শাহীন হাসনাত
প্রকাশ : ২৯ মার্চ ২০২৪ ১৪:২৬ পিএম
আজ ১৮ রমজান।
কিন্তু রমজানের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য-উদ্দেশ্য কতটুকু অর্জিত হয়েছে কারও জানা নেই। আমাদের
জীবনে, চলাফেরায়, কথাবার্তায় কোনো পরিবর্তন বা প্রতিফলন চোখে পড়ে না। ইসলাম চায় রমজানের
শিক্ষায় প্রতিটি মুসলিম নর-নারী আল্লাহর প্রিয় বান্দায় পরিণত হোক। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে
তথা ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রতিটি স্তরে তাকওয়ার বাস্তব প্রয়োগ ও প্রতিফলন
ঘটুক। ধারাবাহিকতা বজায় রাখা আল্লাহর কাছে অতি প্রিয়। হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত,
হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে কাজ কেউ সর্বদা (নিয়মিত) করে, সেটিই আল্লাহর নিকট
প্রিয়তর।’ Ñসহিহ বোখারি : ৪৩
এ হাদিসের ব্যাখ্যায়
ইসলামি চিন্তাবিদরা বলেছেন, ‘মুমিনের সমস্ত কাজ একটা নিয়মশৃঙ্খলার অধীন হওয়া উচিত।
আল্লাহর দীনের সমস্ত কাজই বেশ সাজানো গোছানো। আল্লাহর নিজের সমস্ত কাজের মধ্যেও পরিপূর্ণ
নিয়মশৃঙ্খলা বিরাজমান। দীনের কাজ কখনও খুব বেশি করা, কখনও খুব কম করা অথবা না করা আল্লাহ
পছন্দ করেন না। অল্প হলেও সব কাজ সাজিয়ে গুছিয়ে রুটিন অনুযায়ী সর্বদা নিয়মিতভাবে করা
আল্লাহ পছন্দ করেন। এতে তিনি বরকত দেন। আর এভাবে বাস্তব জীবন সুশৃঙ্খল ও সুনিয়ন্ত্রিত
হয়।’ আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘অবধারিত মৃত্যু আসা পর্যন্ত নিজের রবের বন্দেগি করে যেতে
থাকো।’ Ñসুরা হিজর : ৯৯
রমজানের শেষ ১০
দিন অত্যন্ত ফজিলতময়। এ সময়ের বেজোড় রাতসমূহে রয়েছে মহাফজিলতপূর্ণ শবেকদর। এ রাত হাজার
মাসের চেয়েও উত্তম। রমজানের শেষ দশকে মসজিদে ইতিকাফ করা আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আমল। নবী
করিম (সা.) রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করতেন। শবেকদর লাভের উত্তম উপায় ইতিকাফ। কারণ শবেকদর
কবে তা নির্দিষ্ট নেই। শুধু এতটুকু জানানো হয়েছে যে, শবেকদর রমজানের শেষ দশকের বেজোড়
রাতগুলোর যেকোনো একটি। তাই শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোর প্রতিদিনই ইবাদত করা কর্তব্য।
নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোয় শবেকদর তালাশ করো।’ Ñসহিহ
বোখারি : ২০১৭
রমজানের শেষ সময়কে গুরুত্ব দেওয়ার আরও কারণ হলো, এ সময় ঈদের আমেজ চলে আসে। মনে রাখতে, ঈদের জামা-জুতা, বাড়ি যাওয়ার পরিকল্পনা আর আনন্দ তখনই পূর্ণতা পাবে, যখন গুনাহমুক্ত হয়ে ঈদের নামাজ পড়তে যাওয়ার সৌভাগ্য হবে। আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুন।