প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১০ নভেম্বর ২০২২ ১৮:৪৭ পিএম
আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২২ ২০:৪৮ পিএম
হুমায়ূন আহমেদের ৭৪ তম জন্মবার্ষিকীতে আলোচনা অনুষ্ঠান। ছবি : প্রবা
কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ সত্তরের দশকে ‘নন্দিত নরকে’, ‘শঙ্খনীল কারাগার’ ও ‘মধ্যাহ্ন’ উপন্যাসের মধ্য দিয়ে বাঙালি মধ্যবিত্তের আটপৌরে জীবনগাঁথা তুলে এনেছেন বলে মন্তব্য করেছেন নাট্যকার ও তথ্যচিত্র নির্মাতা শাকুর মজিদ। তিনি বলেন, ‘এ সব উপনাস্যের মাধ্যমে বাঙালিদের সাহিত্যরসে উম্মুখ করে তুলেছিলেন নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ।’
কথা সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ, চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক হুমায়ূন আহমেদের ৭৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) দুপুরে বাংলা একাডেমির একক বক্তৃতানুষ্ঠানে তিনি এ সব কথা বলেন।
‘হুমায়ূন আহমেদ : মানুষ ও লেখক’ শিরোনামের ওই একক বক্তৃতায় নাট্যকার শাকুর মজিদ বলেন, ‘এইসব দিনরাত্রি’, ‘অয়োময়’ ও ‘নক্ষত্রের রাত’ এর মতো নাটকগুলোর মাধ্যমে হুমায়ূন আহমেদ মধ্যবিত্ত দর্শকের কাছে দারুণ জনপ্রিয় হয়ে উঠলেন। মধ্যবিত্ত পরিবারের সংকট, প্রতিদিনের জীবনকে তুলে এনে তিনি বলতে চাইলেন, অনেক কষ্টের ভেতর দিয়ে গেলেও স্রেফ পারিবারিক বন্ধনে মানুষ কিভাবে ভালো থাকে। এভাবে হুমায়ূন আহমেদ হয়ে উঠেন মধ্যবিত্তের স্বপ্নপুরুষ।’
হুমায়ূন আহমেদের সাহিত্য জীবনে বাংলা কথা সাহিত্যের আরেক প্রবাদ পুরুষ আহমদ ছফার অবদান রয়েছে বলে মনে করেন শাকুর মজিদ।
হুমায়ূন আহমেদের সাহিত্য জীবন নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি হুমায়ূন আহমেদের সাহিত্য জীবনকে লাল ও সবুজ রঙে ভাগ করেছি। সবুজ রঙে রেখেছি, ২০০৩ সালের আগে তিনি যেসব গল্প-উপন্যাস ও নাটক লিখেছেন। ওই সময়ের পর তিনি বেশ কিছু দিন সংকটকাল অতিবাহিত করেন। ব্যক্তি জীবনের ওই সংকটকালে তিনি ছবি আঁকতে শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি টিভি নাটক লেখায় মন দেন। তবে তার আলোচিত লেখা বলতে যা বুঝি, তা ওই সময়ে অনেকটাই কমে যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘হুমায়ূন আহমদ শুধু একজন লেখকই নন, তিনি একাধারে শিক্ষাবিদ, চলচিত্র পরিচালক ও প্রযাজক, গীতিকার, নাট্যকার এবং সর্বোপরি একজন স্বপ্নবান মানুষ। তিনি জীবনের বৈচিত্র্যকে সাহিত্যে সার্থক রূপ দিয়েছেন।’
অনুষ্ঠানের সভাপতি বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেন, ‘হুমায়ূন আহমেদের বৈচিত্র্যময় সাহিত্যকর্মে আমরা মানব মঙ্গলের সুর শুনতে পাই। তিনি তার গল্প ও উপন্যাসে এ দেশের মানুষের অসাধারণ মুখছবি অঙ্কন করেছেন। যা কখনও মলিন হওয়ার নয়।’
১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুরে জন্মগ্রহণ করেন হুমায়ূন আহমেদ। তার ডাকনাম ছিল কাজল। বাবা পুলিশ কর্মকর্তা ফয়জুর রহমান আহমেদ ও গৃহিণী মা আয়েশা ফয়েজের প্রথম সন্তান ছিলেন তিনি। নিউইয়র্কে ক্যান্সারের চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০১২ সালের ১০ নভেম্বর না ফেরার দেশে পাড়ি জমান হুমায়ূন আহমেদ।