× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আয়োজন ১ : সম্পাদকের কথা

বুকের গভীরে প্রিয় মাতৃভূমি, চেতনায় একাত্তর

মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশ : ১১ মার্চ ২০২৪ ১২:৪৬ পিএম

আপডেট : ১৯ মার্চ ২০২৪ ০০:১৫ এএম

মুস্তাফিজ শফি

মুস্তাফিজ শফি

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ডামাডোলের মধ্যেই আনুষ্ঠানিকভাবে পাঠকের হাতে পৌঁছানোর এক বছর পূর্ণ করেছে প্রতিদিনের বাংলাদেশ। সঙ্গত কারণেই গত ৮ জানুয়ারি আমরা ঘোষণা দিয়েছিলাম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আয়োজন হবে পরে। সেই ক্ষণটি এখন সামনে। পাঠক আজ হাতে পাবেন প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর রঙে রাঙানো এক পত্রিকা। স্বাধীনতার মাসে আমাদের মনও লাল-সবুজে আর্দ্র।

৫৩ বছর আগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে যে বাংলাদেশ আমরা অর্জন করেছিলাম, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আয়োজনে সেই বাংলাদেশেরই আগামীর পথরেখা অনুসন্ধান করার চেষ্টা করেছি। আর এতে যুক্ত হয়েছেন স্ব-স্ব ক্ষেত্রে প্রতিনিধিত্বশীল লেখক-বিশিষ্টজন। তারা সব সময়ই আমাদের সঙ্গে ছিলেন, আছেন- সে জন্য আবারও কৃতজ্ঞতা। অভিনন্দন প্রিয় পাঠকদের প্রতি- যারা ভালোবেসে পত্রিকাটি হাতে তুলে নিয়েছেন, অনলাইনে পড়ছেন। পত্রিকার এজেন্ট, হকার ভাই-বোন, বিজ্ঞাপনদাতা আর শুভানুধ্যায়ীদেরকেও জানাই আমাদের অভিবাদন। সবার ভালোবাসাতেই মাত্র এক বছরে প্রতিদিনের বাংলাদেশ এখন দেশের অন্যতম প্রধান জাতীয় দৈনিক। 


‘বলতে এসেছি বলব, লিখতে এসেছি লিখব’- ৮ জানুয়ারি ২০২৩-এর আনুষ্ঠানিক যাত্রালগ্নে এ উচ্চারণ সুস্পষ্টভাবেই করেছিল প্রতিদিনের বাংলাদেশ। ‘নতুন সময়, নতুন প্রজন্ম, নতুন দৈনিক’- এই প্রত্যয়ও ছিল দৈনিকটির জন্মপ্রক্রিয়ায়। 

প্রতিদিনের বাংলাদেশকে আমরা শুরুতেই বলেছি একটি মাল্টিমিডিয়া দৈনিক। ছাপা সংস্করণের আগেই আমরা অনলাইন ও ডিজিটাল মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ শুরু করেছি। পর্যায়ক্রমে তা আরও বিকশিত হয়ে আজকের অবস্থানে পৌঁছেছি। আমাদের অঙ্গীকার ছিল- আমরা বলব, আমরা লিখব। আমরা একই সঙ্গে পড়াব, দেখাব এবং শোনাবও।

সবাই শুধু লিখে যায়, আমরা আক্ষরিক অর্থে বলার কাজটাও নিষ্ঠার সঙ্গে করে যাচ্ছি শুরু থেকেই। ফলে নতুন সময়ে নতুন প্রজন্মের জন্য মাল্টিমিডিয়া দৈনিক করার যে অঙ্গীকার ছিল সেটাও অনেকখানি বাস্তবায়ন করতে পেরেছি। যদিও সবেমাত্র শুরু, এখনও যাওয়া বাকি অনেক দূর। আর স্বপ্ন তো আমাদের আকাশ ছোঁয়ার। স্বপ্নজয়ের লক্ষ্য নিয়েই আমরা ছুটে চলেছি, চলব আগামীর পথে। 

প্রতিদিনের বাংলাদেশ-এর নামফলকের পাশেই লাল-সবুজ লোগো, যেখানে লেখা- ‘বুক তার বাংলাদেশের হৃদয়’। বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি শামসুর রাহমানের কবিতার এই লাইনটি আমরা ধারণ করেছি স্লোগান হিসেবে। আমরা বিশ্বাস করি, চেতনা যত শানিত হবে, লক্ষ্যে পৌঁছার পথ ততই সুগম হবে। প্রতিদিনের বাংলাদেশ এই চেতনাতেই দেশকে বুকে ধারণ করছে। 

