প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৪ নভেম্বর ২০২৪ ২২:১৯ পিএম
বটতলার নাট্যনির্দেশক ও অভিনেতা মোহাম্মদ আলী হায়দার বলেছেন, ‘থিয়েটারের সংস্কৃতিতে নাটক বন্ধ হওয়া এবং করা উভয়েই অত্যন্ত গর্হিত অপরাধ বলে গণ্য হয়। বাইরের মানুষ এটা সহজে নাও বুঝতে পারেন এবং দাবি তুলতেই পারেন, কিন্তু তাদের দাবিতে নাটক বন্ধ করে দেওয়া অত্যন্ত গর্হিত কাজ হয়েছে, যার দায় শিল্পকলা একাডেমির।’
সোমবার (৪ নভেম্বর) জাতীয় নাট্যশালার সামনে ‘বিক্ষুব্ধ থিয়েটারকর্মীগণ’ এর ব্যানারে আয়োজিত সমাবেশে লিখিত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
গত শনিবার (২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির গেটের সামনে দেশ নাটকের সদস্য এহসানুল আজিজ বাবুকে ‘আওয়ামী লীগের দোসর’ আখ্যা দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এক পর্যায়ে শিল্পকলা একামেমির মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ ‘দেশ নাটকের’ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে ‘নিত্যপুরাণ’ নাটকের প্রদর্শনী মাঝপথে বন্ধ করে দেন। তার প্রতিবাদে এই সমাবেশ আয়োজন করা হয়।
সমাবেশে নিত্যপুরাণ নাটকের নির্দেশক ও নাট্যকার মাসুম রেজা বলেন, ‘পুরো প্রক্রিয়াটি তদন্ত হওয়া দরকার। দেশ নাটকের যে সদস্যের পোস্টকে ঘিরে এই ঘটনা ঘটেছে, তিনি খুব পরিচিত লোক নন। আন্দোলনের লোকজন তাকে চেনেনও না। তাহলে এর পেছনে কারা আছেন তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।’
শিল্পকলার মহাপরিচালক যথেষ্ট আন্তরিক থেকে নাটকের প্রদর্শনী সম্পন্ন করতে চেষ্টা করেছেন বলেও জানান মাসুম রেজা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও নাট্যকার সামিনা লুৎফা বলেন, “শিল্পকলাকে সকল দায়িত্ব নিয়ে ‘ ‘নিত্যপুরাণ’ নাটকের শো করতে দিতে হবে। তারা মিলনায়তন ভাড়া দিয়েছিলেন। তাদের নাটক করতে পারেননি।”
জনসাধারণের সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে সেনাবাহিনী থাকার কারণে সাধারণ মানুষ প্রবেশ করতে পারছে না বলেও মনে করেন সামিনা লুৎফা।
অভিনেতা ও নাট্যনির্দেশক আজাদ আবুল কালাম বলেন, ‘শিল্পকলার দায়িত্বে এই নাট্যশালায় তিন দিনের একটি উৎসব করা উচিত এবং শিল্পকলাকে এর সকল ব্যয় বহন করতে হবে।’
বিক্ষোভকারীদের খুঁজে বের করে বিচারের আওতায় আনার দাবিও জানান তিনি।
নাট্য গবেষক কামালউদ্দিন কবির, সাইদুর রহমান লিপনও সমাবেশে বক্তব্য দেন।
বন্ধ হওয়া ‘নিত্যপুরাণ’ নাটকের প্রদর্শনী সাত দিনের মধ্যে ফেরত দিতে শিল্পকলা একাডেমিকে সময় বেঁধে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ থিয়েটারকর্মীরা। জাতীয় নাট্যশালার তিনটি মিলনায়তন খুলে দেওয়া, একাডেমির পরিষদে ‘আমলা নির্ভরতা’ কমানোর পাশাপাশি একাডেমি থেকে সাত দিনের মধ্যে সেনাবাহিনীকে সরিয়ে নেওয়ার দাবিও তুলেছেন তারা। জুলাই-আগস্টের গণআন্দোলনের সময় থেকে সেনাবাহিনী এখানে ক্যাম্প করে আছে।