তাবাসসুম এনাম বর্ষা
প্রকাশ : ২৭ এপ্রিল ২০২৩ ১৩:২৯ পিএম
আপডেট : ২৭ এপ্রিল ২০২৩ ১৩:৩০ পিএম
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে কিশোরগঞ্জে অসহায় ও দরিদ্র ২০০ পরিবারের মধ্যে বিতরণ করা হয় ঈদ উপহারসামগ্রী
ঈদের খুশি সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে ১৮ এপ্রিল সুবিধাবঞ্চিত ২০০ পরিবারের মধ্যে বিতরণ করা হয় ঈদ উপহার। উপহার পেয়ে খুশি অসহায়-দরিদ্র পরিবারের সদস্যরা। আল-খায়ের ফাউন্ডেশন ও প্রতিদিনের বাংলাদেশ-এর পাঠক সংগঠন অদম্য বাংলাদেশ-এর যৌথ উদ্যোগে ধারাবাহিক মানবিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এই উপহার তুলে দেওয়া হয়।
‘আল্লায় রহম করছে বইল্লা আইজ এত এত জিনিস পাইছি। এইবার ঈদে আল্লাহর রহমতে পোলাপাইনের মুখে কিছু একটা তুইল্লা দিতে পারবাম। যারা এত বড় উপকার করল, আল্লাহ জানি তারারে সুখে রাখে, আমি দোয়া করি।’ আল-খায়ের ফাউন্ডেশন ও অদম্য বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ঈদ উপহার পেয়ে এভাবেই কৃতজ্ঞতা ও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন শহরতলির কাটাবাড়িয়া গ্রামের মৃত আবদূস ছমেদের বিধবা স্ত্রী মোছা. আম্বিয়া খাতুন।
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গত ১৮ এপ্রিল কিশোরগঞ্জ ক্লাব চত্বরের টেনিস গ্রাউন্ডে ২০০ অসহায় ও দরিদ্র মানুষের হাতে বিভিন্ন নিত্যপণ্য তথা ঈদ উপহার তুলে দেওয়া হয়। ২৫০০ টাকা সমমান মূল্যের প্যাকেটে ছিল শাড়ি, লুঙ্গি, পেলাও চাল ২ কেজি, চিনি ১ কেজি, সেমাই ২ প্যাকেট, গুড়াদুধ ১ কেজি, তেল ২ লিটার, লবন ১ কেজি, কিসমিস, সাবান, মরিচ ও হলুদ গুড়া ইত্যাদি।
আহ্বায়ক বাদল রহমানের সভাপতিত্বে ঈদ উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আল-খায়ের ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর তারেক মাহমুদ সজীব, জেলা স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. দীন মোহাম্মদ, ছড়াকার ও মুক্তিযুদ্ধের গবেষক জাহাঙ্গীর আলম জাহান।
অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা পরিষদের নারী ভাইস চেয়ারম্যান মাসুমা আক্তার, উপদেষ্টা ফৌজিয়া জলিল ন্যান্সি, মাহফুজা আরা পলক, সদস্যসচিব আসলামুল হক আসলাম, অদম্য মো. জহিরুল ইসলাম, এসডি রুবেল, ওমর ফারুক রাজীব, মোমিন ভূঞা, টুনটুন, লেনিন, মেনন প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রতিদিনের বাংলাদেশ পত্রিকার মধ্যাঞ্চলীয় ব্যুরোপ্রধান সাইফুল হক মোল্লা দুলু।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, এটা সুখের খবর যে আল-খায়ের ফাউন্ডেশন ও অদম্য বাংলাদেশ মানবিক দায়িত্ব নিয়ে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। আজ যে পরিমাণ সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে তাতে ঈদুল ফিতরে সুবিধাভোগী পরিবারগুলো ঈদের আনন্দ তৃপ্তির সঙ্গে উপভোগ করতে পারবে। এমন মহৎ কাজের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।
আল-খায়ের ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর তারেক মাহমুদ সজীব বলেন, ‘আল-খায়ের ফাউন্ডেশন একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। বিশ্বের ১৭৮টি দেশে নানা ধরনের সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি আমরা। তারই ধারাবাহিকতায় ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশের ৬৪টি জেলায় অপেক্ষাকৃত অসহায় ও দরিদ্র মানুষের মধ্যে ঈদসামগ্রী বিতরণের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। আগামী দিনগুলোতে এমন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
ডা. দীন মোহাম্মদ বলেন, আল-খায়ের ফাউন্ডেশন দীর্ঘদিন ধরে মানবিক দায়িত্ব নিয়ে দরিদ্র ও অসহায় মানুষকে সহায়তা করে আসছে। দারিদ্র্যের সূচকে আমরা অনেক উন্নতি সাধন করলেও করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আমাদের অগ্রগতি অনেকটা থমকে দাঁড়িয়েছিল। তবে আমরা সে সংকট অনেকটা কাটিয়ে উঠতে পেরেছি। আশা করছি বাংলাদেশে উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত থাকলে অল্প দিনের মধ্যে সাহায্যপ্রার্থী মানুষের সংখ্যা কমে আসবে।
জাহাঙ্গীর আলম জাহান বলেন, বিগত দিনের মতো আল-খায়ের ফাউন্ডেশন এবারের ঈদেও কিশোরগঞ্জের অসহায় দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। আজ যারা সহায়তা পাচ্ছেন তাদের মুখে পরিতৃপ্তির হাসি দেখে আমার মনটা ভরে গেছে। অসহায়ের মুখে হাসি ফোটানোর মতো আনন্দের আর কিছু হতে পারে না। ইতঃপূর্বে জেলার কয়েকশ অসহায় নারী-পুরুষের মধ্যে সেলাই মেশিন বিতরণ ও সুপেয় পানির জন্য চাপকল বিতরণ করা হয়েছে। অদম্য বাংলাদেশ এ ধরনের মানবিক কার্যক্রমে যুক্ত হয়ে মানুষের পাশে থাকবে।