× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

মর্যাদাময় বিশ্ব ইজতেমা

শাহীন হাসনাত

প্রকাশ : ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ০৯:২৪ এএম

ইসলামের মৌলিক বিশ্বাস এবং ইবাদতসমূহের অনুশীলন শিক্ষাদানই হচ্ছে তাবলিগের মূল কর্মসূচি।

ইসলামের মৌলিক বিশ্বাস এবং ইবাদতসমূহের অনুশীলন শিক্ষাদানই হচ্ছে তাবলিগের মূল কর্মসূচি।

বিশ্বের প্রায় প্রতিটি জনপদেই রয়েছে তাবলিগ জামাতের দাওয়াতি কাজের কল্যাণময় তৎপরতা। ইসলামের মৌলিক বিশ্বাস এবং ইবাদতসমূহের অনুশীলন শিক্ষাদানই হচ্ছে তাবলিগের মূল কর্মসূচি। মহান আল্লাহর হুকুম এবং নবী করিম (সা.)-এর আদর্শের প্রতি মানুষকে আগ্রহী এবং মানুষের অন্তরে ইসলামের চিন্তা-চেতনা জাগ্রত করাই তাবলিগের অন্যতম লক্ষ্য। ছয়টি মৌলিক বিষয় সামনে রেখে তাবলিগ জামাত তার কার্যক্রম পরিচালনা করে। সেগুলো হলো ১. কলমা ২. নামাজ ৩. ইলম ও জিকির ৪. একরামুল মুসলিমিন (বড়দের সম্মান, ছোটদের স্নেহ এবং আলেম-ওলামাদের শ্রদ্ধা করা) ৫. সহিহ নিয়ত ৬. দাওয়াত ও তাবলিগ।

ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলমানদের ধর্মীয় জীবনের চরম এক দুঃসময়ে ভারতের মেওয়াতে মাওলানা ইলিয়াস কান্ধলভি (রহ.) তাবলিগ জামাতের গোড়াপত্তন করেন। তাবলিগের প্রতিষ্ঠাতা ভারতের দেওবন্দ মাদ্রাসা থেকে পড়াশোনা শেষ করে মাওলানা রশিদ আহমদ গাঙ্গুহি ও মাওলানা খলিল আহমদ সাহারানপুরি (রহ.)-এর কাছে আধ্যাত্মিক দীক্ষা ও খেলাফত লাভ করেন।

মাওলানা ইলিয়াস (রহ.) তাবলিগের যেসব কর্মনীতি প্রণয়ন করেছিলেন তা সর্বপ্রথম দারুল উলুম দেওবন্দের আলেমদের কাছে পেশ করেন। দেওবন্দের আলেমরা অনেক চিন্তাভাবনা করে এসব নীতিমালায় কিছু সংযোজন-বিয়োজন করে তাকে এ কাজ চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। এভাবে শুরু থেকেই তাবলিগ জামাতের সার্বিক তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব গ্রহণ করে দেওবন্দ। তাবলিগ জামাতে যত কিতাবাদির তালিম দেওয়া হয়, তার সবই রচনা করেছেন দেওবন্দের আলেমরা। এভাবে বিশ্বব্যাপী তাবলিগের গুরুত্ব ও বৈধতা মুসলমানদের কাছে জোরালোভাবে তুলে ধরেন দেওবন্দি সিলসিলার আলেমরা। মাওলানা ইলিয়াস (রহ.)-এর জীবদ্দশায় তাবলিগের কার্যক্রম দক্ষিণ এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৪৪ সালে মাওলানা ইলিয়াস (রহ.)-এর ইন্তেকালের পর তাবলিগের আমিরের দায়িত্ব দেওয়া হয় তারই সুযোগ্য সন্তান মাওলানা ইউসুফ (রহ.)-কে। মাওলানা ইউসুফের ইন্তেকালের পর আমিরের দায়িত্ব প্রদান করা হয় মাওলানা এনামুল হাসান (রহ.)-কে। মাওলানা এনামুল হাসান (রহ.) তার জীবদ্দশায় সারা বিশ্বে তাবলিগের কাজের ব্যাপকতা অনুভব করে ১০ সদস্যবিশিষ্ট একটি ‘আলমি শুরা’ (আন্তর্জাতিক পরিচালনা কমিটি) গঠন করেন। যাতে এ শুরা সদস্যরা পরামর্শের ভিত্তিতে সারা বিশ্বের তাবলিগের কাজ পরিচালনা করতে পারেন। মাওলানা এনামুল হাসান (রহ.) ১৯৯৫ সালে ইন্তেকাল করেন।

পঞ্চাশের দশকে মাওলানা শামছুল হক ফরিদপুরী (রহ.)-এর প্রচেষ্টায় মাওলানা আবদুল আজিজ (রহ.) ও তার কয়েকজন সঙ্গীসাথির মাধ্যমে বাংলাদেশে তাবলিগ জামাতের কাজের সূচনা হয়। কাজ শুরুর কিছুদিনের মধ্যে বাংলাদেশের মুসলমানদের একটি বিরাট অংশ তাবলিগের কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে যায়।

বিশ্ব ইজতেমা বিশ্ব তাবলিগ জামাতের সর্ববৃহৎ সমাবেশ। তাবলিগের বার্ষিক কাজের হিসাব, পর্যালোচনা ও দাওয়াতি কাজের আরও বিস্তৃতি ঘটানোর লক্ষ্যেই বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন করা হয়। ঢাকার উপকণ্ঠে টঙ্গীর সুবিশাল ময়দানে প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয় বিশ্ব ইজতেমা। ইজতেমায় বাংলাদেশসহ মুসলিম বিশ্বের লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমান অংশগ্রহণ করে।

আগের তুলনায় ইজতেমার মাঠ অনেক উন্নত হয়েছে। মাঠের চারপাশে বেশ কিছু বহুতল বাথরুম তৈরি করা হয়েছে। বাঁশের খুঁটির ওপর চট লাগিয়ে মাঠে ছাউনি তৈরি করা হয়। এরপর বিভিন্ন জেলা থেকে আগত লোকের জন্য জেলাভিত্তিক খিত্তা ও খুঁটি নম্বর দিয়ে ভাগ করা হয়, যাতে মুসল্লিরা নিজেদের অবস্থার নির্ণয় করতে পারেন। শুধু বিদেশি মেহমানদের জন্য তৈরি করা হয় টিনের চাল ও বেড়া দিয়ে আলাদা ঘর। সব কাজই করেন তাবলিগের স্বেচ্ছাসেবী কর্মীরা।

প্রথা অনুযায়ী ইজতেমা যদিও শুরু হয় শুক্রবারে এবং সমাপ্ত হয় রবিবারে। কিন্তু দুই দিন আগেই ইজতেমার মাঠ কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায়। এ কারণে ইজতেমার সময় দেশের সর্ববৃহৎ জুমার জামাত অনুষ্ঠিত হয় টঙ্গীর ময়দানে। বিশ্ব ইজতেমার মতো একটি বৃহৎ ধর্মীয় সম্মেলনের আয়োজক হিসেবে বাংলাদেশ মুসলিম বিশ্বের কাছে বিশেষ মর্যাদার অধিকারী।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা