ইসলামি স্থাপত্য
মাহমুদুর রহমান তুরান
প্রকাশ : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৪:০৪ পিএম
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলাধীন আজিমনগর ইউনিয়নের পাতরাইল গ্রামে অবিস্থিত মজলিস আউলিয়া খান জামে মসজিদ। প্রবা ফটো
ফরিদপুরের ভাঙ্গা
উপজেলাধীন আজিমনগর ইউনিয়নের পাতরাইল গ্রামে অবিস্থিত মজলিস আউলিয়া খান জামে মসজিদ।
১৩৯৩ থেকে ১৪১০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে মজলিস আব্দুল্লাহ খান আউলিয়া মসজিদটি নির্মাণ
করেন। প্রাচীন স্থাপত্য শিল্পের এক মনোমুগ্ধকর নিদর্শন মসজিদটি স্থানীয়ভাবে ‘মজলিস
আউলিয়া মসজিদ’ বা পাতরাইল গায়েবি মসজিদ নামে পরিচিত। স্থানীয় জনসাধারণের খাবার
পানির অভাব দূর করতে ওই সময়েই মসজিদের পাশে ৩২.১৫ একর জমির ওপরে খনন করা হয় একটি দিঘি।
নথিপত্রে এলাকার নাম পাতরাইল হলেও দিঘির জন্যই এলাকাটি ‘দিঘিরপাড়’ নামে পরিচিত।
১০টি গুম্বুজবিশিষ্ট মসজিদের
অভ্যন্তরে পূর্বদিকে রয়েছে পাঁচটি দরজা। যেগুলো দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করা যায়।
স্বতন্ত্রভাবে দণ্ডায়মান চারটি পাথরের স্তম্ভ গঠিত একটি স্তম্ভসারি মসজিদের ভেতরে
দুইটি ‘আইল’-এ বিভক্ত করেছে। উত্তর ও পশ্চিম দেয়ালে দুইটি করে দরজা রয়েছে। মসজিদের
দেয়াল প্রায় দুই মিটার পুরু। পূর্ব দেয়ালের পাঁচটি দরজা বরাবর পশ্চিম দেয়াল
অভ্যন্তরে পাঁচটি ‘মিহরাব’ রয়েছে। কেন্দ্রীয় প্রবেশপথের দুই খিলানের মধ্যবর্তী অংশ
চৌচালা ভল্ট সদৃশ, অন্যদিকে পার্শ্ববর্তী দরজার সংশ্লিষ্ট অংশ দোচালা ভল্ট সদৃশ।
মসজিদটির নকশায় পোড়ামাটির অলংকার এবং দেয়ালের গায়ে আঙুর লতার মতো নকশা অঙ্কিত।
এই মসজিদের সঙ্গে ভারতের লক্ষ্ণৌর
‘ছোটসোনা মসজিদ’ ও রাজশাহীর ‘বাঘা মসজিদ’ এর যথেষ্ট মিল রয়েছে। এই শৈলীগত
সাদৃশ্যতার জন্য মসজিদটি ‘হোসেন শাহী ইমারত’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে প্রত্নতত্ত্ব
বিভাগ। স্থানীয় বাসিন্দা মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, মসজিদটি ছিল ছাদবিহীন। পরবর্তী সময়ে
এরশাদ সরকারের সময়ে মসজিদে সরকারিভাবে ছাদ ও গম্বুজ নির্মাণ করা হয়। স্থানীয়
সাংস্কৃতিককর্মী অধ্যাপক এবিএম মিজানুর রহমান বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম স্থাপত্য
নির্মাণশৈলী মজলিস আউলিয়া মসজিদ। এ মসজিদটি বর্তমানে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের
অধীনে থাকলেও গত চার দশকে সংস্কারের ছোঁয়া লাগেনি। সরকার উদ্যোগী হলে এই মসজিদটি
ঘিরে গড়ে উঠতে পারে আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্র।