আমাদের নাম প্রতিদিনের বাংলাদেশ, আমাদের বুকের গভীরে প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ। ফলে আমরা সব সময়ই মহান মুক্তিযুদ্ধের কথা, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংগ্রামের অক্ষয় অধ্যায় আর শহীদদের আত্মদানের কথা বলে যাচ্ছি, যাব। অসাম্প্রদায়িক ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ- যে মন্ত্র ছিল মহান মুক্তিযুদ্ধের গভীরে প্রোথিত, আমরা সেকথাও বলে যাব সব সময়। আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশের কথা বলছি, বলব। একই সঙ্গে গণতন্ত্রের বিকাশ এবং এর প্রাতিষ্ঠানিক রূপদানে আমাদের অঙ্গীকার-অবস্থানও স্পষ্ট। আমরা পিছপা হব না। লক্ষ্য বাস্তবায়নে নিয়োগ করব সর্বশক্তি। 

মানুষের অধিকার এবং পরিবেশ-প্রতিবেশের সুরক্ষায়ও সুস্পষ্ট অবস্থান নিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। শুরুতেই প্রতিদিনের বাংলাদেশ-এর সপ্তাহজুড়ে সব ফিচার আয়োজনের নামকরণ করা হয় নদ-নদীর নামানুসারে। আমরা বছরজুড়ে নদী রক্ষার কথা বলেছি, নদীর জয়গান গেয়েছি। আমরা প্রাণান্ত চেষ্টা করেছি পেশাগত দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে সকল অন্যায়-অনাচার আর দুরাচার-কদাচারের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নিতে। 

‘রুদ্র, তোমার দারুণ দীপ্তি/ এসেছে দুয়ার ভেদিয়া;/ বক্ষে বেজেছে বিদ্যুৎবাণ/ স্বপ্নের জাল ছেদিয়া’- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘সুপ্রভাত’ কবিতার মতোই উচ্চারিত অঙ্গীকার এবং ভাবনাগুলো সঙ্গে নিয়ে আমাদের সংবাদকর্মীরা ছুটে চলেছেন রাতদিন। 

৫৩ বছরের বাংলাদেশ আজ বিশ্বদরবারে একদিকে নতুন উচ্চতায় আসীন, অন্যদিকে অনেক দেশের কাছে রোল মডেলও। গোটা জীবনে জেলজুলুম তুচ্ছ করে বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ গড়তে চেয়েছিলেন, এর বাস্তবায়নে আমরা স্ব-স্ব ক্ষেত্রে কে কতটুকু দায়িত্ব পালন করতে পেরেছিÑ এই আত্মজিজ্ঞাসা আজ বড় বেশি প্রয়োজন। আমাদের দুর্ভাগ্য, স্বাধীনতা অর্জনের মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, মহান স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে কতিপয় স্বজাত্যদ্রোহী হত্যা করে শুধু দেশের মুক্তির মূলেই কুঠারাঘাত করেনি, তারা দেশটাকে আবার নিয়ে যেতে চেয়েছিল পাকিস্তানি ভাবধারায়। মুক্তিযুদ্ধের পূর্বাপর অধ্যায়ে, বঙ্গবন্ধুর জীবদ্দশার বাঁকে বাঁকে সংগ্রামী পর্বজুড়ে তাঁর ত্যাগ-প্রজ্ঞা-দূরদর্শিতা ও দৃঢ় দৃপ্ত সাহসের যে ইতিহাস, তা আমাদের জাতীয় ইতিহাসের উল্লেখযোগ্য অংশের সমান্তরাল। আমরা আমাদের পথচলায় সেই ইতিহাসকে কখনও ভুলিনি, ভুলব না। 

