প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৫ নভেম্বর ২০২৩ ০০:২২ এএম
আপডেট : ১৫ নভেম্বর ২০২৩ ১০:৫৯ এএম
কাজী নজরুল ইসলামের কালজয়ী সৃষ্টি ‘কারার ঐ লৌহ কপাট’ গানের সুর বিকৃত করা হয়েছে দাবি করে ধিক্কার ও নিন্দা জানিয়েছে সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ছায়ানট।
মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমদ লিসা স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে এ নিন্দা জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এ উপমহাদেশে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সময়, ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে কাজী নজরুল ইসলাম স্বদেশপ্রেমের পটভূমিতে ভাঙার গান শিরোনামে “কারার ঐ লৌহ কপাট” গানটি রচনা করেন। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে তো বটেই, ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে ভারত ভাগের পর পূর্ব বাংলার সাংস্কৃতিক জাগরণ এবং ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে লাখো কোটি বাঙালিকে সংগ্রামী চেতনায় উদ্বুদ্ধ করেছে বিদ্রোহী কবির এ গান। সম্প্রতি ভারতীয় একটি বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রে সম্পূর্ণ ভিন্ন সুর এবং আঙ্গিকে কালজয়ী গানটি পরিবেশিত হয়েছে। আমরা মনে করি এ উদ্যোগ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের চরম অবমাননা, স্রষ্টার অমর্যাদা এবং সংস্কৃতিবিনাশী কাজ।’
এতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের জাতীয় কবি নজরুল রচিত পরাধীনতায় জর্জর মানুষকে জাগিয়ে তোলার এ গান বাঙালির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ; অঙ্গাঙ্গি মিশে আছে আমাদের মর্মে, আত্মপরিচয়ের বিশ্বাসে। যে সুর ও বাণীর এমন ঐতিহাসিক পটভূমি, গভীর তাৎপর্য তার ন্যূনতম বিচ্যুতি বাঙালি সইবে না, মানবে না কোনো বাণিজ্যিক চটুল বিকৃতি। কাজী নজরুল ইসলামের সব সৃষ্টিই বাঙালি তথা বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ। সেই স্রষ্টার কালোত্তীর্ণ কর্ম পণ্য করে কোনো ব্যক্তিবিশেষ কিংবা গোষ্ঠীর হীন বাণিজ্য করবার অপপ্রয়াস আমাদের কাছে অগ্রহণযোগ্য। বাংলাদেশের স্বাধীনতাপূর্বকালে পাকিস্তানি শাসকরা কাজী নজরুলকে খণ্ডিতভাবে উপস্থাপনের অপপ্রয়াসে লিপ্ত ছিল, কিন্তু মুক্তবুদ্ধির অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী বাঙালি প্রতিবাদে মুখর হয়ে সব ষড়যন্ত্র রুখে দিয়েছে। বিকৃত-সংস্কৃতির আগ্রাসনে আবারও সেই সম্মিলিত প্রতিবাদ-ঝড় তোলার সময় সমাগত।’
অমর গানটির প্রকৃত সুর-আবেদন-আবেগে আমূল পরিবর্তন আমাদের সংস্কৃতি ও মননে অপূরণীয় ক্ষতের সৃষ্টি করেছে উল্লেখ করে ছায়ানট এ ধরনের ধৃষ্টতা ও সাংস্কৃতিকতাণ্ডবের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিকৃত গানটির প্রচার অবিলম্বে বন্ধ করে, প্রয়োজনে অবিকৃত গানের সংযোজন ও প্রকাশের দাবি জানিয়েছে।