× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

শিকার কাহিনী

আহরাফ রবিন

প্রকাশ : ০৩ মে ২০২৩ ১৩:৪৮ পিএম

শিকার কাহিনী

অমাবস্যার রাত। বুনো হাওয়ার দাপটে সরসর ধ্বনিতে ক্রমাগত কাঁপছে অর্জুনগাছের পাতা। দূরে জঙ্গলের শেষপ্রান্তে খলখল শব্দে ছুটে চলছে একটি নদী। এমন রাতে পাঁচ বছর পর জয়িতাকে এভাবে খুঁজে পাব, তা কল্পানতেও ভাবিনি। তবে গোলাকার এই পৃথিবীতে চলার পথে হুট করে দেখা হওয়াটা খুব আশ্চর্যের কিছু নয়।

 আজ বিকাল বেলা জয়িতার সঙ্গে আমার দেখা করার কথা। সে চাইছিল আমরা অন্তত আর একটিবারের জন্য দেখা করি। ‘অবসর’ কফিশপের নির্জন কোণে একটি চেয়ারে বসে আমি প্রায় দেড় ঘণ্টা অপেক্ষা করেছি। অথচ জয়িতা আসেনি। দীর্ঘ অপেক্ষার পর কফিশপ থেকে বাইরে বেরিয়ে হাঁটতে থাকি। চারদিকে যেন বিদঘুটে অন্ধকার! মশাদের একটানা গুন গুন সংগীতে মুখরিত চারপাশ। বাতাসে পাতা পচার গন্ধ। হঠাৎ করে খেয়াল করলাম একটি খোলা মাঠে এসে পৌঁছেছি আমি। কোথাও ঘাস নেই বললেই চলে। তাই শুকনো পাতার ওপর শুয়ে আছি। 

বিকাল বেলা কফিশপে জয়িতা আসেনি। সে কি এখানে আসবে? আনমনে কী সব ভাবছি আমি। সাদা রঙের একটি গাড়ি এসে থামল আমার সামনে। একজন ভদ্রলোক আমাকে জিজ্ঞেস করল‚ আপনার নাম কি তূর্য? আমি হ্যাঁ-সূচক মাথা নেড়ে বললাম‚ কেন? 

হুট করেই যেন দৃশ্যপট বদলে গেল। ঝড়ের বেগে লোকটি আমাকে জড়িয়ে ধরল। আমার কানের কাছে মুখ এনে ফিসফিস করে বলল‚ জয়িতা আমাকে পাঠিয়েছে। আপনাকে নদীর তীরে যেতে বলেছে। 

আমি খানিকটা হতভম্ব হয়ে গেলাম। সেই সঙ্গে কৌতূহলী। জয়িতার সম্পর্কে আমার জানা আছে। মাঝেমধ্যেই সে এ ধরনের উদ্ভট কাজ করে বসে। কিছু না ভেবেই আমি গাড়ির ভেতর ঢুকে পড়লাম। লোকটি ড্রাইভারকে আঙুলের ইশারা করতেই গাড়ি চলতে শুরু করল। পিচঢালা রাস্তা রেখে হঠাৎ মোড় নিয়ে গাড়ি সরু কাঁচা মাটির পথ ধরে সামনে চলতে লাগল। এবড়োখেবড়ো পথ চলার সময় গাড়ি খানিকটা দুলছিল। আমি একবার লোকটিকে জিজ্ঞেস করলাম‚ জয়িতা আপনার কী হয়? লোকটি জবাব না দিয়ে খানিকটা হেসেছিল। 

গাড়ি এসে নদীর পাড়ে নির্জন পরিবেশে থামল। জয়িতাকে দেখতে না পেয়ে আমি লোকটিকে জিজ্ঞেস করলাম‚ জয়িতা কোথায়? ঝড়ের বেগে ধাক্কা মেরে আমাকে মাটির ওপর ফেলে দিয়ে হুংকার দিয়ে লোকটি বলল‚ তোর এত সাহস! জয়িতাকে খুঁজতে এতদূর ছুটে এসেছিস। তার বিকট চিৎকারের শব্দে কয়েকটি পাখি তটস্থ হয়ে দ্রুত ডানা ঝাপটে উড়ে গিয়েছিল দূরে কোথাও। তার পর হঠাৎ আমার মাথায় সজোরে একটা আঘাত অনুভব করি। শরীরের ভেতরকার প্রতিটা শিরা-উপশিরা যেন কেঁপে উঠেছিল আমার। 

 এখন আমি মানুষ হলেও মৃত। আমার লাশ পড়ে আছে অন্ধকারে জঙ্গলে। আমার অপরাধ জয়িতাকে ভালোবেসেছিলাম। মৃত্যুর আগমুহূর্তে জানতে পেরেছিলাম লোকটি জয়িতার স্বামী। যে আমার হত্যাকারী। 

আমার রক্তাক্ত‚ নিথর দেহ ঝরাপাতার ওপর পড়ে আছে। তাতে সামান্য খেদ নেই আমার। কেবল হিংসা! আমার পরও জয়িতাকে কোনো পুরুষ এতটা উজাড় করে ভালোবাসতে পারে তা আমার ধারণাই ছিল না। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা