বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৭ মে ২০২৩ ২১:৩৬ পিএম
আপডেট : ২৭ মে ২০২৩ ২২:০৭ পিএম
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে সৃষ্ট প্রতিকূল পরিবেশে বসবাসরত তৃণমূল জনগোষ্ঠী এবং নদীর পাশে বসবাসরত অঞ্চলের মানুষের জীবন ও অভিজ্ঞতা নিয়ে তৈরি করা চারটি স্বল্পদৈর্ঘ্যের প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়েছে।
শনিবার (২৭ মে) বিকালে রাজধানীর ফুলার রোডে ব্রিটিশ কাউন্সিল মিলনায়তনে ‘শর্ট ফিল্মস অন ওয়াটার’ শীর্ষক এই প্রামাণ্যচিত্রগুলো প্রদর্শিত হয়।
‘বাংলাদেশ কামরি ক্লাইমেট স্টোরিজ’ প্রকল্পের আওতায় ঢাকা ডকল্যাব ও যুক্তরাজ্যের ওয়েলস ওয়ান ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের যৌথ উদ্যোগে এবং ব্রিটিশ কাউন্সিলের সহায়তায় সম্প্রতি এ প্রামাণ্যচিত্রগুলো নির্মাণ করা হয়েছে।
প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন শেষে চারটি প্রামাণ্যচিত্রের পরিচালক, প্রযোজক ও প্রামাণ্যচিত্রের চরিত্রদের পরিচয়পর্ব এবং একটি অংশগ্রহণমূলক প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। প্রদর্শনীটি সবার জন্য উন্মুক্ত ছিল।
প্রামাণ্যচিত্রগুলো হলো- বাংলাদেশ থেকে আসমা বীথি পরিচালিত ‘দপ্রুঝিরি’ ও শামসুল ইসলাম স্বপন পরিচালিত ‘লতিকা’ এবং যুক্তরাজ্যের ওয়েলস থেকে ম্যারেড রিস পরিচালিত ‘আওয়ার হোম’ এবং লিলি টাইগার টোনকিন পরিচালিত ‘শি সেলস শেলফিশ’।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম. এ. মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের প্রোগ্রামস ডিরেক্টর ডেভিড নক্স ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক মুখ্যসচিব আবুল কালাম আজাদ।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম. এ. মান্নান বলেন, পরিকল্পনামন্ত্রী এম. এ. মান্নান বলেন, ‘এই শর্ট ফিল্মগুলোর মাধ্যমে একটা বার্তা দেওয়া হচ্ছে যে- সারা বিশ্বের সঙ্গে আমরাও এ বিষয়ে চিন্তিত। কারণ আমরা একটা নরম, কোমল মাটির মধ্যে আছি। আমাদের নদী ভাঙন হয়, হাওর অঞ্চলে মানুষ ঘর বাড়ি হারায়। সবকিছু মিলিয়ে এটা সারা বিশ্বের সঙ্গে আমাদেরও সমস্যা। আমরা এটুকু বলতে পারি, সারা বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় যারা কাজ করে আমরাও তাদের সঙ্গে কাজ করছি।
তিনি বলেন, অতীতে জলবায়ুবিষয়ক বিভিন্ন সম্মেলন হয়েছে। যেসব দেশের সম্পদ অনেক বেশি, নানাভাবে তারা সঞ্চয় করেছে। কীভাবে সঞ্চয় করেছে এখানে বলার প্রসঙ্গ নয়। তারা সেসব সম্মেলনে কথা দিয়েছিল আমাদের মতো দেশগুলোকে কিছু অর্থ দেবে। সেটা ধার হিসেবে নয়, দায় হিসেবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সেটা হয়ে ওঠেনি। সেটা তাদেরকে বারবার স্মরণ করিয়ে দিতে হবে। কারণ, জলবায়ু দূষণের জন্য তারাই প্রধানত দায়ী।
ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের ডিরেক্টর প্রোগ্রামস ডেভিড নক্স বলেন, জলবায়ু পরবর্তনের ফলে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলায় সকলকে নিয়ে একজোট হয়ে কাজ করাই আমাদের লক্ষ্য। বাংলাদেশ-কামরি ক্লাইমেট স্টোরিজ ফিল্মসের মাধ্যমে এই সমস্যাগুলো আমাদের কতটা কাছাকাছি তা দেখতে ও বুঝতে পারছি, আর এ থেকে উত্তরণে কার্যকরী পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে কাজ করার আশা ব্যক্ত করছি।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমাদের বিশ্ব উত্তপ্ত হয়ে যাচ্ছে। তাই বিশ্বের সবচেয়ে বড় বড় সম্মেলন থেকে বলা হচ্ছে জলবায়ুর পরিবর্তন মোকাবেলা করতে যা যা করার দরকার তাই করো। এটা সাংস্কৃতিক কাজ করা ছাড়া মানুষকে সচেতন করা সম্ভব না, আমরা ক্লাইমেট চেঞ্জকে মোকাবেলা করতে পারবো না।
ঢাকা ডক ল্যাবের চেয়ারম্যান নাসিরুদ্দিন ইউসুফ বলেন, আমরা যখন ঢাকার বাইরে যাই, তখন বেশ খারাপ লাগে। আগে যেমন নদী ছিলো, খাল ছিলো তার অধিকাংশের অবস্থাই নাজুক। সব জায়গাগুলো অসুস্থ হয়ে রয়েছে। এসবের জন্য আমাদের রোল, সরকারের রোল আরও ভালো হওয়া উচিত ছিল। এসবের ক্ষেত্রে সতর্ক হতে জনগণের যেমন ভূমিকা দরকার তেমনি আমাদের সাংস্কৃতিক কর্মীদেরও কাজ করতে হবে। একইসঙ্গে সরকারেরও নজরদারি বাড়াতে হবে
আগামী ৫ জুন অনুষ্ঠিতব্য বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালনের অংশ হিসেবে চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে ব্রিটিশ কাউন্সিল। পরিবেশ রক্ষায় সচেতনতা সৃষ্টি ও কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণে সকলকে উৎসাহিত করতে এ আয়োজন করা হয়।