বৈশ্বিক সংকটের অভিঘাতের ছায়া চারদিকে যখন ক্রমেই গাঢ় হয়ে উঠছিল এবং যার বাইরে আমরাও ছিলাম না- সেই সংকটকালেই আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করেছিল প্রতিদিনের বাংলাদেশ। কঠিন সময়ে বিনিয়োগের জোগান দিয়ে সেই যাত্রার সারথি হয় দেশের অন্যতম শিল্পগোষ্ঠী রংধনু গ্রুপ। শুরু থেকেই আমাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন একঝাঁক উদ্যমী মেধাবী সাংবাদিক, যাদের মধ্যে অনেকে প্রাজ্ঞ-অভিজ্ঞ এবং অনেকে আবার একেবারেই ঝকঝকে তরুণ। আমরা বরাবরই তারুণ্যের জয়গান করি। আমরা জানি, তারুণ্যই আমাদের বড় সহায়ক শক্তি। গত এক বছরে আমাদের যা কিছু অর্জন তার মূলে রয়েছে তারুণ্যের সেই অদম্য অপরিমেয় শক্তি। 

গত এক বছরে আমরা মানুষের কথা বলতে চেয়েছি, মা-মাটির কথা বলতে চেয়েছি, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলতে চেয়েছি, অনিয়ম-দুর্নীতি প্রতিরোধ করে তারুণ্যের অমিত শক্তিকে পুঁজি করে আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণের কথা বলতে চেয়েছি। এই অঙ্গীকার অটুট থাকবে- সেটাও বছর শেষে পুনর্বার আমরা দৃঢ়তার সঙ্গে উচ্চারণ করি। আমরা চাই, প্রতিদিনের বাংলাদেশকে দায়িত্বশীল এবং সাহসী সাংবাদিকতার এক অনন্য উদাহরণ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে।

গত এক বছরে আমাদের দুটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘গ্লোবাল ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম নেটওয়ার্ক (জিআইজেএন)’-এর স্বীকৃতি অর্জন করায় আমাদের প্রত্যাশার ক্ষেত্র আরও বিস্তৃত হয়েছে। এই স্বীকৃতিকে আমরা প্রেরণার উজ্জীবনী শক্তি হিসেবে ধারণ করে প্রতিদিনের বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই সবার ভালোবাসায়।

মহান স্বাধীনতার মাস এই মার্চে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের একটি লাইন আমরা বিশেষভাবে স্মরণ করতে চাই। বিশ্বনন্দিত এই ভাষণে বঙ্গবন্ধুর মহাকাব্যিক রাজনৈতিক প্রজ্ঞা-দূরদর্শিতার যে প্রতিফলন ঘটে- তা পুরোটাই এককথায় অনন্যসাধারণ। ৭ মার্চ রেসকোর্সের জনসমুদ্রে তর্জনী উঁচিয়ে বঙ্গবন্ধু তাঁর বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেছিলেন, ‘কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবা না।’

আমরা জাতির মহানায়কের এই কথাটি পাঁজরবন্দি করে দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার পথে যে যাত্রা শুরু করেছিলাম, তা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করি ফের এই প্রত্যয়ে- আমরা সত্য কথা বলব, সাদাকে সাদা বলব, কালোকে কালো বলব এবং বিশেষ করে দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশের কথা বলে বঙ্গবন্ধুর কাঙ্ক্ষিত সোনার বাংলা গড়ার সংগ্রামে সহযোদ্ধা হয়ে থাকব। এসব ক্ষেত্রে আমাদের কেউ ‘দাবায়ে’ রাখতে পারবে না। 

নতুন এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থেই আগামীর বাংলাদেশকে আমরা বিশ্বসভায় অনন্য উচ্চতায় দেখতে চাই। তর্কাতীতভাবেই বলা যায়, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ধারাবাহিক চার মেয়াদের সরকারের শাসনামলে উন্নয়ন-অগ্রগতির মহাসড়কে উঠেছে বাংলাদেশ। বিশ্বনেতাদের মধ্যে নিজেকেও অনন্য উচ্চতায় আসীন করেছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী। এখন উন্নত দেশের মর্যাদা অর্জন সামনের সুদূরপ্রসারী লক্ষ্য।

তবে শুধুমাত্র একা সরকারের পক্ষে সেই লক্ষ্য অর্জন সম্ভব নয়। সরকার, রাজনৈতিক দল এবং সামাজিক শক্তি- সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে কাজ করেই এগিয়ে নিতে হবে দেশকে। সেক্ষেত্রে গণমাধ্যম হিসেবে আমরা আমাদের কাজটা করে যাব প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভক্ষণে পাঠক শুভানুধ্যায়ীদের কাছে আবারও এই অঙ্গীকার।

  • সম্পাদক, প্রতিদিনের বাংলাদেশ
শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা