। প্রয়োজনে সংকোচ না করে যোগাযোগ করুন আমাদের স্টলে।’ সেখানে যোগাযোগের জন্য তাদের ফোন নম্বরও দেওয়া আছে, (০১৭০১০৮২০২০)। মেলায় ঢুকে এই নম্বরে যোগাযোগ করলে অথবা সরাসরি স্টলে গেলেই বিনা মূল্যে এই ন্যাপকিন পাওয়া যাবে।
নারীদের সুরক্ষার জন্য স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহারের সুযোগ করে দিয়েছে কেন্দ্রবিন্দু। বইমেলায় এমন উদ্যোগ এবারই প্রথম। এ সুযোগ পেতে প্রকাশনী কর্তৃপক্ষের কোনো শর্ত নেই। বরং নারীরা যেন নিঃসংকোচে এগিয়ে আসতে পারেন, সেজন্য তারা সর্বদা সচেতন।
এই ভিন্নধর্মী উদ্যোগের বিষয়ে কেন্দ্রবিন্দুর প্রতিষ্ঠাতা ওয়াহিদ তুষার বলেন, ‘পিরিয়ড বিষয়টা আমাদের সমাজে এখনও একটা ট্যাবু। কিন্তু বিষয়টি খুবই স্বাভাবিক ও প্রাকৃতিক। যেহেতু এটা নির্দিষ্ট দিনেই হিসাব করে হয় না, তাই অনেকেরই প্রিপারেশন থাকে না। আরেকটা বড় সংকট হচ্ছে মেলার মাঠের এক কিলোমিটারের মধ্যে কোনো ফার্মেসি নেই। তাই একজন বোন চাইলেও তখন কোনো সলিউশন পান না। তাই আমরা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি। যাতে করে আমাদের বোনেরা ইমার্জেন্সিতে বিপাকে না পড়েন।’
কেমন সাড়া পাচ্ছেন—এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘মেলার প্রথম দিন বিষয়টি সবারই বেশ নজর কেড়েছে। যেহেতু প্রচারণা সেভাবে ছিল না, তাই অনেকেই সেভাবে জানতেন না। তবে মেলা ঘুরে বেড়ানোর পর থেকে দর্শনার্থীরা এটা নিয়ে সম্মুখেই আলোচনা করেছেন, উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন। মেলার দ্বিতীয় দিন থেকে আমরা বুঝতে পেরেছি, আমাদের এই উদ্যোগ নারীদের জন্য কতটা সহযোগিতাপূর্ণ ছিল। কারণ, আমাদের কাছে অনেকেই এসে স্যানিটারি ন্যাপকিন নিয়ে গেছেন। তাদের সাহায্য করতে পেরেছি বলে আমরা পুরো কেন্দ্রবিন্দু টিম আনন্দিত। আশা করি, মেলাতে এসে একজন বোনকেও ইমার্জেন্সিতে বিপাকে পড়তে হবে না এবং মেলা শেষ পর্যন্ত না ঘুরে-ফিরেও যেতে হবে না।’