× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ঈমানের অর্ধেক বিশ্বস্ততা

শাহীন হাসনাত

প্রকাশ : ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ১৩:০৯ পিএম

ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

পারস্পরিক সম্পর্কসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে ইসলাম মানুষকে বিশ্বস্ত বা আমিন করতে চায়। মানুষ যখন হবে পরস্পরের প্রতি বিশ্বস্ত, তখনই তাদের পারস্পরিক সালাম হবে অর্থবহ। একে অন্যকে সালাম দেওয়ার মানে তারা পরস্পরের জন্য সব ক্ষেত্রেই নিরাপদ ও বিশ্বস্ত। অথচ আমরা একে অন্যকে সালাম দিয়েও অনেক সময় এ ভয়ে ভীত থাকি যে, এ ব্যক্তি আমার ক্ষতি করতে পারে এবং এখনই হয়তো আমার ব্যাপারে কোনো খারাপ কথা বলবে। অর্থাৎ আমরা একে অন্যকে বিশ্বাস করতে পারছি না, বিশ্বস্ত মনে করতে পারছি না!

নবী কারিম (সা.)-এর অনন্য গুণ ছিল সত্যবাদিতা ও বিশ্বস্ততা। এ কারণে মক্কার কাফের-মুশরিকরাও তাঁকে ‘আল আমিন’ বা ‘বিশ্বাসী’ বলে ডাকত। এ বিশ্বাসের কারণেই তিনি যখন মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করতে রওনা হন, তখন কাছে থাকা মক্কার লোকদের আমানতগুলো ফেরত দিতে হজরত আলী (রা.)-কে দায়িত্ব দেন।

ইসলামে আমানত রক্ষার গুরুত্ব অনেক। আমানতদারি বা বিশ্বস্ততা মানুষের অনুপম বৈশিষ্ট্য। আমানতদার সব সমাজেই প্রশংসিত। ইসলামি চিন্তাবিদদের মতে, ঈমানের অর্ধেক হলো আমানত যথাযথভাবে ফিরিয়ে দেওয়া এবং বাকি অর্ধেক পাপ বর্জন করা।

আমাদের কাছে মহান আল্লাহর আমানত হলো শরিয়ত ও ইসলাম। ধনসম্পদ ও যৌবন এবং জ্ঞানবুদ্ধিও আমানত। এক কথায়, আল্লাহপ্রদত্ত সব নেয়ামতই বান্দার কাছে আমানত। এসবের হেফাজত করতে হবে, না হলে পরকালে জবাবদিহি করতে হবে। ইসলাম বলে, আল্লাহতায়ালা যে সম্পদ দিয়েছেন তা দীনের পথে মানুষের কল্যাণে ব্যয় করতে হবে। অন্যথায় তা খেয়ানতরূপে গণ্য হবে। সুতরাং যারা পরিপূর্ণভাবে শরিয়ত মানে না, ইবাদত-বন্দেগি পালন করে না তারা আল্লাহর দেওয়া আমানত রক্ষায় ব্যর্থ। তারা ঈমানের একটি বড় পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ। নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত যথাযথভাবে আদায় করা, নবী-রাসুলের হুকুম মানাও আমানত রক্ষা। যে আমানত স্বয়ং আল্লাহ তাঁর বান্দাকে দান করেছেন।

সুরা আনফালের ২৭ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ, খেয়ানত কোরো না আল্লাহর সঙ্গে ও রাসুলের সঙ্গে এবং খেয়ানত কোরো না নিজেদের পারস্পরিক আমানতে জেনে-শুনে।’ বর্ণিত আয়াতে আল্লাহর আমানত বলতে অধিকাংশের মতে যাবতীয় ফরজ কাজ বোঝানো হয়েছে। আর রাসুলের আমানত বলতে তাঁর সুন্নত ও নির্দেশ বোঝানো হয়েছে।

আর নিজেদের আমানত বলতে সেসব দায়িত্ব বোঝানো হয়েছে, যা কারও প্রতি আস্থা স্থাপন করে তার ওপর ন্যস্ত করা হয়। তা ওয়াদা পূরণের দায়িত্ব হতে পারে, সামগ্রিক সামাজিক চুক্তি হতে পারে, কোনো সংস্থার অভ্যন্তরীণ গোপন তথ্য হতে পারে, ব্যক্তিগত বা সমষ্টিগত ধনসম্পদ হতে পারে। কারও প্রতি বিশ্বাস করে জনসমাজ যদি তাকে কোনো দায়িত্বপূর্ণ পদে নিযুক্ত করে তা-ও এর মধ্যে শামিল মনে করতে হবে।

মাত্র রমজান শেষ হয়েছে। অনেকেই এখন শাওয়ালের নফল রোজা পালন করছেন, অনেকে আবার হজপালনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এখনও সমাজে ধর্মীয় আবহ বিরাজমান। ঠিক এই সময়ে ভেবে দেখা দরকার, কীভাবে আল্লাহ ও রাসুলের আমানত রক্ষা করা যায়। আমরা কোনোভাবে আল্লাহ ও রাসুলের দেওয়া আমানতের খেয়ানত করছি কি না। মুসলমানদের ব্যাপারে বিশ্বাসঘাতকতা করছি কি না তা-ও গভীরভাবে ভেবে দেখা দরকার। বন্ধুর সঙ্গে, সহকর্মীর সঙ্গে, কর্মক্ষেত্রের দায়িত্বশীলের সঙ্গে, পরিবারের সঙ্গে, সন্তান ও স্ত্রীর সঙ্গে আচার-আচরণে আমানত রক্ষা করছি কি না তা-ও ভেবে দেখা দরকার। দেশ, সমাজ ও জনগণের আমানত রক্ষা বিষয়েও চিন্তা করা দরকার। এ চিন্তা হতে পারে সামগ্রিক কল্যাণের কেন্দ্রবিন্দু।

  • শিক্ষক ও ইসলামবিষয়ক গবেষক

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা