× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সংস্কৃতিজনদের পরমতসহিষ্ণুতা নষ্ট করছে রাজনীতি : মামুনুর রশীদ

প্রবা প্রতিবেদন

প্রকাশ : ২৩ ডিসেম্বর ২০২২ ২০:১২ পিএম

একুশে পদকজয়ী নাট্যজন মামুনুর রশীদ। ছবি : সংগৃহীত

একুশে পদকজয়ী নাট্যজন মামুনুর রশীদ। ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে তরুণ প্রজন্মকে যারা তৈরি করবেন, সেই অগ্রজ সংস্কৃতিজনরা রাজনৈতিক কারণে বিভক্ত হয়ে পড়ায় উষ্মা প্রকাশ করেছেন একুশে পদকজয়ী নাট্যব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ।

নাট্যকার মান্নান হীরার দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকীতে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটার হলে বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদ আয়োজিত পথনাটক প্রদর্শনীতে তিনি সংস্কৃতি জগতের হালহকিতত নিয়ে নিজের হতাশা প্রকাশ করেন।

শুক্রবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে স্টুডিও থিয়েটার হলে নাট্যজন মান্নান হীরার প্রতিকৃতির সামনে মোমবাতি প্রজ্বালনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এতে পথনাটক পরিষদের সভাপতি মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে আরও যোগ দেন পথনাটক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আহমেদ গিয়াস, সহ সভাপতি অধ্যাপক রতন সিদ্দিকী, দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ শাহনেওয়াজসহ বিভিন্ন নাট্যদলের নির্দেশক ও নাট্যকর্মীরা।

আরণ্যক নাট্যদল, মুক্তমঞ্চ নাট্যদল ও উৎস নাট্যদল যথাক্রমে মান্নান হীরার তিন পথনাটক ‘মূর্খ লোকের মূর্খ কথা’, ‘বৌ’ ও ‘ইদারা’পথনাটক পরিবেশন করে।  

নব্বইয়ের দশকে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে বাংলাদেশের নাট্যকর্মীরাও একাত্ম হয়েছিলেন সর্বতোভাবে। রাজনীতির সেই উত্তাল সময়ে নাট্যকার মান্নান হীরা, ফয়েজ জহির বা মঞ্চে আলোক প্রক্ষেপণ শিল্পী ঠান্ডু রায়হানের উত্থান হয়।

সে সময়ের স্মৃতিচারণ করে মামুনুর রশীদ বলেন, ‘তখন স্বৈরাচারবিরোধী একটা প্রতিরোধ ছিল। শত্রু ছিল চিহ্নিত স্বৈরাচার। আর আমরা কিন্তু সবাই ভাই-ভাই ছিলাম। আমাদের মধ্যে প্রচুর সহনশীলতা, ঐক্য, মমত্ববোধ, শ্রদ্ধাবোধ আমরা বড় হয়েছি। খুব ছোট ছোট লোক, ছোট ছোট স্বার্থ ও নেতৃত্ব নিয়ে আমরা যদি ব্যস্ত থাকি, আমরা আর গুরু হতে পারব না, আমরাও সাধারণ পর্যায়ে নেমে যাবো।’

নাটকে নতুন প্রজন্ম তৈরি হচ্ছে না বলে যে সঙ্কটের কথা বলা হয় তার প্রেক্ষাপটে মামুনুর রশীদ বলেন, ‘আমরা বলছি গুরু পরম্পরার কথা। কিন্তু বর্তমানে তো গুরুর অভাব। গুরু তৈরি হওয়া দরকার। তবে সেই গুরু হতে গেলে আত্মত্যাগ, সহনশীলতা ও ধৈর্য্য লাগে। সেই ধৈর্যশীল মানুষের ধৈর্যগুলোকে আমাদের রাজনীতি ধ্বংস করে দিচ্ছে। এখন কোনো পরমতসহিষ্ণুতা নেই, কোনো সহনশীলতা নেই, তাহলে মানুষ কি করে তৈরি হবে? কাজেই সেই জায়গায় পৌঁছানো দরকার।’

বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদের সাবেক সভাপতি মান্নান হীরা আরণ্যকেও সক্রিয় নাট্যকর্মী ছিলেন।

মামুনুর রশীদ বলেন, মান্নান হীরা নিজেকে আরণ্যক নাট্যদলে সীমাবদ্ধ না রেখে নিজেকে ছড়িয়ে দিয়েছিল। ২৩ ডিসেম্বর মান্নান হীরার মৃত্যু দিবসে আরণ্যক নাট্যদলও মান্নান হীরা রচিত ও নির্দেশিত পথনাটক নিয়ে একটি উৎসবের পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু পরবর্তীতে সেটি যখন বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদই আয়োজন করছে, তখন মান্নান হীরা তো আরণ্যকের বৃত্ত থেকে আরও বড় হয়ে যান। আমরা সেই উৎসবে আজ অংশ নিচ্ছি।

মান্নান হীরা বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদের সভাপতি ছিলেন। ২০০৬ সালে তিনি নাটকের জন্য বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। ২০২০ সালের ২৩ ডিসেম্বর বিকেলে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৫৫ বছর।

মান্নান হীরা পথনাটক আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন আজীবন। তিনি আরণ্যক নাট্যদলের অধিকর্তা ছিলেন। মঞ্চ ও টিভির জন্য অসংখ্য নাটক লিখেছেন তিনি। তার উল্লেখযোগ্য নাটকের মধ্যে আছে ‘লাল জমিন, ‘ভাগের মানুষ, ‘ময়ূর সিংহাসন’, ‘সাদা-কালো’। ‘মূর্খ লোকের মূর্খ কথা’ মান্নান হীরা রচিত ও নির্দেশিত পথনাটক। 

পথনাটক, মঞ্চনাটকের পাশাপাশি মান্নান হীরা চলচ্চিত্রও নির্মাণ করেন। ২০১৪ সালে সরকারি অনুদানের চলচ্চিত্র ‘একাত্তরের ক্ষুদিরাম’ নির্মাণ করেন তিনি, সেটাই তার প্রথম চলচ্চিত্র। ‘গরম ভাতের গল্প’ ও ‘৭১-এর রঙপেন্সিল’ নামে দুটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রও নির্মিত হয় মান্নান হীরার হাতে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা