প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৬ জানুয়ারি ২০২৩ ১৮:২৭ পিএম
আপডেট : ১৬ জানুয়ারি ২০২৩ ১৯:০৯ পিএম
ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা। প্রবা ফটো
দেশের তৃণমূল পর্যায়ে সাংস্কৃতিক জাগরণের লক্ষ্যে কাজ করতে চায় একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। এজন্য ৩১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ‘জাগরণ সাংস্কৃতিক স্কোয়াড’-এর আত্মপ্রকাশ ঘটাতে যাচ্ছে সংগঠনটি। নির্মূল কমিটির সারা দেশের ২০০টি শাখায় এই সাংস্কৃতিক স্কোয়াড গঠন করা হবে।
সোমবার (১৬ জানুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির।
তিনি বলেন, সরকারের পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে গ্রামীণ সংস্কৃতির বিভিন্ন অভিব্যক্তি, বিভিন্ন ধরনের মেলা, যাত্রা, পালা, বাউল গান তার জৌলুস হারিয়ে ফেলেছে। জেলা-উপজেলা পর্যায়ে এসব উৎসবের ওপর নানা ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করে বাঙালি সংস্কৃতির কণ্ঠ রুদ্ধ করা হয়েছে। অন্যদিকে ধর্মান্ধ, মৌলবাদী, সাম্প্রদায়িক অপশক্তি, ওয়াজ ও জলসার নামে প্রতিনিয়ত ভিন্নমত, ভিন্নধর্ম ও ভিন্ন জীবনধারায় অনুসারী মানুষদের প্রতি বিষোদগার করছে। তাদের আক্রমণ থেকে বাঙালির ঐতিহ্য-সংস্কৃতি, মুক্তিযুদ্ধ, সংবিধান কিছুই রক্ষা পাচ্ছে না। এই অবস্থায় সামাজিকভাবে প্রতিরোধের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক সংগ্রাম অত্যন্ত জরুরি হয়ে উঠেছে। এজন্য এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ‘জাগরণ সাংস্কৃতিক স্কোয়াড’-এর আত্মপ্রকাশের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, লালনসম্রাজ্ঞী ফরিদা পারভীন, যাত্রাশিল্পী মিলন কান্তি দে, আবৃত্তিশিল্পী মো. শওকত আলী, কণ্ঠশিল্পী জান্নাত-এ ফেরদৌসী ও প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব মিন্টু সাহা।
শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী বলেন, মাদ্রাসাগুলোতে ৬০ থেকে ৭০ লাখ শিশু অধ্যয়নরত থাকলেও তাদের শিক্ষায় সংস্কৃতির বিকাশ হচ্ছে না। জাতীয় সংগীতেরও চর্চা হয় না । এ বিষয়ে সরকারকে মনোযোগ দিতে হবে।
ফরিদা পারভীন বলেন, সব ক্ষেত্রে অসংগতি দেখা যাচ্ছে। সত্য কথাটি সত্যভাবে বলতে হবে। সত্য সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরলে সমাজ প্রস্ফুটিত হয়ে উঠবে।
মিলন কান্তি দে বলেন, বঙ্গবন্ধুর সাড়ে তিন বছরের শাসনামলে কখনও যাত্রা বন্ধ ছিল না। কিন্তু এখন দলগুলোকে নিবন্ধন দেওয়া হলে কোথাও যাত্রাপালা মঞ্চায়নের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। স্বাধীনতার ৫১ বছরেও জাতীয় যাত্রামঞ্চ হয়নি আক্ষেপ করে তিনি বলেন, সাংস্কৃতিক স্কোয়াড এসব বিষয়ে কাজ করবে।
নির্মূল কমিটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আগামী ১৯ জানুয়ারি রাজধানীর বাংলা একাডেমি মিলনায়তনে ‘উগ্র মৌলবাদ, সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িকতা তামসিকতার বিরুদ্ধে মুক্তিযু্দ্ধের চেতনাদীপ্ত ধর্মনিরপেক্ষ মানবিকতার সংস্কৃতির বিকাশ ঘটুক’ শীর্ষক দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। উদ্বোধন করবেন নরওয়ের লোকসংগীত গবেষক-লেখক-আলোকচিত্র শিল্পী ওয়েরা সেথের।