নেত্রকোণা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৩ মার্চ ২০২৩ ২১:০০ পিএম
আপডেট : ২৩ মার্চ ২০২৩ ২১:১৬ পিএম
ধামাইল গানের প্রতিযোগিতাটি বল্লভপুর গ্রামের মন্দির প্রাঙ্গণে সংগঠনটি আয়োজন করে। প্রবা ফটো
লোকসাহিত্য ও সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ জেলা নেত্রকোণা। এ জেলার নানা রকম লোকসংস্কৃতির মধ্যে অন্যতম ধামাইল গান। কিন্তু বর্তমানে এই গান বিলুপ্তপ্রায়। ধামাইল গানকে পুনরুজ্জীবিত করতে কাজ করে যাচ্ছে জেলার হাওরাঞ্চল মোহনগঞ্জ উপজেলার বল্লভপুর গ্রামের 'শ্যাম কালিয়ার বাঁশি' নামে একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন।
এরই অংশ হিসেবে গত বুধবার বল্লভপুর গ্রামের মন্দির প্রাঙ্গণে সংগঠনটি আয়োজন করে ধামাইল গান প্রতিযোগিতার। সকাল ১১টা থেকে শুরু হয়ে বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলে প্রতিযোগিতা। এতে অংশ নেয় স্থানীয় ১৪টি গানের দল। দল প্রধানদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি দলে সাতজন করে শিল্পী নৃত্য-গীতের মাধ্যমে গান পরিবেশন করেন। প্রতিযোগিতায় পরিবেশিত ধামাইল গানের বেশিরভাগই ছিল সাধক রাধারমণ দত্তের লেখা। খবর পেয়ে আশপাশ এলাকাসহ দূর-দূরান্ত থেকে গান শুনতে ছুটে আসেন শত শত নারী-পুরুষ।
প্রতিযোগিতায় বল্লভপুর গ্রামের পরমানন্দ গোপীনি দল প্রথম, লক্ষণপুর গ্রামের দল দ্বিতীয় এবং মহড়া গ্রামের দল তৃতীয় স্থান অর্জন করে। পরে বিজয়ী দলের দলপতিদের হাতে প্রথম পুরস্কার ২৪ ইঞ্চি রঙিন টেলিভিশন, দ্বিতীয় পুরস্কার সাতটি মোবাইল ফোন ও তৃতীয় পুরস্কার সাতটি দেয়াল ঘড়ি তুলে দেন অতিথিরা। এ ছাড়া অন্য ১১টি দলকেও পুরস্কৃত করা হয়।
উদ্বোধনী সভায় আয়োজক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি রণেন সরকারের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারাসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। প্রতিযোগিতায় বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অমল সরকার, পালা নাট্যকার লেখক রাখাল বিশ্বাস ও সংগীতশিল্পী এমএ মোমেন খান।
রাখাল বিশ্বাস বলেন, ’চমৎকার ও ব্যতিক্রম একটি আয়োজন ছিল ধামাইল গান প্রতিযোগিতাটি। প্রায় ৪০ বছর পর এ ধরনের একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করায় সংশ্লিষ্টদের সাধুবাদ জানাই। অন্তত ৩ হাজার মানুষের উপস্থিতি ছিল এ প্রতিযোগিতায়। এ থেকেই বোঝা যায় ধামাইল গানের আকর্ষণ ফুরিয়ে যায়নি। আশা করব, আয়োজকরা এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখবেন।’
রণেন সরকার বলেন, ’আবহমান বাংলার বিশেষ করে আমাদের হাওরাঞ্চলের লোকসংস্কৃতির অন্যতম একটি শাখা হলো ধামাইল গান। যদিও বর্তমান সময়ে এটি প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। তাই ধামাইল গানকে পুনর্জাগরণ করতেই প্রতিযোগিতা। আগামী বছর থেকে দুই দিনব্যাপী প্রতিযোগিতার আয়োজন করব।’