প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০১ জুন ২০২৩ ২২:২০ পিএম
আপডেট : ০১ জুন ২০২৩ ২৩:০৫ পিএম
২০২৩-২৪ অর্থবছরে সংস্কৃতি খাতে প্রস্তাবিত বাজেট ধরা হয়েছে ৬৯৯ কোটি টাকা, যা গত ২০২২-২৩ অর্থবছরের তুলনায় ৩৭ কোটি টাকা বেশি।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জাতীয় সংসদে আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেছেন। বৃহস্পতিবার (১ জুন) বেলা ৩টায় জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রস্তাবিত বাজেট পেশ শুরু করেন তিনি।
২০২২-২৩ অর্থবছরে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত বাজেট ধরা হয়েছিল ৬৩৭ কোটি টাকা; যা পরে সংশোধিত হয়ে দাঁড়ায় ৬৬২ কোটি টাকায়। ২০২১-২২ অর্থবছরে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত বাজেট ছিল ৫৮৭ কোটি টাকা; যা সংশোধিত হয়ে দাঁড়ায় ৫৭৯ কোটি টাকা। শতকরা হিসাবে এবারের বাজেটের শূন্য দশমিক শূন্য ৯১ শতাংশ বরাদ্দ করা হয়েছে সংস্কৃতি খাতে।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ’বাঙালি সংস্কৃতির অসাম্প্রদায়িক ঐতিহ্য সংরক্ষণ এবং ভাষা, সাহিত্য, শিল্প, সংগীত, নাটক ইত্যাদির বিকাশে সরকার ধারাবাহিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। দেশজ সংস্কৃতি ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের বিকাশ, মুক্তিযুদ্ধ ও সমকালীন শিল্প-সাহিত্যের গবেষণা, প্রদর্শন, প্রকাশনা, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন চিহ্নিতকরণ, খনন, সংস্কার, সংরক্ষণ ও প্রদর্শন, সৃজনশীল সৃষ্টিকর্মের কপিরাইট সংরক্ষণসহ ঐতিহাসিক ৭ মার্চ, ভাষাশহীদ দিবস এবং বাংলা নববর্ষসহ বিভিন্ন জাতীয় দিবসগুলো ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনায় উদযাপন করা হচ্ছে।’
বাজেটে অসন্তুষ্ট সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, শনিবার প্রতিবাদ সমাবেশ
নতুন অর্থবছরে সংস্কৃতি খাতের বাজেট ‘অপ্রতুল’ উল্লেখ করে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বলেন, ‘এবার সংস্কৃতি খাতে যে বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছে, তার অধিকাংশ অর্থ খরচ হবে বিভিন্ন দপ্তর-অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দিতে। আমরা সম্প্রীতির ধারা বিস্তার করে মানবিক চিন্তা-মননের যে বিস্তৃতি ঘটাতে চাই, আধুনিক-বিজ্ঞানসম্মত, সংস্কৃতিবান্ধব দেশ গঠনের কথা বলি; তা এ বাজেট দিয়ে সম্ভব নয়। আমরা দেশের ৫০০ উপজেলায় মুক্তমঞ্চ, শিল্পকলা একাডেমি ও মিলনায়তন নির্মাণের দাবি জানিয়েছিলাম, বলেছিলাম সেসব কেন্দ্রে সংস্কৃতি প্রশিক্ষণের জন্য স্থায়ী প্রশিক্ষক নিয়োগের কথা। কিন্তু বাজেট বক্তৃতায় সেসব কথা উঠে আসেনি।’
গোলাম কুদ্দুছ জানান, আগামী শনিবার বিকালে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘সংস্কৃতি খাত উপেক্ষিত’ শিরোনামে প্রতিবাদ সমাবেশ করবে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট।
সংস্কৃতির অপ্রতুল বাজেটে ক্ষোভ জানিয়ে নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার বলেন, ‘প্রতিবারই তো এক কথা বলি, বাজেট কম সংস্কৃতিতে। এবারও তা-ই হয়েছে। বেশি কিছু আর কী বলার আছে!’
প্রবীণ নাট্যব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ বলেন, ‘রাজনীতিবিদরা যদি সংস্কৃতি খাতকে সত্যি গুরুত্ব দিত, তাহলে সমাজে বিভক্তি-হানাহানি কমে যেত। কিন্তু তাদের এ নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই। আমরা প্রতিবার চিৎকার করে যাই, কিন্তু ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয় না।’
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু বলেন, ‘সংস্কৃতি বাজেটে নাটক, চিত্রকলা, গানের পাশাপাশি গবেষণা কর্মের জন্য কত টাকা বরাদ্দ করা হলো, তা কিন্তু সংস্কৃতিকর্মীরা জানতে পারে না। আমরা জানি না, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় কোন ধরনের গবেষণাগুলোকে অগ্রাধিকার দেবে। বাজেট প্রণয়নের আগে এসব বিষয় নিয়ে সংস্কৃতিকর্মীদের সঙ্গে মন্ত্রণালয় মতবিনিময় করতে পারে। কিন্তু তা করে না, আর তাই এসব খাতে বরাদ্দ হওয়া টাকাও ফেরত যায়।’