প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৩ মে ২০২৩ ১৯:৩৭ পিএম
আপডেট : ১৩ মে ২০২৩ ২০:০১ পিএম
জলপাইগুড়ির সবুজাভ প্রকৃতি ও চা বাগানের শ্রমিকের দারিদ্র্যক্লিষ্ট জীবন সমরেশ মজুমদারকে লেখার রসদ জুগিয়েছিল। পরবর্তীতে কলকাতা জীবনে থিতু হয়ে নাগরিক জীবনের চালচিত্র তিনি এঁকে গেছেন নিজস্ব ভঙ্গিমায়। গল্প বা উপন্যাসের চরিত্রগুলো কালান্তরে বাঙালি পাঠকের মনে গেঁথে গেছে নান্দনিক বাঙময়তায়। ফলে দেশকালের গণ্ডি ছাপিয়ে সমরেশ রয়ে গেছেন চিরন্তন।
শনিবার (১৩ মে) বিকালে আবিষ্কার পাবলিকেশনের আয়োজনে জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলা কথাসাহিত্যের অন্যতম দিকপাল সমরেশ মজুমদারের স্মরণসভায় এভাবেই তাকে স্মরণ করেন লেখক, কবি ও সাংবাদিকরা।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহসভাপতি হাসান হাফিজের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমীন, সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টি, বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত কবি ফারুক মাহমুদ, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম, নবযুগ প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী অশোক রায় নন্দী, ভারত বিচিত্রার সাবেক সম্পাদক নান্টু রায়সহ আরও অনেকে।
ফরিদা ইয়াসমীন বলেন, সমরেশ মজুমদারের ‘দীপাবলী’ পড়ে নিজেকে আমি জীবনযুদ্ধের জন্য তৈরি করেছি। পাঠককে তিনি তাগিদ দিয়ে গেছেন সমাজ পরিবর্তনের জন্য নিজের করণীয় সম্পর্কে।
প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, সত্তরের শেষ দিকে নকশালবাড়ি আন্দোলন সমরেশ মজুমদারের ‘কালবেলা’ ও ‘কালপুরুষ’ উপন্যাসে উঠে এসেছে রোমান্টিসিজম ও বিপ্লবের মিশেলে। বাঙালি পাঠক ‘মাধবীলতা’ ও ‘দীপাবলী’ উপন্যাসের চরিত্রগুলোতে এখনও নিজেকে খুঁজে পায়। এখানেই তো একজন নন্দিত লেখকের স্বার্থকতা।
অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সমরেশ মজুমদারের মেয়ে দোয়েল মজুমদার তার বাবার স্মৃতিচারণ করেন।
কলকাতা পাবলিশার্স গিল্ডের সভাপতি ত্রিদিব চ্যাটার্জি ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে সমরেশ মজুমদারের স্মৃতিচারণ করেন।
পশ্চিমবঙ্গের বাড়িতে অতিথিপরায়ণ সমরেশ মজুমদারের সরস কথোপকথনের স্মৃতি উঠে আসে তার কথোপকথনে। তেমনি যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী বাঙালি লেখকদের সঙ্গে কলকাতার প্রকাশকদের মিথস্ক্রিয়ার কথাও জানান তিনি।
সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টি বলেন, বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের লেখকদের মধ্যে এক ধরনের দ্বন্দ্ব রয়েছে। কলকাতার লেখকরা মনে করেন তারা যা লিখেন, তাই শ্রেষ্ঠ। আর এদেশে লেখকরা যারা কলকাতার সঙ্গে যোগাযোগ করেন তাদের নিয়ে অন্যরা ভাবে ওই লেখকরা কলকাতার তোষণ করেন। সমরেশ মজুমদার এ পক্ষ-বিপক্ষকে এক করতে চেয়েছেন। সমরেশ মজুমদার তার লেখনীর কেন্দ্রবিন্দুতে রেখেছিলেন বাংলাদেশকে।
ভারত বিচিত্রার সাবেক সম্পাদক নান্টু রায় বলেন, জলপাইগুড়িতে তার লেখালেখির শুরু হলেও তার বিকাশ ঘটেছিল কলকাতায়।
সমরেশ মজুমদারের ‘প্রথম জীবন দ্বিতীয় জীবন’ শিরোনামের গল্প থেকে পাঠ করেন কবি শামীমা চৌধুরী।